এ পদ্ধতির মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীদের শুরু থেকেই চিকিৎসা দিতে পারবেন চিকিৎসকরা, যা যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বা এনএইচএস’-এর উপর চাপ কমাতে সহায়তা করবে।
Published : 02 Sep 2024, 02:34 PM
এবার হৃদরোগের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের শনাক্ত করবে এআই– সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনই দাবি করেছেন গবেষকরা।
তাদের দাবি, অদূর ভবিষ্যতে মারাত্মক হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে এমন রোগীদের শনাক্ত করতে চিকিৎসকদের সাহায্য করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই।
জেনারেল প্র্যাকটিশনার বা জিপি চিকিৎসক মানে হচ্ছে, যে চিকিৎসক মোটামুটিভাবে সকল রোগেরই চিকিৎসা করেন। গবেষণা বলছে, নতুন এই গবেষণা তদের জন্য কাজের হতে পারে।
এজন্য ‘অপ্টিমাইজ’ নামে পরিচিত এক এআই সিস্টেমকে প্রশিক্ষণ দিতে সহায়তা করেছে ‘ইউনিভার্সিটি অফ লিডস’-এর গবেষকরা, যেখানে ২০ লাখেরও বেশি মানুষের স্বাস্থ্য তথ্যের রেকর্ড খতিয়ে দেখেছে এই এআই সিস্টেমটি।
এক্ষেত্রে গবেষকরা দেখেছেন, বেশিরভাগ রোগী আগে থেকে তাদের রোগ নির্ণয় করতে পারেননি বা তাদের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করতে পারে এমন ওষুধ তারা পাননি।
‘ইউনিভার্সিটি অফ লিডস’-এর অধ্যাপক ড. রমেশ নাদারাজাহ বলেন, রোগীদের স্বাস্থ্যে অবনতি ঠেকানো গেলে সেটি চিকিৎসার তুলনায় সাশ্রয়ী হয়।
স্ক্যান করা ২০ লাখেরও বেশি মানুষের স্বাস্থ্য রেকর্ড খতিয়ে দেখে এ সিস্টেমটি চিহ্নিত করেছে, এর মধ্যে চার লাখেরও বেশি মানুষ হার্ট ফেইলিওর, স্ট্রোক ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন।
এ দলটির ৭৪ শতাংশই এমন রোগী, যারা হৃদরোগের কারণে মারা গেছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
সিস্টেমটি ৮২ জন উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগী শনাক্ত করেছে, যেখানে পাঁচজনের মধ্যে একজনের মাঝারি বা উচ্চ-ঝুঁকির দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ আছে, যা আগে ধরা পড়েনি।
উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত অর্ধেকেরও বেশি রোগীকে তাদের হার্টের ঝুঁকি আরও ভালভাবে পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন ওষুধ দেওয়া হয়েছে।
গবেষণায় দেখা মিলেছে, এ পদ্ধতির মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীদের শুরু থেকেই চিকিৎসা দিতে পারবেন চিকিৎসকরা, যা দেশের স্বাস্থ্যখাতে রোগীর চাপ কমাতে সহায়তা করবে।
দেশটির স্বাস্থ্য তথ্য রিসার্চ ফেলো ড. নাদারাজাহ বলেন, হৃদরোগে মৃত্যুর ঘটনা নানা কারণেই হতে পারে।
“নতুন ধারণা দেওয়ার জন্য সহজলভ্য ডেটা ব্যবহার করে এই এআই সিস্টেমটি। যা স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের বুঝতে সাহায্য করবে, তারা রোগীদের সময়মত যত্ন করছেন কিনা।
গবেষকরা তাদের এ গবেষণার ফলাফল পেশ করেছেন লন্ডনের ‘ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব কার্ডিওলজি কংগ্রেস’-এ।
“আমাদের ধারণা, এ গবেষণা শেষ পর্যন্ত হৃদরোগ ও এ সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত রোগীদের উপকারে আসবে। পাশাপাশি আমাদের এনএইচএস সিস্টেমের উপরও চাপ কমাতে সহায়তা করবে,” বলেছেন ড. নাদারাজাহ।
“পরবর্তীতে আমরা একটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালেরও পরিকল্পনা করছি, যেখানে আমরা ডাক্তারদের নেতৃত্বে রোগীদের সেবা দেবো।
এ গবেষণার অর্থায়ন করেছেন ‘ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন’-এর প্রধান বিজ্ঞানভিত্তিক ও চিকিৎসা কর্মী অধ্যাপক ব্রায়ান উইলিয়ামস। তিনি বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় করার বিষয়টি হাসপাতালে রোগীদের ভর্তি হওয়া কমানোর মূল চাবিকাঠি।