Published : 29 Apr 2025, 07:15 PM
রাখাইনে ত্রাণ পৌঁছাতে ‘হিউম্যানিটারিয়ান প্যাসেজ’ বা ‘মানবিক করিডোর’ দেওয়া নিয়ে ‘জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার’ সঙ্গে সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ''যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ যৌক্তিক পরিকাঠামোগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত থাকবে।''
তবে রাখাইনে সহায়তা পাঠানো নিয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তিনি পোস্টে দাবি করেছেন।
‘রাখাইনে মানবিক করিডোর নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর’ শিরোনামে এ পোস্ট দেন প্রেস সচিব।
তাতে প্রশ্ন আকারে তিনি লেখেন, ''কক্সবাজারের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের একটি ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন ছড়িয়ে পড়েছে। বলা হচ্ছে, এটি একটি প্রধান বৈশ্বিক শক্তির ভূরাজনৈতিক কৌশলের অংশ এবং এটি বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বে প্রভাব ফেলবে। এমনকি একটি প্রধান রাজনৈতিক দল মন্তব্য করেছে যে, দেশের প্রধান অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ না করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হয়নি। আপনি কি আমাদের বলতে পারেন, আসলে কী ঘটছে?''
এ প্রশ্নের উত্তর হিসেবে প্রেস সচিব লেখেন, ''আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, সরকার জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি। আমাদের অবস্থান হল, যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ যৌক্তিক পরিকাঠামোগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত থাকবে।”
শফিকুল আলম বলেন, “জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মতে, রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে চরম মানবিক সংকট চলছে। বাংলাদেশ সব সময় বিপদে পড়া দেশগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে, যেমনটি আমরা সম্প্রতি মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পর সহায়তা দিয়ে দেখিয়েছি। আমরা উদ্বিগ্ন যে, এ মানবিক সংকট অব্যাহত থাকলে রাখাইন থেকে আবারও বাংলাদেশে জনগণের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে, যা আমাদের পক্ষে সহনীয় নয়।
“আমরা বিশ্বাস করি, জাতিসংঘের সহায়তাপুষ্ট মানবিক সহায়তা রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এবং শরণার্থীদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করতে সাহায্য করবে।”
প্রেস সচিব আরও লেখেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে, রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর একমাত্র কার্যকর পথ হচ্ছে বাংলাদেশের মাধ্যমে। বাংলাদেশ নীতিগতভাবে এ পথ ব্যবহার করে সহায়তা পরিবহনে যৌক্তিক সহায়তা দিতে রাজি রয়েছে। তবে রাখাইনে সহায়তা পাঠানো নিয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
“আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছি এবং যথাসময়ে দেশের প্রাসঙ্গিক অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। একটি প্রধান শক্তির সংশ্লিষ্টতার যে কথা বলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে এমন অসত্য ও কুৎসামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে, যা এখনো চলছে। এ ধরনের অপপ্রচার নতুন কিছু নয়।''