আমার কি চাকরি নেই? - টুইটে ইলন মাস্কের কাছে কর্মীর প্রশ্ন

মাস্কের সঙ্গে অনেকটা চাকরীর ইন্টারভিউয়ের মতো এই প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে এক মেইল বার্তায় নিজের ছাঁটাইয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হন থরলিফসন।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2023, 07:41 AM
Updated : 7 March 2023, 07:41 AM

টুইটারের মালিক ইলন মাস্কের কাছে কোম্পানির এক কর্মী জানতে চেয়েছেন, তাকে কোম্পানি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে কি না।

কোম্পানির প্রধান নির্বাহীকে উদ্দেশ্য করে এক টুইটে হালি থরলিফসন নামের ওই কর্মী বলেন, “আমার চাকরি আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে পারছেন না আপনার কোম্পানির মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান।”

এর জবাবে মাস্ক জিজ্ঞেস করেন, “আপনি কোন ধরনের কাজ করছেন?”

বিবিসিকে থরলিফসন বলেন, তার টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধের নয় দিন পরও তিনি জানতেন না, তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে কি না।

অনেকটা চাকরীর সরাসরি ইন্টারভিউয়ের মতো পড়তে মাস্কের সঙ্গে তার এই প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে এক মেইল বার্তায় নিজের ছাঁটাইয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হন থরলিফসন।

এই প্রসঙ্গে বিবিসিকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য জানায়নি টুইটার।

টুইটারের পণ্য নকশা বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন ৪৫ বছর বয়সী থরলিফসন।

তিনি বিবিসিকে আরও বলেন, তার চাকরি নিয়ে ঘটিত ধোঁয়াশা ‘অদ্ভুত’ ও ‘অত্যন্ত ক্লান্তিকর’ ছিল।

“নয় দিন আগে রোববার সকালে নিজের কম্পিউটার চালু করে দেখি এর স্ক্রিনের রঙ ‘ধূসর’ ও এটি লক হয়ে গেছে। এর থেকে ইঙ্গিত মেলে আমাকে টুইটার অ্যাকাউন্টগুলো থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।” --বলেন তিনি।

“কোম্পানিতে আমার পরিস্থিতি জানার উদ্দেশ্যে কিছুদিন পর থেকে আমি ইলন ও মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান’সহ বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করি।”

“এর পর থেকে মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান আমাকে দুবার মেইল পাঠিয়েও নিশ্চিত করতে পারেননি আমি কি বরখাস্ত হয়েছি কি না।”

“হতাশ!” --কোম্পানির প্রধান মাস্ককে টুইট করেন তিনি।

“পর্যাপ্ত লোকজন রিটুইট করলে আপনি হয়তো আমাকে এখানে জবাব দেবেন।” --বলেন থরলিফসন।

বেশ কিছু সম্পূরক প্রশ্নের পর থরলিফসন কোম্পানিতে নিজের কার্যক্রমের এক তালিকা সরবরাহ করেন। এই কথোপকথন শেষ হয় মাস্কের দুটি হাসির ইমোজির মাধ্যমে।

মাস্কের সঙ্গে কথোপকথন শেষ হওয়ার পরপরই টুইটারের মানব সম্পদ বিভাগ থরলিফসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানায়, তিনি বরখাস্ত হয়েছেন।

২০২১ সালের শুরুতে নিজের ‘ইউএনো’ নামের ক্রিয়েটিভ এজেন্সি টুইটারের কাছে বিক্রি করেন আইসল্যান্ড ভিত্তিক এই উদ্যোক্তা। ২০১৪ সালে দেশটির রিকজাভিক শহরে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

এই অধিগ্রহণের অংশ হিসেবে টুইটারের পুরোদস্তর কর্মী হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।

“আমি কয়েকটি কারণে কোম্পানি বিক্রি করেছিলাম। এর একটি হল, আমার পেশীজনিত সমস্যা আছে। আর আমার শরীর ধীরে ধীরে তবে নিশ্চিতভাবেই নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে।” --বিবিসিকে বলেন তিনি।

“আমার আরও কয়েক বছর ভালোভাবে কাজ করার সামর্থ্য থাকায় আমি কোম্পানি গুটিয়ে নিজের ও পরিবারের সেই সময়ের জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চেয়েছি, যখন আমি তেমন কিছুই করতে পারব না।”

বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, টুইটারের কাছে নিজের কোম্পানি বিক্রির সময় ঘটিত চুক্তিতে মাস্ক সমর্থন দেবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কিত থরলিফসন।

“এটা অত্যন্ত চাপের বিষয়। এটি আমার অবসরের তহবিল, নিজের রোগ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এতি আমার ও পরিবারের যত্ন নেওয়ার একমাত্র উপায়।”

“এর অন্য প্রান্তে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তিনি এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ালে তা আমার পক্ষে মেনে নেওয়া সহজ নয়।”

গত মাসে টুইটারের আরও দুইশ কর্মী ছাঁটাই করেন মাস্ক। এর মানে অক্টোবরের আনুমানিক সাড়ে সাত হাজার কর্মী থেকে কমতে কমতে টুইটারে এখন কেবল দুই হাজারের সামান্য বেশি কর্মী রয়েছে।

“কোম্পানিগুলো কর্মী ছাঁটাই করে, এটা জানা তাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে।” --বলেন থরলিফসন।

“তারা সাধারণত কর্মীদের জানালেও সম্ভবত টুইটারে এখন এই বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।”