রক্তের অক্সিজেন পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি নয়, বরং কোম্পানির স্বাস্থ্যবিষয়ক পণ্যগুলোর ভবিষৎ কী দাঁড়াবে সেটি মাথায় রেখেই অ্যাপল এই মামলাটি লড়ছে।
Published : 28 Dec 2023, 05:58 PM
অ্যাপল আপাতত তাদের ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টওয়াচগুলোর বিক্রি ফের শুরু করতে পারবে।
অ্যাপল ওয়াচে ব্যবহৃত প্রযুক্তি নিয়ে পেটেন্ট বিরোধের ফলে ঘড়িগুলোর ওপর মার্কিন সরকারি কমিশনের আমদানি নিষেধাজ্ঞা ছিল। বুধবার মার্কিন আপিল আদালত সে নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করার ফলে অ্যাপল ওয়াচের মডেলগুলো বিক্রির ওপর থেকে বাধা সরল।
এর আগে ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশনের (আইটিসি) দেওয়া ওই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করার জন্য ‘ইউএস কোর্ট অফ আপিলস ফর দ্য ফেডারেল সার্কিটে’ জরুরি আপিল দাখিল করেছিল। নিষেধাজ্ঞার কারণ ছিল, অ্যাপলের স্মার্ট ওয়াচে ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক মেডিকেল প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানি ‘ম্যাসিমো’র পেটেন্ট লঙ্ঘনের অভিযোগ।
এ বিষয়ে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এলে সেটি কোনো একটি কোম্পানির কোটি কোটি ডলার খসানোর পর হতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। এর বাইরে অ্যাপলের দিক থেকে প্রযুক্তিগত সমাধান আসারও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, এ মামলা অ্যাপলের জন্য যে পরিমাণ দুর্নাম ডেকে আসছে, সে তুলনায় কোনও আর্থিক ধাক্কা অ্যাপলের কাছে তেমন কিছু নয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
বুধবারের এ সিদ্ধান্তের পরে ম্যাসিমো-এর শেয়ার মূল্য চার দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে, অপরদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে অ্যাপলের শেয়ার মূল্য।
এক বিবৃতিতে অ্যাপল বলেছে, “আমরা নতুন বছরের জন্য গ্রাহকদের কাছে সম্পূর্ণ অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ফিরিয়ে দিতে পেরে রোমাঞ্চিত।”
আদালতের সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ম্যাসিমো।
আইটিসি রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তিওয়ালা অ্যাপল ওয়াচের দুটি মডেল আমদানি ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছিল। ২০২২ সালে ‘সিরিজ ৬’ মডেল দিয়ে শুরু করে অ্যাপল তার স্মার্টওয়াচগুলিতে একটি পালস অক্সিমিটার ফিচার যোগ করেছে।
ম্যাসিমো অভিযোগ করেছে অ্যাপল তাদের কর্মীদের নিয়োগ করে ঘড়িতে রক্তের অক্সিজেন পর্যবেক্ষণ সম্পর্কিত ফিচার চুরি করেছে এবং এ কাজে ম্যাসিমোর সাবেক কর্মীদের জ্ঞান ব্যবহার করেছে।
জবাবে অ্যাপল বলেছে, প্রতিদ্বন্দ্বী স্মার্টওয়াচের বিরুদ্ধে ম্যাসিমোর এসব আইনি পদক্ষেপ কেবল ‘পথ পরিষ্কার করার কৌশল’।
"অ্যাপল সহজেই তাদের নিজস্ব ব্লাড মনিটরিং সফটওয়্যার তৈরি করতে পারে, এটি সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ সফটওয়্যার তৈরির খরচ এমন কিছু নয়, বিশেষ করে অ্যাপলের মতো ধনী কোম্পানির জন্য।" – বলেছেন ইকুইটি ক্যাপিটালের অর্থনীতিবিদ স্টুয়ার্ট কোল।
“আরও বড় সমস্যা হল, এ ঘটনাটি ইঙ্গিত দেয় যে, অ্যাপল নিজেদের প্রযুক্তি তৈরি না করে প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছ থেকে চুরি করছে। আর এমন কথাবার্তা অ্যাপলের প্রচারণার জন্য মোটেও লাভজনক নয়।”
স্টুয়ার্ট কোল বলছেন, রক্তের অক্সিজেন পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি নয়, বরং কোম্পানির স্বাস্থ্যবিষয়ক পণ্যগুলোর ভবিষৎ কী দাঁড়াবে সেটি মাথায় রেখেই অ্যাপল এই মামলাটি লড়ছে।”
বুধবার একটি চার অনুচ্ছেদের রায়ে আপিল আদালত বলেছে, এই আপিল প্রক্রিয়া চলাকালীন দীর্ঘমেয়াদী বিরতির জন্য অ্যাপলের অনুরোধ বিবেচনায় রেখে তারা এ নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করছেন।
অ্যাপলের অনুরোধে সাড়া দিতে আদালত আইটিসি-কে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছে।