ফোনে চীন, রাশিয়ার স্যাটেলাইটের তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কতটা ঝুঁকির?

নতুন এ তদন্তে এফসিসি জানতে চায়, মার্কিন ডিভাইসগুলো এফসিসি’র নিয়ম মেনে চলছে কি না। আর ‘জিএনএসএস’ সিগনাল প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে কী ধরনের দুর্বলতা থাকতে পারে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2024, 08:35 AM
Updated : 16 March 2024, 08:35 AM

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ডিভাইসে বিভিন্ন অ্যাপের রাশিয়া ও চীনের মতো দেশগুলোর স্যাটেলাইট ব্যবস্থা থেকে নেওয়া তথ্য ব্যবহার দেশটির নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি কি না, তা নিয়ে তদন্ত করছে মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন (এফসিসি)’।

সংস্থাটির দাবি, ‘গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম (জিএনএসএস)’ নামে পরিচিত এক স্যাটেলাইট ব্যবস্থা থেকে নিয়মিতই সংকেত গ্রহণ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইস, যা নিয়ন্ত্রণ করে দেশটির শত্রুপক্ষ। এ ছাড়া, এ সংকেত পাওয়ার ঘটনাকে কমিশনের নীতিমালা লঙ্ঘন বলেও আখ্যা দিয়েছে এফসিসি।

এর জন্য অ্যাপল, গুগল, মটোরোলা, নকিয়া, স্যামসাং’সহ মার্কিন স্মার্টফোন বাজারের ৯০ শতাংশের বেশি দখলে রাখা স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে জবাব চাইছে কমিশন।

এ প্রসঙ্গে রয়টার্স কোম্পানিগুলোর মন্তব্য জানতে চাইলে কারও কাছ থেকেই তাৎক্ষণিক সাড়া মেলেনি।

“এতে কী ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে, তার কোনও নির্ভরযোগ্য হদিস নেই। আর এ ধরনের সংকেতে সত্যিই কোনও ঝুঁকি থেকে থাকে বা ডিভাইসগুলোর উৎপাদকরা এমন সংকেত প্রক্রিয়াকরণের পেছনে কাজ করে থাকলে সেটা স্পষ্টতই কমিশনের নীতিমালার লঙ্ঘন,” বলেন এফসিসি’র এক মুখপাত্র।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ফোনে চীন ও রাশিয়ার স্যাটেলাইট থেকে সংকেত পাঠানোর খবর চাউর হওয়ার পরপরই এই সপ্তাহের শুরুতে এফসিসি’র প্রধান জেসিকা রোজেনওয়ারসেলকে নিজের শঙ্কার বিষয়টি উল্লেখ করে চিঠি লেখেন মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি ও ‘হাউজ সিলেক্ট চায়না কমিটি’র প্রধান মাইক গ্যালাহার।

এফসিসি শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকেই মার্কিন ফোনে সংকেত পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া, ‘গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস)’ এবং ইউরোপীয় স্যাটেলাইট ব্যবস্থা ‘গ্যালেলেও জিএনএসএস’-এর কাছে এ অনুমতি আছে।

তবে গ্যালাহারের দাবি, মার্কিন ফোনগুলোয় সিগনাল আসছে চীনভিত্তিক স্যাটেলাইট সিস্টেম ‘পিআরসি বেইডউ’ ও রাশিয়ার ‘গ্লোনাস জিএনএসএস’ স্যাটেলাইট ব্যবস্থা থেকেও।

“পূর্ব ইউরোপের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো (এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার তরফ থেকে নেটওওয়ার্ক জ্যামিং ও ভুয়া জিএনএনএস সংকেত পাঠানোর ঘটনা) যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, এ ধরনের বিদেশি স্যাটেলাইট থেকে বিভিন্ন অননুমোদিত সংকেত গ্রহণের বিপরীতে এফসিসি’র নীতিমালা প্রয়োগ করা খুবই জরুরী,” বলেন গ্যালাহার।

২০১৮ সালে এ বিষয়ে নিজের শঙ্কা প্রকাশ করে রোজেনওয়ারসেল বলেছিলেন, মার্কিন ফোনগুলোয় থাকা চিপগুলো এমনভাবে নকশা করা যাতে বাইরের দেশ থেকেও ‘জিএনএসএস’-এর কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়।

“অনেক মার্কিন ডিভাইসে এরইমধ্যে বিদেশি সংকেত আসছে,” সে সময় বলেন তিনি।

নতুন এ তদন্তে এফসিসি জানতে চায়, মার্কিন ডিভাইসগুলো এফসিসি’র নিয়ম মেনে চলছে কি না। আর ‘জিএনএসএস’ সিগনাল প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে কী ধরনের দুর্বলতা থাকতে পারে।