Published : 12 Jul 2024, 05:52 PM
অস্ট্রেলিয়ার এক নারী সেনা ও তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে দুইজনের বিরুদ্ধেই রাশিয়ার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিবিসি জানায়, তদন্তকারীরা বলছেন, রুশ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয় নাগরিক এই দম্পতি মস্কোর কাছে তথ্য পাচারের জন্য অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্সের (এডিএফ) নথি সংগ্রহ করেছিলেন।
২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবর্তিত কঠোর বিদেশি হস্তক্ষেপ আইনের অধীনে প্রথমবারের মতো গুপ্তচরবৃত্তির এই অভিযোগ আনা হল।
৪০ বছর বয়সী সেনা কর্মকর্তা কিরা করোলেভ এবং তার ৬২ বছর বয়সী স্বামী ইগর করোলেভকে শুক্রবার ব্রিসবেনের আদালতে হাজির করা হয়। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ প্রমাণিত হলে উভয়ের সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেছেন, তাকে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এ বিষয়ে বিস্তারিত সব জানিয়েছে। তবে মামলাটি আদালত বিচারাধীন থাকায়, এ নিয়ে এখন তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না।
অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশ (এএফপি) কমিশনার রিস কারশো বলেন, এই দম্পতি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন এবং বেশ কয়েক বছর আগে তারা দুজনেই আস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হয়েছেন।
ইগরের নিজস্ব কর্মসংস্থান আছে। আর কিরা সেনাবাহিনীতে তথ্য ব্যবস্থা প্রযুক্তিবিদ হিসাবে কাজ করছিলেন। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার জন্য তিনি নিরাপত্তায় ছাড়পত্র পেয়েছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ কমিশনার কারশো অভিযোগ করেন, অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স (এডিএফ) থেকে ছুটিতে থাকাকালীন কিরা গোপনে রাশিয়া ভ্রমণ করেছিলেন।
তখন কিরা তার কর্মক্ষেত্রে ব্যবহৃত অ্যাকাউন্টে স্বামী ইগরকে প্রবেশের অনুমতি দেন এবং সেনাবাহিনীর গোপন তথ্য পাঠাতে বলেন, যাতে তিনি (কিরা) সেগুলো রাশিয়া কর্তৃপক্ষের কাছে ফরোয়ার্ড করতে পারেন।
তবে ওইসব গোপন কোনও তথ্য রাশিয়াকে দেওয়া হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে এখনও তদন্ত চলছে বলে জানান কারশো। অভিযোগে আরো নতুন কিছু যোগ হতে পারে বলে জানান তিনি।
কমিশনার কারশো এবং অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান মাইক বার্গেস উভয়ই শুক্রবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় কিছু প্রশ্রের উত্তর দেননি। গোপন নথিগুলো কী ধরনের এবং সেগুলো পাচারের মতো অপরাধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কীভাবে জানতে পারল সে সম্পর্কে কিছু বলেননি তারা।
তবে বার্গেস বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার গোপনীয়তা এখন হুমকির মুখে। অনেক দেশই অস্ট্রেলিয়ার গোপন তথ্য চুরি করতে চাইছে। গুপ্তচরবৃত্তির চলমান এই হুমকি বাস্তব।
তিনি সতর্ক করে বলেন, আপনি যদি এই দেশে গুপ্তচরবৃত্তি করে থাকেন, তাহলে আমরা আপনাকে খুঁজছি।”
কারশো জোর দিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার মিত্ররা এই বিশ্বাস রাখতে পারে যে, দেশটি 'গুপ্তচরবৃত্তি ও বিদেশি হস্তক্ষেপের তৎপরতা শনাক্ত করার অভিযান চালিয়ে যাবে।
ওদিকে, এক বিবৃতিতে এডিএফ বলেছে, তাদের একজন সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে- এ বিষয়ে তারা সচেতন এবং তারা নিরাপত্তায় সবরকম ফাটলের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।