কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’ ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের পরীক্ষায় পাস করা গেলেও, জানা গেল খুব ভালো ফলাফলের জন্য এটি ‘যথেষ্ট নয়’।
সফটওয়্যার নির্মাতা ‘ওপেনএআই’র এ নতুন চ্যাটবটে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, যেখানে গড়পড়তা পাস মার্কস উঠলেও উচ্চ নম্বর মেলেনি বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিএনএন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পরীক্ষার চারটি কোর্সে পাস করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শক্তিশালী এ চ্যাটবট। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হোয়ার্টন স্কুল অফ বিজনেসে নেওয়া হয় আরেকটি পরীক্ষা।
চারটি কোর্সের পরীক্ষায় চ্যাটজিপিটি কতটা ভালোভাবে উত্তর দিতে পারে, তা যাচাই করে দেখতে মিনেসোটা ল স্কুলের অধ্যাপকরা পক্ষপাতহীনভাবে নম্বর দেন। পরীক্ষায় ৯৫টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন এবং ১২টি রচনামূলক প্রশ্নে চ্যাটজিপিটি গড়পড়তা সি প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থীর নম্বর পেয়েছে; তবে পাস নম্বর উঠেছে চারটি কোর্সের সবকটিতেই।
অন্যদিকে, পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হোয়ার্টন স্কুলের বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কোর্সে আরেকটু ভালো করেছে এই চ্যাটবট, সেখানে পরীক্ষা নেওয়ার পর বি থেকে বি মাইনাস গ্রেড নম্বর উঠেছে।
চ্যাটজিপিটির ফলাফলের বিশদ বর্ণনায় হোয়ার্টনের অধ্যাপক ক্রিশ্চিয়ান টেরউইশ বলেন, বিজনেস ম্যানেজমেন্টের বেসিক অপারেশনস ম্যানেজমেন্ট ও প্রসেস অ্যানালাইসিসের প্রশ্নে চ্যাটজিপিটি ‘দারুণ কাজ’ করেছে। কিন্তু আরও উচ্চতর বিষগুলোর উত্তরে তেমন কাজ করতে পারেনি এবং মৌলিক গণিতে ‘আশ্চর্যজনক ভুল’ করেছে। এই ভুলগুলো বিশাল আকারের হতে পারে।”
গত নভেম্বরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত এই চ্যাটবট উন্মোচনের পর থেকেই শঙ্কায় উন্নত প্রযুক্তির দেশগুলো। উদ্বেগের বিষয় হলো- এই চ্যাটবট ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় নকল বা তারা একে দিয়ে প্রবন্ধ লিখিয়ে নিতে পারে। ফলে, তাদের শেখার গতি ‘স্থবির হয়ে যাওয়ার’ আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর এ উদ্বেগের মধ্যেই চ্যাটজিপিটি দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার এবং ফলাফল যাচাই করা হলো যুক্তরাষ্ট্রে।
আরও পড়ুন
ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শহর নিউ ইয়র্কের পাবলিক স্কুলগুলোর বিভিন্ন ডিভাইস এবং ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে নিষিদ্ধ হয়েছে চ্যাটজিপিটি।
কিছু কিছু শিক্ষাবিদ শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে ব্যাপকভাবে ভাবছেন; কারণ শিক্ষার্থীরা চ্যাটবট ব্যবহার করে অ্যাসাইনমেন্ট লিখিয়ে নিতে পারে। তবে এ টুল শিক্ষার্থীরা কতোটা ব্যবহার করছেন এবং তাদের শেখার কতোটা ঘাটতি তৈরি করছে তা স্পষ্ট নয়।
সিএনএ জানিয়েছে, গবেষণাপত্রের সারাংশও লিখে দিয়েছে চ্যাটজিপিটি, যা কিছু বিজ্ঞানীকেও ‘বোকা বানিয়েছে’। আবার অন্যদিকে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের সিইও ইমেইল লেখা এবং নিজের হিসাব সারার কাজেও এটি ব্যবহার করছেন।