উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে দূরত্ব ও সময় বাঁচাতে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ট্রেন চালানোর প্রস্তাব আগেই দিয়ে রেখেছে ভারত।
Published : 13 Jun 2024, 11:29 AM
প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও নেপালসহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর মধ্যে রেলপথে সংযোগ বাড়াতে নতুন লাইন বসানোর বিষয়ে ‘স্থান নির্বাচনের’ চূড়ান্ত জরিপ পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার।
প্রতিবেশী দুই দেশ বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গে ১৪টি নতুন রেলপথে সংযুক্ত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে ভারত; যার মধ্যে সীমান্তের বিভিন্ন স্থান দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ৮৬১ কিলোমিটার নতুন পথ তৈরি করতে চায় তারা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া বুধবার জরিপ পরিচালনার অনুমোদনের তথ্যের খবর দিয়ে বলেছে, কোন কোন পয়েন্ট দিয়ে লাইন হলে ভালো হয়, সেসব স্থান নির্বাচনে এ জরিপ চালাবে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
জরিপ করা হবে নেপালের সঙ্গে ২০২ দশমিক ৫ কিলোমিটার নতুন সংযোগ রেলপথ স্থাপনের।
এ ছাড়া উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গে নিজ দেশের যোগাযোগের জন্য ২১২ কিলোমিটার বিকল্প রেললাইন বসানোর বিষয়েও জরিপ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা, ফেনী ও চট্টগ্রাম ও যশোর সীমান্তে এসব নতুন সংযোগের পাশাপাশি পুরনো রেলপথ সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে। এর আওতায় পদ্মা সেতুও ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে।
ভারতের নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা সব্যসাচী দে বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ও কুচ বিহার জেলার গিতলদাহা থেকে বাংলাদেশের হিলি, পার্বতীপুর, কাউনিয়া, লালমনিরহাট ও মোগলহাট পর্যন্ত প্রস্তাবিত ৩২ কিলোমিটার রুটে লাইন স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে ১৪ কিলোমিটার হবে নতুন রেলপথ, বাকি পথ উপযোগী করে তোলা হবে।
বালুরঘাট থেকে হিলি, গাইবান্ধা হয়ে মাহেন্দ্রগঞ্জ, তুরা, মেন্দিপাথার সেকশনে ২৫০ কিলোমিটার রেললাইনে স্থাপন করতে চায় ভারত।
বিহারের মাঙ্গুরজান থেকে বাংলাদেশের পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় হয়ে পশ্চিমবঙ্গের কুচ বিহারের হলদিবাড়ি পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির।
আরেকটি রুট হবে পশ্চিমবঙ্গের ডালখোলা থেকে বাংলাদেশের পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় হয়ে কুচ বিহারের হলদিবাড়ি পর্যন্ত, যার দৈর্ঘ্য হবে ৮০ কিলোমিটার।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের রাধিকাপুর থেকে বিরল, পার্বতীপুর, কাউনিয়া হয়ে গিতলদহ পর্যন্ত হবে ৩২ কিলোমিটার রেলপথ।
দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার বিলোনিয়া থেকে ফেনী, চট্টগ্রাম রেল রুটটি হবে ১৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ, যার মধ্যে একেবারে নতুন করে তৈরি করা হবে ৩৮ কিলোমিটার; বাকি ৯৩ কিলোমিটার উপযোগী করতে হবে অর্থাৎ গজ পরিবর্তন করতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার গেদে থেকে বাংলাদেশের দর্শনা, ঈশ্বরদী, টঙ্গী, ভৈরব বাজার, আখাউড়া হয়ে আগরতলা পর্যন্ত ট্রেন চালাতে চায় ভারত, যেখানে এ রুটে ১০০ কিলোমিটার লাইনে গজ পরিবর্তন করতে হবে।
এ ছাড়া পেট্রাপোল থেকে বেনাপোল, যশোর, রূপদিয়া, নড়াইল, পদ্মা সেতু হয়ে আগরতলা পর্যন্ত লাইন বসাবে ভারত।
সব্যসাচী দে বলেছেন, প্রস্তাবিত এসব রেল রুট বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কানেক্টিভিটি বাড়াবে।
উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলো এবং ভুটানের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ রুটে যোগাযোগে পথ ও সময় কমিয়ে আনতে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ট্রেন চালানোর প্রস্তাব আগেই দিয়ে রেখেছে ভারত।
বিষয়টি নিয়ে সরকারেরও চিন্তাভাবনা রয়েছে এবং করণীয় ঠিক করতে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকও হয়েছে।