“প্রাথমিকভাবে তেলের দাম বৃদ্ধি মূলত ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার ফল,” বলছেন এক জ্বালানি বাজার বিশেষজ্ঞ।
Published : 19 Apr 2024, 02:21 PM
ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরের পর আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে গেছে তেল ও সোনার দাম।
আন্তজার্তিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডে তেলের দাম ১.৮% বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৮৮ ডলার হয়েছে বলে খবর দিয়েছে বিবিসি।
একইসঙ্গে সোনার দাম অল্প সময়ের জন্য রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর আউন্স প্রতি ২ হাজার ৪০০ ডলারে ঠেকেছে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো; এরপরই মূলত তেলের বাজার চড়েছে। যদিও ইসরায়েলের হামলার খবর অস্বীকার করেছে ইরান।
গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যের ইসরাইলে ইরানের নজিরবিহীন ড্রোন হামলার পর থেকেই খুব কাছ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন বিনিয়োগকারীরা। ইরানের হামলার জবাবে ইসরায়েল কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, সেদিকেই লক্ষ্য রাখছিলেন তারা। কারণ মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে তেলের সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
ইরানের ইস্ফাহান প্রদেশে বিস্ফোরণের খবর মিললেও পরে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম জানায়, সেখানো কোনো ‘ক্ষয়ক্ষতি হয়নি’। যে কারণে শুরুর দিকে তেলের দাম ৩.৫% বেড়ে গেলেও পরে তা নেমে আসে।
তবে স্থায়ীভাবে দীর্ঘ সময়ের জন্য তেলের দাম বেড়ে গেলে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে। জ্বালানি ও শক্তির দামই গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বব্যাপী জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়ের পেছনে প্রধান চালিকা হিসেবে কাজ করছে। অপরদিকে বিশ্ব বাজারে অনিশ্চয়তার পরিস্থিতি তৈরি হলেই নিরাপদ বিনিয়োগ হিসাবে ব্যবহৃত স্বর্ণের দাম বেড়ে যায়।
বিবিসি জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ফলে ওমান ও ইরানের মধ্যে হরমুজ প্রণালী দিয়ে তেলের সরবরাহ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটবে কিনা, তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারণ তেল সরবরাহের গুরুত্বপূর্ণ রুট এটি।
বিশ্বের মোট তেল সরবরাহের প্রায় ২০% এই লাইন দিয়ে হয়। ওপেকভুক্ত সৌদি আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও ইরাকের বেশিরভাগ তেল হরমুজ প্রণালী দিয়ে সরবরাহ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, ওপেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে তেল উৎপাদনে ইরান তৃতীয়। আর দেশটি বিশ্বের মধ্যে তেল উৎপদানে রয়েছে সপ্তম অবস্থানে।
জ্বালানি বাজার বিশেষজ্ঞ বন্দনা হরি বলছেন, “প্রাথমিকভাবে তেলের দাম বৃদ্ধি মূলত ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার ফল।”
গত শনিবার রাতে ইরান থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। ইসরায়েলে ইরানের ওই নজিরবিহীন হামলার পর বিশ্ব রাজনীতিতে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইরানের হামলার জবাব দিতে ইসরায়েল যেকোনো সময় চিরশত্রু দেশটিতে হামলা চালাতে পারে বলে ধরণা করা হচ্ছিল। যদিও যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা তেল আবিবকে ইরানের বিষয়ে সংযত হতে অনুরোধ করেছে।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই শুক্রবার ইসরায়েল ইরানে হামলা চালিয়েছে বলে খবর এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ওই খবর প্রকাশ পেয়েছে। যদিও বিদেশি হামলার শিকার না হওয়ার দাবি করেছে ইরান।
আরো পড়ুন-