ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুষ্ঠিত নিজেদের বার্ষিক আই/ও ডেভেলপার কনফারেন্সে টেক জায়ান্টটি দেখিয়েছে, কীভাবে সার্চ থেকে জিমেইল পর্যন্ত গুগলের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একীভূত হচ্ছে এআই।
Published : 15 May 2024, 05:06 PM
গোটা বিশ্বের বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতার মধ্যেই নিজেদের ‘আই/ও’ ইভেন্টে ‘ভবিষ্যতের এআই’ দেখানোর পাশাপাশি বেশ কিছু নতুন এআই পণ্যের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি গুগল।
মঙ্গলবার ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুষ্ঠিত নিজেদের বার্ষিক আই/ও ডেভেলপার কনফারেন্সে টেক জায়ান্টটি দেখিয়েছে, কীভাবে সার্চ থেকে জিমেইল পর্যন্ত গুগলের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একীভূত হচ্ছে এআই।
গুগলের দাবি, তাদের প্রকাশ করা নতুন ‘প্রজেক্ট অ্যাস্ট্রা’ নামের প্রকল্পটি এআই সহায়ক ব্যবস্থার ভবিষ্যত।
গুগলের এআই কোম্পানি ডিপমাইন্ড-এর প্রধান ডেমিস হাসাবিস বলেছেন, নতুন চ্যাটবট নিজের স্মৃতি ব্যবহার করে প্রসঙ্গ বুঝতে ও পদক্ষেপ নিতে পারবে, যেখানে সাবলীল কথোপকথনের জন্য এআই আরও ‘সক্রিয়, শিক্ষণীয় ও ব্যক্তিত্বপূর্ণ’ হবে।
“আর যে কোনো কথোপকথনমূলক কাজে প্রতিক্রিয়ার সময় কমিয়ে আনা প্রকৌশলগতভাবে বড় চ্যালেঞ্জ।”
“ব্যবহারকারীরা যে প্রেক্ষাপটে রয়েছে তা আরও ভালভাবে বুঝতে ও কথোপকথনে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে পারবে, যার ফলে মিথস্ক্রিয়াটির গতি এবং গুণমান আরও স্বাভাবিক মনে হয়।”
এ ইভেন্টে বিভিন্ন প্রযুক্তির প্রদর্শন চলাকালীন গুগল সংক্ষিপ্তভাবে একজোড়া এআই-চালিত অগমেন্টেড রিয়েলিটির (এআর) চশমাও দেখিয়েছে, তবে এর বিস্তারিত কোনো বিবরণ দেয়নি।
গুগল ছবি, মিউজিক ও ভিডিওর জন্য নতুন জেনারেটিভ এআই পণ্যও উন্মোচন করেছে, যেটি সাধারণত টেক্সট নির্দেশনা থেকে কনটেন্ট তৈরি করতে পারে।
গুগল বলেছে, এসব ঘোষণা হল তাদের ‘জেমিনাই যুগে’র অংশ। এর মাধ্যমে ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যাবে বলে আশা করছে টেক জায়ান্ট কোম্পানিটি।
‘জেমিনাই এআই’ একটি মাল্টিমোডাল, যার অর্থ এটি টেক্সট, ছবি ও অডিও ইনপুট বুঝতে পারে এবং এটি সোমবার উন্মোচিত হওয়া ওপেনএআইয়ের সর্বশেষ ‘জিপিটি৪ও’ মডেলের মতোই।
গুগলের সিইও সুন্দার পিচাই বলেন, “আমরা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এআইতে বিনিয়োগ করে চলেছি। তবুও, আমরা এআইয়ের একেবারে প্রাথমিক পযায়ে আছি। এআই নিয়ে সামনে অনেক সুযোগ দেখতে পাচ্ছি আমরা, বিশেষ করে নির্মাতা, ডেভলপার, স্টার্টআপ থেকে শুরু করে সবার জন্য।”
এ আয়োজনটি এমন সময় আয়োজিত হলো যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে অর্থনীতি ও কর্মশক্তিকে ব্যাঘাত ঘাটাতে পারে সে সম্পর্কে সবাই শঙ্কিত, যেখানে বৃহত্তর উৎপাদনশীলতা ও বৈষম্য উভয়ের দিকে পরিচালিত করবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা সোমবার বলেছেন, শ্রমবাজারে ‘সুনামির মতো’ আঘাত করবে এআই।
আগামী দুই বছরে উন্নত অর্থনীতির ৬০ শতাংশ চাকরিকে এআই প্রভাবিত করতে পারে যোগ করে তিনি বলেন, “আর এর জন্য লোকেদের প্রস্তুত করতে আমাদের কাছে খুব কম সময় আছে, তবে বিভিন্ন ব্যবসা এর জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
“এআইকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারলে তা উৎপাদনশীলতায় প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি আনতে পারে। একই সঙ্গে এআই আমাদের সমাজকে আরও ভুল তথ্য দিতে ও বৈষম্যের দিকে নিয়ে যেতে পারে।”