কনটেন্ট মডারেশন: মার্কিন কংগ্রেসে ডাক পড়ল শীর্ষ প্রযুক্তি সিইওদের

এই দফায় অবশ্য টুইটারের বিরুদ্ধে সমন জারি হয়নি। সম্ভবত মাস্কের মালিকানায় টুইটার ডানপন্থী মতবাদের প্রতি তুলনামূলক বেশি সহনশীল- এমন ধারণা তৈরি হয়েছে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2023, 10:45 AM
Updated : 16 Feb 2023, 10:45 AM

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের হাতে চলে এসেছে। এখন কনটেন্ট সেন্সরশিপের অভিযোগে বিভিন্ন প্রযুক্তি জায়ান্টের ওপর ‘খড়্গ নামানোর’ প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।

মার্কিন বাণিজ্য দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, কোম্পানির কনটেন্ট মডারেশন প্রক্রিয়ার বিষয়ে অ্যালফাবেট, অ্যামাজন, অ্যাপল, মেটা ও মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহীদের সমন জারি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘হাউজ জুডিশিয়ারি কমিটি’র প্রধান জিম জর্ডান।

এই বিষয়ে দেশটির ফেডারেল সরকারের নির্বাহী বিভাগ ও কোম্পানিগুলোর মধ্যকার বিভিন্ন যোগাযোগ সম্পর্কিত তথ্য প্রদানের জন্য কোম্পানি প্রধানরা ২৩ মার্চ পর্যন্ত সময় পাবেন বলে উঠে এসেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেটের প্রতিবেদনে।

বিভিন্ন কনটেন্টে সেন্সরশিপ সংশ্লিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জর্ডানের প্যানেল জানতে চাইছে, ফেডারেল সরকার ‘কীভাবে ও কতদূর পর্যন্ত’ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সমন্বিত হয়ে কাজ করেছে ও তাদেরকে চাপ দিয়েছে। এইসব অনুরোধের মধ্যে আছে কনটেন্ট মডারেশন নীতিমালা নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের বিবরণীর পাশাপাশি নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে যারা কথা বলেছেন তাদের তথ্য।

বেশ কিছু সংখ্যক রিপাবলিকান রাজনীতিবিদের মতো জর্ডানও দীর্ঘ সময় ধরে অনড় দাবিতেই আছেন যে, শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো ঘৃণামূলক বক্তব্য ও ভুল তথ্যের ছদ্মবেশে আসলে রক্ষণশীল মতবাদ সেন্সর করছে।

এই দফায় অবশ্য টুইটারের বিরুদ্ধে সমন জারি হয়নি। এনগ্যাজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্ভবত মাস্কের মালিকানায় টুইটার ডানপন্থী মতবাদের প্রতি তুলনামূলক বেশি সহনশীল- এমন ধারণা তৈরি হয়েছে।

সম্প্রতি সামাজিক প্ল্যাটফর্মটিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের (এখনও নিষ্ক্রিয়) অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি কোম্পানির অভ্যন্তরীণ ‘টুইটার ফাইল’ও শেয়ার করা হয়, যা উঠে এসেছে মার্কিন সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে।

ওই প্রতিবেদনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেন বিষয়ক বিভিন্ন পোস্ট শেয়ারের মাত্রা সীমিত করার পাশাপাশি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল দাঙ্গার পর ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টে কোম্পানির নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের বিষয়টিও উঠে আসে।

এই ফাঁসের ঘটনাকে রক্ষণশীল মতবাদে সেন্সরশিপের প্রমাণ হিসেবে চিহ্নিত করেন ডানপন্থীরা। তবে, সমালোচকরা বলছেন, এইসব নথি আসলে নতুন কোনো তথ্যের বিবরণ ও ষড়যন্ত্রের প্রমাণ দেয় না।

এই প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে পাঁচ কোম্পানির সঙ্গে এনগ্যাজেট যোগাযোগ করেছে। সাড়া দিয়ে মাইক্রোসফট বলেছে, তারা এইসব নথি জমা দেওয়ার পাশাপাশি কমিটির সঙ্গে ‘সরল বিশ্বাসে’ কাজ করার পরিকল্পনা করছে।

এদিকে, পক্ষপাত সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ ক্রমাগতই নাকচ করে আসছে কোম্পানিগুলো। তারা আরও বলছে, তারা কেবল মিথ্যা ও অন্যান্য ক্ষতিকারক কনটেন্ট সরানোর চেষ্টা করেছে।

সিইওদের ডেকে পাঠানো এই কমিটি শেষ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে কি না, সেটি ভিন্ন বিষয়। একাধিক গবেষণায় এইসব অভিযোগের প্রমাণ না মেলায়, রক্ষণশীল বিরোধী পক্ষপাত সংশ্লিষ্ট অভিযোগ প্রমাণের বিভিন্ন প্রচেষ্টা এখন পর্যন্ত ব্যর্থই বলা যায়।

এমনকি ধারাবাহিকভাবে নীতিমালা চাপিয়ে দেওয়ার কারণে তৈরি সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার ভয়ে নিজেদের ভুল তথ্য সংশ্লিষ্ট নীতিমালা লঙ্ঘন করে, এমন বিভিন্ন ডানপন্থী কনটেন্টের বেলায় ফেইসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো ছাড় দিয়েছে, এমন প্রমাণও মিলেছে বলে উঠে এসেছে এনগ্যাজেটের প্রতিবেদনে।