মঙ্গল অভিযানের সম্ভাবনা বাড়াল মহাকাশে প্রথম রোবট সার্জারি

বেশ কয়েক দশক ধরেই এ প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগ চালিয়ে আসছে নাসা। এর লক্ষ্য, একদিন দূরের মহাকাশ মিশনগুলোয় এটি ব্যবহার করা।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2024, 11:33 AM
Updated : 27 Feb 2024, 11:33 AM

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ‘আইএসএস’-এ রোবট ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো রিমোট নিয়ন্ত্রিত অস্ত্রোপচার চালিয়েছেন ভূপৃষ্ঠে থাকা একদল ডাক্তার।

এ সফল অস্ত্রোপচারে দেখা যায়, রাবারের ব্যান্ডকে মানব টিস্যু’র পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করে সেগুলো টুকরো করেছেন সার্জনরা। ধারণা করা হচ্ছে, মহাকাশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন এক যুগের সূচনা ঘটতে পারে এর মাধ্যমে, যার সুবিধা মিলবে মঙ্গল গ্রহ বা এর চেয়েও দূরের কোনো মিশনে।

‘স্পেসমিরা’ নামের এ রোবটটি বানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘ইউনিভার্সিটি অফ নেব্রাস্কা-লিংকন’-এর প্রকৌশলীরা, যেখানে এর সংকেত বিলম্বিত হওয়ার মাত্রা প্রতি সেকেন্ডের দুই তৃতীয়াংশ থেকে তিন চতুর্থাংশ পর্যন্ত, যা পৃথিবীতে ব্যবহৃত একই ধরনের রিমোট নিয়ন্ত্রিত সার্জিক্যাল রোবটের চেয়ে অনেক ভাল ফলাফল হিসেবে বিবেচিত। আর এর আগে ‘আইএসএস’-এ বিশেষজ্ঞ ছাড়া যেসব অপারেশন অসম্ভব ছিল, সেগুলোও সম্ভব করবে এটি।

“এমন অস্ত্রোপচার আমাদেরকে বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি মিশন পরিচালনার ও পৃথিবী থেকে আরও দূরে যাওয়ার সুযোগ দেবে,” বলেন নাসার নভোচারী জ্যাসমিন মোঘবেলি।

“তাই এটা সত্যিকারের ‘গেইম-চেঞ্জার’।”

রোবটটির নির্মাতা কোম্পানি ‘ভার্চুয়াল ইনসিশন’ বলেছে, স্পেসমিরা এখনও একটি রোবটিক সার্জারি ডিভাইস, যা বিভিন্ন স্পেস মিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার মতো যথেষ্ট ছোট।

বেশ কয়েক দশক ধরেই এ প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগ চালিয়ে আসছে নাসা। এর লক্ষ্য, একদিন দূরের মহাকাশ মিশনগুলোয় এটি ব্যবহার করা। আর মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির ‘অন্যতম প্রধান লক্ষ্য’ অর্থাৎ মঙ্গল গ্রহ পুরোপুরি প্রদক্ষিণে সময় লাগতে পারে প্রায় দুই বছর।

“দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ মিশনে নভোচারীদের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনীয়তাও বেড়ে যায়। হোক সেটা সাধারণ সেলাই বা অ্যাপেনডিক্সের জরুরী সার্জারি,” মিশনের বিস্তারিত জানানো এক ব্লগ পোস্টে লিখেছে নাসা।

“এ পরীক্ষার ফলাফল এ ধরনের অন্যান্য রোবটিক সিস্টেম বিকাশের ক্ষেত্রেও সহায়ক হতে পারে।”

ভার্চুয়াল ইনসিশন বলেছে, তাদের রোবট দীর্ঘমেয়াদি স্পেস মিশনের বাইরেও পৃথিবীর দুর্গম এলাকাগুলোয় অস্ত্রোপচারের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেখানে বিশেষজ্ঞ সার্জনদের কাজ করার মতো কোনও অপারেশন থিয়েটার নেই।

“মহাকাশে আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়টি রোমাঞ্চকর হলেও আমরা আশা করি এই গবেষণার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে পৃথিবীতে,” বলেন কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী জন মারফি।

“এমন ‘মিনিরাস’ (ছোট আকৃতির সার্জারি রোবট) গোটা স্বাস্থ্যখাতেই বিপ্লব বয়ে আনতে পারে, যেখানে প্রতিটি অপারেশন থিয়েটারেই এমন রোবট প্রস্তুত থাকবে।”