সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলার জবাব দিতে ইরাকি সেনাবাহিনীর সাহায্য নিতে পারে ইরান।
Published : 02 Nov 2024, 02:31 PM
ইরানের পাল্টা জবাব মোকাবেলা করার জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একটি সূত্র সিএনএনকে এই তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রটির তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলার জবাব দিতে ইরাকি মিলিশিয়া দলগুলোর সাহায্য নিতে পারে ইরান।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওয়েস জানিয়েছিল, ইসরায়েলের হামলার জবাব দিতে ইরান প্রতিবেশী ইরাকের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে পারে।
ইসরায়েলের সাবেক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, গত ২৬ অক্টোবর ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি বিমান হামলার জবাবে সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে ইরাকের মিলিয়াশিয়া বাহিনীগুলোকে ব্যবহার করার চূড়ান্ত সম্ভাবনা রয়েছে তেহরানের।
গত ২৬ অক্টোবর ওই হামলার পর ইরান পাল্টা জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা ।
বুধবার ইসরায়েলি সূত্রটি সম্ভাব্য হামলার সুনির্দিষ্ট তারিখ না জানালেও বলেছে, হামলাটি সম্ভবত ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই করবে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমায়েল বাঘাই বলেছিলেন, ইসরায়েলের হামলার জবাব দিতে ‘হাতে থাকা সব হাতিয়ারই’ কাজে লাগাবে তেহরান।
ইরানের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কাউন্সিলের প্রধান কামাল খাররাজি বলেছেন, “এবার ইরান হামলা চালালে আরও শক্তিশালী হামলা চালাবে।”
গত ১ অক্টোবর ইরান ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল। ওই হামলার জবাব দিতে ২৬ অক্টোবর ভোররাতে ইরানে পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েল।
ইসরায়েলের দাবি, তারা প্রায় ১০০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে তেহরানের আশপাশে ও ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দুটি প্রদেশের সামরিক লক্ষ্যস্থলগুলোতে ‘সুনির্দিষ্ট’ হামলা চালিয়েছে।
ইরানের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কাউন্সিলের প্রধান কামাল খাররাজি বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত পশ্চিমাদের, বিশেষ করে ইউরোপীয়দের সঙ্গে যথেষ্ট সংবেদনশীল আচরণ করছি। কিন্তু তারা কখনই আমাদের সঙ্গে সংবেদনশীল আচরণ করে না। বিশেষ করে ইরানের আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিষয়ে। তারা যদি আমাদের সঙ্গে সংবেদনশীল না হয় তাহলে আমরাও কঠোর হতে বাধ্য হবো।”
সিএনএন জানায়, তাই ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, “ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরিতেও সক্ষম। তবে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যবহারের বিরুদ্ধে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির নির্দেশে অস্ত্র ব্যবহার দমন করা হয়েছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, "ইরানের শাসকগোষ্ঠীর নেতাদের নির্লজ্জের মত কথায় সত্য ঢাকা যায়না। প্রয়োজন হলে আমরা ইরানের যেকোনো স্থানে পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখি।”
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার শুক্রবার বলেছেন, পেন্টাগন মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত অস্ত্র সরঞ্জাব মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে যা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পৌঁছাবে।
রাইডার বলেন, অস্ত্র সরঞ্জামের মধ্যে অতিরিক্ত ডেস্ট্রয়ার, ফাইটার স্কোয়াড্রন এবং বেশ কয়েকটি বি-৫২ দূরপাল্লার স্ট্রাইক বোমারু বিমান থাকবে।
ইউএসএস বিমানবাহী রণতরী আব্রাহাম লিংকনযোগে অস্ত্র ও সরঞ্জাম পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন পরিষ্কার করে বলেছেন, ইরান বা তার মিত্র দেশগুলো যদি এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকান নাগরিক বা দেশটির স্বার্থকে লক্ষ্যবস্তু করে, তাহলে আমেরিকা তার জনগণকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।”