আক্রমণের ফলে কোম্পানিগুলোর ভেতরকার নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ও বিভিন্ন প্রযুক্তিগত তথ্য চুরি হয়েছে। এসব তথ্য দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ মঙ্গলবার বিস্তারিত জানিয়েছে।
Published : 24 Apr 2024, 02:04 PM
উত্তর কোরিয়ার প্রধান হ্যাকিং গ্রুপগুলো এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন প্রতিরক্ষা কোম্পানির বিরুদ্ধে ‘অল-আউট’ আক্রমণ চালিয়েছে।
আক্রমণের ফলে কোম্পানিগুলোর ভেতরকার নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ও বিভিন্ন প্রযুক্তিগত তথ্য চুরি হয়েছে। এসব তথ্য দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ মঙ্গলবার বিস্তারিত জানিয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
উত্তর কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ‘ল্যাজারাস’, ‘কিমসুকি’ ও ‘অ্যান্ডেরিয়েল’ নামে পরিচিত হ্যাকিং গ্রুপগুলো সরাসরি বা তাদের সঙ্গে কাজ করা ঠিকাদারদের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোর ডেটা ব্যবস্থায় ক্ষতিকর কোড স্থাপন করেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ও বেসরকারি খাতের একদল বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কাজ করে হ্যাকিং গ্রুপগুলোকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। আইপি অ্যাড্রেসের উৎস, সংকেতের ‘রি-রাউটিং আর্কিটেকচার’ ও ব্যবহৃত ম্যালওয়্যারের ধরন দেখে তাদের শনাক্ত করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ২০২২ সালের নভেম্বরে শুরু হওয়া এক আক্রমণের ক্ষেত্রে, হ্যাকাররা একটি কোম্পানির পাবলিক নেটওয়ার্কে কোড বসিয়েছিল। পরবর্তীতে, নেটওয়ার্ক পরীক্ষা করার জন্য কোম্পানির অভ্যন্তরীণ সিস্টেমের নিরাপত্তা দেওয়া সুরক্ষা প্রোগ্রামটি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হলে এটি কোম্পানির ‘ইন্ট্রানেটে’র ক্ষতি করে।
এ কোম্পানির কর্মীরা নিজেদের ব্যক্তিগত ও অফিশিয়াল ইমেইল অ্যাকাউন্টের জন্য একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেছিলেন। নিরাপত্তার এ ফাঁকটির সুবিধা নিয়েই হ্যাকাররা কোম্পানির নেটওয়ার্কে অনুপ্রবেশ করে গোপন প্রযুক্তিগত তথ্য বের করে আনে।
তবে, পুলিশ আক্রমণের শিকার হওয়া কোম্পানিগুলোর নাম প্রকাশ করেনি বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শত কোটি ডলার মূল্যের যান্ত্রিক ‘হাউইটজার’ ( বড় কামানের মতো এক ধরনের অস্ত্র), ট্যাংক ও ‘ফাইটার জেট’ বিক্রির চুক্তি স্বাক্ষর করে, বিশ্বের অন্যতম প্রধান প্রতিরক্ষা সামগ্রী রপ্তানিকারক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
এর আগেও দক্ষিণ কোরিয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠান, নিউজ আউটলেট, বিদেশী প্রতিরক্ষা কোম্পানির সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করেছে উত্তর কোরিয়া। ২০১৪ সালে নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তির অপারেটরে প্রবেশ করে দেশটি।
এ ছাড়া, বড় ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরির সঙ্গেও উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের সংশ্লিষ্টতার কথা এর আগে একাধিকবার উঠে আসার কথা উল্লেখ করেছে রয়টার্স। হ্যাকিং থেকে প্রাপ্ত তহবিল দেশটি অস্ত্র খাতে ব্যয় করে বলে ধারণা করা হয়।
তবে, উত্তর কোরিয়া এ হ্যাকিং কার্যক্রম বা ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে।