দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্স্ট ভাইস পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম হং-কিউন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত জর্জি জিনোভিয়েভকে তলব করে অবিলম্বে রাশিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ার সেনা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
Published : 21 Oct 2024, 06:12 PM
ইউক্রেইন যুদ্ধে রুশ বাহিনীর হয়ে লড়াই করার জন্য রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার সেনা পাঠানোর প্রতিবাদে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় রাজধানী সিউলে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে।
ক্রেমলিন অবশ্য উত্তর কোরিয়ার সেনারা ইউক্রেইনে লড়তে যাচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসার সরাসরি কোনও জবাব দেয়নি। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে মস্কোর সহযোগিতার লক্ষ্য তৃতীয় কোনও দেশ নয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্স্ট ভাইস পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম হং-কিউন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত জর্জি জিনোভিয়েভকে তলব করে অবিলম্বে রাশিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছে।
উত্তর কোরিয়া ইউক্রেইন যুদ্ধে সহায়তা করতে রাশিয়াকে সেনা সরবরাহ করতে পারে-দক্ষিণ কোরিয়ার এমন বক্তব্য এর আগে নাকচ করে দিয়েছিল ক্রেমলিন।
দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্স্ট ভাইস পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম হং-কিউন বলেছেন, ইউক্রেইন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণ জাতিসংঘ প্রস্তাবনা এবং জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন। তাছাড়া, এ পদক্ষেপ দক্ষিণ কোরিয়া এবং এর বাইরের দেশগুলোর নিরাপত্তার জন্যও হুমকি।
কিম হং-কিউনের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রণালয় বলেছে, “আমরা উত্তর কোরিয়ার অবৈধ সামরিক সহযোগিতা এবং রাশিয়ায় তাদের সেনা পাঠানোর পদক্ষেপেরও নিন্দা জানাই। আমাদের প্রধান নিরাপত্তা স্বার্থে হুমকি সৃষ্টিকারী এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে হাতে থাকা সরবরাকম উপায়ে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে একযোগে এর জবাব দেব।”
তবে রুশ রাষ্ট্রদূত জিনোভিয়েভ দক্ষিণের মন্ত্রী হং-কিউনকে বলেছেন, মস্কো এবং পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে সহযোগিতা আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এবং তা দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে পরিচালিত হচ্ছে না। রাশিয়ার দূতাবাস ফেইসবুকে এক পোস্টে একথা জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা (এনআইএস) শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, উত্তর কোরিয়ার ১,৫০০ সেনা এরই মধ্যে রাশিয়ায় পৌঁছেছে। ৮ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবরের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার বিশেষ অভিযান পরিচালনা বাহিনীর এই সেনাদেরকে রুশ নৌবাহিনীর জাহাজে করে রাশিয়ার বন্দর নগরী ভ্লাদিভোস্তকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার আরও সেনা শিগগিরই রাশিয়ায় পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছিল এনআইএস। এই সেনা সংখ্যা শেষ পর্যন্ত মোট ১২ হাজারের কাছাকাছি দাঁড়াতে পারে বলে দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যমকে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি সূত্র।
এনআইএস আরও জানিয়েছিল, রাশিয়ায় পাঠানো উত্তর কোরীয় সেনাদেরকে রুশ সেনাবাহিনীর সেনাদের ইউনিফর্ম ও অস্ত্র দেওয়া হয়েছে এবং পরিচিতি পত্রও করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাদেরকে রাখা হয়েছে রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্তক এবং অন্যান্য স্থান যেমন: উসুরিয়াক, খাবারোভোস্ক এবং ব্লাগোচেনস্ক এর সামরিক ঘাঁটিতে। প্রশিক্ষণ শেষ হয়ে গেলেই এই সেনাদেরকে ইউক্রেইনের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হবে।