পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর ভাইস চেয়ারম্যান শাহ্ মাহমুদ কুরেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে কুরেশিকে গিলগিট বালতিস্তানের একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জিও নিউজ জানিয়েছে।
তাকে জনশৃঙ্খলা রক্ষা আইনের অধীনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে রাজধানী ইসলামাবাদ নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ বুধবার বিকালেও তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়।
পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা জিও নিউজকে জানিয়েছেন, পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখওয়ায় দাঙ্গা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় হওয়া মামলায় পুলিশ কুরেশিকে খুঁজছিল।
গ্রেপ্তারের আগে পিটিআইয়ের এ নেতা দেশের ‘সত্যিকারের মুক্তির জন্য’ দলীয় কর্মীদের তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি যেখানে অবস্থান করছিলেন সেখানে পুলিশ যাওয়ার পর তিনি একটি বিবৃতি রেকর্ড করে বলেন, “আমার কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করতে এসেছে। আমি একটি বার্তা দিয়ে যেতে চাই।”
“তেহরিক-ই-ইনসাফ সত্যিকারের মুক্তির একটি আন্দোলন আর প্রত্যেকেরই এতে অবদান আছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রতিটি ফোরামে আমি পাকিস্তানের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করেছি। ৪০ বছর ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় আছি।”
তিনি দাবি করেন, মামলা হতে পারে এমন কোনো উস্কানিমূলক বিবৃতি তিনি দেননি তাই নিজের কর্মকাণ্ডের জন্য তার কোনো অনুশোচনা নেই। পিটিআইয়ের সংগ্রাম তার লক্ষ্যে পৌঁছবে বলে প্রত্যয় জানান তিনি।
তিনি দলীয় আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার ও উদ্দেশ্যের প্রতি দৃঢ় থাকার আহ্বান জানান।
এর আগে বুধবার রাতে পিটিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফওয়াদ চৌধুরিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর কয়েক ঘণ্টা আগে দলটির মহাসচিব আসাদ উমরকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।
মঙ্গলবার পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পরদিন বুধবার আদালত আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাকে আট দিনের রিমান্ড দিয়ে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) কাছে হস্তান্তর করেছে।
ইমরানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বুধবার পর্যন্ত অন্তত আটজন নিহত হয়েছে বলে ডন অনলাইন জানিয়েছে।
এ সময় আরও ২৯০ জন আহত ও প্রায় দুই হাজার প্রতিবাদকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পিটিআই চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো পাকিস্তানজুড়ে সহিংস প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়। প্রায় সারাদিন ধরেই পুলিশ ও পিটিআই সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা থানাসহ বেশ কয়েকটি সরকারি স্থাপনায় ভাংচুর চালায়।
অবনতিশীল পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশটির সরকার পাঞ্জাব, খাইবার পাখতুনখওয়া ও ইসলামাবাদে সেনাবাহিনী তলব করেছে।
পিটিআই কর্মীদের ‘সেনা সম্পত্তি ও সেনা স্থাপনায়’ হামলার ঘটনাকে দেশটির ইতিহাসের ‘কালো অধ্যায়’ বলে বর্ণনা করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেওয়ার হুঁশিয়ারি জানিয়ে সতর্ক করেছে তারা।
আরও খবর: