“আগে জানলে এমন হতো না। আমি এমন ভুল কাজ আর করব না। এরপর থেকে এত মানুষ নিয়ে মিছিলও করব না”, বলেন কামরুজ্জামান।
Published : 04 May 2024, 09:22 PM
শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কামরুজ্জামান উজ্জ্বল জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে মিছিল করেছেন। এতে তার বিরুদ্ধে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠেছে।
নির্বাচনি আইন অনুযায়ী জীবন্ত প্রাণী নিয়ে মিছিল ও প্রচার চালানো নিষেধ থাকা সত্ত্বেও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান শুক্রবার রাতে হাজারো সমর্থকদের নিয়ে এই মিছিল করেন।
দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে। কামরুজ্জামান ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচন করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পরই প্রার্থীরা জোরেশোরে মিছিল, সভা ও প্রচার শুরু করেন। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কামরুজ্জামান উজ্জ্বলের পক্ষে জেলা শহরের রাজগঞ্জ ব্রিজ এলাকা থেকে মিছিল বের করেন তার সমর্থকেরা। মিছিলে কামরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
ওই মিছিলে দুটি জীবন্ত ঘোড়া রাখা হয়। কর্মী-সমর্থকরা ঘোড়া দুটি সামনে রেখে মিছিল করেন। মিছিলে হাজারো কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।
শহরের প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক ঘুরে চৌরঙ্গি মোড়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেনের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে রাত ৯টার দিকে মিছিলটি শেষ হয়। মিছিলের সময় শহরের প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচলে ব্যাহত হয়।
শরীয়তপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, উপজেলা পরিষদ (নির্বাচনি আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬-এর ১০ ধারায় বলা আছে, প্রচারের ক্ষেত্রে প্রতীক হিসেবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না।
“১১ ধারায় বলা আছে, নির্বাচনপূর্ব সময়ে কোনো ধরনের মিছিল বা কোনো শোডাউন করা যাবে না। ওই বিধির ৩৩ নম্বরে বলা আছে, কোনো প্রার্থী নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে এবং তা প্রমাণিত হলে রিটার্নিং কর্মকর্তার সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারেন।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কামরুজ্জামান বলেন, “জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে মিছিল করা যাবে না- এমন কথা আমি জানতাম না। আমি নির্বাচন আচরণবিধি পড়ে দেখিনি। পরে আমাকে একজন বলেছেন এটা নির্বাচন আচরণবিধি পরিপন্থি।
“আগে জানলে এমন হতো না। আমি এমন ভুল কাজ আর করব না। এরপর থেকে এত মানুষ নিয়ে মিছিলও করব না”, বলেন কামরুজ্জামান।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, “উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেউ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করতে পারবেন না। আর মিছিল বা প্রচারে কোনো প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না। এসব কার্যক্রম আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
“কোনো প্রার্থী এমন করেছেন বলে আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। এমন হলে ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন এবং সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন- কামরুজ্জামান উজ্জ্বল, নুরুল আমিন কোতোয়াল, বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া, পেনসি বেগম ও আল আমিন খান।
ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন- সাখাওয়াত হোসেন হাওলাদার ও ইকবাল হোসেন রতন।
সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সামিনা ইয়াসমিন ও ফাতেমা আক্তার।