স্টেডিয়াকে বিদায় জানালেন যুক্তরাজ্যের গেইমাররা

১৯ জানুয়ারি সকাল আটটার পর যুক্তরাজ্য থেকে এই সেবায় প্রবেশ করা যাবে না। গেইমারদের অনেকেই বলেছেন, সেবাটি চলে যাওয়ায় তাদের ‘মন ভেঙে’ গেছে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2023, 11:19 AM
Updated : 19 Jan 2023, 11:19 AM

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গুগলের ক্লাউড গেইমিং সেবা স্টেডিয়া। এটি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে প্ল্যাটফর্মটিকে বিদায় জানাচ্ছেন যুক্তরাজ্যের গেইমাররা।

বৃহস্পতিবার বন্ধ হতে যাওয়া এই সেবার উন্মোচন ঘটে ২০১৯ সালের নভেম্বরে। সে সময় এটি ‘গেইমের নেটফ্লিক্স’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। আর পিসি বা কনসোলের সহায়তা ছাড়াই এতে বিভিন্ন গেইম স্ট্রিম করা যেত।

বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯ নভেম্বর সকাল আটটার পর যুক্তরাজ্য থেকে এই সেবায় প্রবেশ করা যাবে না। গেইমারদের অনেকেই বিবিসিকে বলেন, সেবাটি চলে যাওয়ায় তাদের ‘মন ভেঙে’ গেছে।

স্টেডিয়া সেবা কেনা গ্রাহকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গুগল। এর মধ্যে রয়েছেন সেবাটি থেকে কন্ট্রোলার, গেইম বা ডাউনলোডযোগ্য কনটেন্ট কেনা গ্রাহকরা। এর আগে গুগল অনুমান প্রকাশ করেছিল, ওইসব ক্ষতিপূরণ জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে দেওয়া হবে।

স্টেডিয়া প্ল্যাটফর্মের চূড়ান্ত গেইম উন্মোচনের মাধ্যমে বিদায়ের জানান দিয়েছে গুগল। ‘ওয়ার্ম গেইম’ নামের এই গেইম সেবাটি উন্মোচনের আগে ডেভেলপাররা ব্যবহার কারতেন স্টেডিয়ার সেবা পরীক্ষার জন্য।

স্টেডিয়া বন্ধ হলেও এর বিভিন্ন কন্ট্রোলারে ব্লুটুথ সুবিধা চালুর পরিকল্পনা করেছে গুগল। ফলে, কোনো তারের সহায়তা ছাড়াই বিভিন্ন পিসি গেইম খেলতে পারবেন গেইমার।

সেপ্টেম্বরে গুগল বলেছে, তারা স্টেডিয়া সেবাটি বন্ধ করছে কারণ এটি কোম্পানির প্রত্যাশা অনুযায়ী গ্রাহক টানতে পারেনি।

তবে, সেবাটির ভক্তরা বিষন্নতার সঙ্গে এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেন, সেবাটি একবার বন্ধ হলে স্টেডিয়াতে ‘এক্সক্লুসিভ’ হিসেবে থাকা বিভিন্ন গেইমও বন্ধ হয়ে যাবে।

গত বছর ‘আউটকাস্টার’ নামের মাল্টিপ্লেয়ার গেইমের লন্ডন ভিত্তিক গেইম নির্মাতা কোম্পানি ‘স্প্ল্যাশ ড্যামেজ’ বলেছে, তারা অন্য কোথাও গেইমটি আনার পরিকল্পনা করছে না।

আরেক গেইম নির্মাতা কোম্পানি ‘কিউ-গেইমস’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ডিলান কুথবার্ট বিবিসিকে বলেন, স্টেডিয়া এক্সক্লুসিভ গেইম ‘পিক্সেলজাংক রেইডার্স’ তৈরির পেছনে তার দল দুই বছর খরচ করেছে। তিনি চাইছেন, গেইমটি যেন চিরতরে হারিয়ে না যায়। 

“গেইমাররা যখন আপনার কয়েক বছর ধরে তৈরি করা গেইম খেলতে পারেন না, তখন বিষয়টি সত্যিই লজ্জাজনক।” --বলেন তিনি।

“আমরা সেইসব প্রকাশকের সঙ্গে যোগাযোগের প্রত্যাশা করছি, যারা পিসি এমনকি পিএস৫ বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে আমাদের গেইম পৌঁছে দিতে সহায়তা করবে। এটি আমাদের নিজস্ব আইপি হওয়ায় আমরা এর একটি উপায় খুঁজে দেখার চেষ্টা করছি।”

কুথবার্ট বলেন, গুগলে এটি কীভাবে কাজ করানো যায়, ওই বিষয়টির সমাধান নিয়ে তিনি আলোচনা করছেন। তবে আরেকটি সমস্যা আছে।

“আমি গেইমটি নিয়ে কিছু কাজ করতে চাই।” --বলেন তিনি।

‘একে ভালোবেসেছি’

সেবাটি উন্মোচনের সময় স্টেডিয়ার হার্ডওয়্যার কিনেছিলেন ৩০ বছর বয়সী কেন্ট। বিবিসি নিউজকে তিনি জানান, আট বছরে এই প্রথম কোনো গেইম খেলেছেন তিনি।

“আমি স্টেডিয়া কিনেছি কারণ এটি ব্যবহারে সহজ।” --বলেন তিনি।

“এতে কোনো ডাউনলোড বা ইনস্টল করার মতো আপডেট ছিল না। কেবল আপনি যখন গেইম খেলতে চাইতেন, তখনই এটি আসতো।”

তিনি আরও বলেন, গেইমের পেছনে সম্ভবত আটশ থেকে নয়শ ইউরো খরচ করেছেন তিনি। স্টেডিয়া থেকে সরে আসতে সম্প্রতি এক্সবক্স কেনার বিষয়টিও জানান কেন্ট।

“আমি সত্যিই একে ভালোবেসেছি। এটি আমাকে গেইমিংয়ে ফিরিয়ে এনেছে।”