সেল ফোন নেটওয়ার্ক এবং ওয়াইফাই কভারেজ না থাকলেও স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মানুষরা নিজেদের পরিবার ও বন্ধুদের মেসেজ পাঠাতে পারেন এ ফিচারের মাধ্যমে।
Published : 09 Oct 2024, 06:16 PM
বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে আইফোনের নতুন স্যাটেলাইট মেসেজিং ফিচার।
সাম্প্রতিক অ্যাপলের নতুন অপারেটিং সিস্টেম আপডেটে ফিচারটি লাখ লাখ আইফোন ব্যবহারকারীর ডিভাইসে যুক্ত হয়েছে। হারিকেন হেলেনে আক্রান্ত অনেক আমেরিকান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন, ফিচারটি সঠিক সময়েই এসেছে।
“আইফোন ব্যবহারকারী হিসাবে এর চেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ আগে কখনও হইনি। সেলুলার নেটওয়ার্ক পরিষেবার অভাবে নর্থ ক্যারোলাইনার অ্যাশভিল এলাকার প্রত্যেকে এই মুহূর্তে আইওএস ১৮-এর স্যাটেলাইট মেসেজিং ফিচারের মাধ্যমে মেসেজ আদান প্রদান করছে।” – সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের এক পোস্টে বলেছেন মার্কিন অঙ্গরাজ্যটির একজন ফটোগ্রাফার ম্যাট ভ্যান সোল। পোস্টটি অন্তত ৯০ লাখ ভিউ পেয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
“এটি আক্ষরিক অর্থেই জীবন বাঁচাচ্ছে।”
I’ve never been more thankful to be an iPhone user.
Due to the lack of cell service, EVERYONE in Asheville NC right now on iOS 18 has been able to get messages out and in with the Satellite messaging feature.
This is literally saving lives @Apple. pic.twitter.com/k0FOIgKlRk
— Matt Van Swol (@matt_vanswol) September 30, 2024
“হ্যাঁ। গাছ ও বিদ্যুতের লাইনে বাইরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হওয়ায়, বের হতে না পেরে আমি পরিবারকে মেসেজ পাঠাতে পেরেছিলাম।” – ওই পোস্টের কমেন্টে বলেছেন ব্যবহারকারী ‘থিমোতিজ’।
সেল ফোন নেটওয়ার্ক এবং ওয়াইফাই নাগালে না থাকায় স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মানুষজন নিজেদের পরিবার ও বন্ধুদের মেসেজ পাঠাতে পারেন এ ফিচারের মাধ্যমে। আইফোন ১৪ এবং এর পরবর্তী মডেলগুলোর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা’র ব্যবহারকারীদের মধ্যে যারা আইওএস ১৮ ব্যবহার করছেন, তারা এ ফিচারের সুবিধা পাচ্ছেন। আইফোন ১৪ বা এর পরের নতুন মডেলের ফোন চালু করার দুই বছর পর্যন্ত ফিচারটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছে অ্যাপল।
ফিচারটি তখনই কাজ করবে যখন আইফোন ব্যবহারকারীরা বাড়ির বাইরে থাকবেন এবং আকাশ পরিষ্কার থাকবে।
“ফোনে নেটওয়ার্ক না থাকলে, নিকটবর্তী স্যাটেলাইটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যে মেসেজ পাঠানো সম্ভব, সেটি তখনই জানাতে শুরু করবে।” – বলেছে এ প্রযুক্তি জায়ান্ট।
স্যাটেলাইটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর, আইফোন ব্যবহারকারীরা এ ফিচারের মাধ্যমে ‘ইমার্জেন্সি এসওএস’ ব্যবহার করে জরুরি পরিষেবায় মেসেজ পাঠানোর অপশনও পাবেন, গাড়িতে সমস্যা হলে ‘রোড সাইড অ্যাসিস্ট্যান্স’ পাবেন। পাশাপাশি, যেসব স্থানে এ পরিষেবা ব্যবহার করা যাবে সেখানে ‘ফাইন্ড মাই’ ডিভাইস ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা তাদের অবস্থানও শেয়ার করতে পারবেন।
ফিচারটি ব্যবহারের সময় স্ক্রিনের ওপরে একটি বাক্স স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের অবস্থা দেখায়, সেখানে তীর চিহ্ন ব্যবহারকারীকে বাম বা ডান দিকে ঘুরতে বলে। বাক্সে চাপলে বাড়তি সাহায্যের জন্য একটি ‘কানেকশন অ্যাসিস্ট্যান্ট’ চালু হবে।
স্যাটেলাইট পরিষেবা ব্যবহারের আগের সব এসএমএস ব্যবহারকারীরা পেয়ে গেলেও, কোনো মেসেজ তারা পাবেন না যতক্ষণ না অন্য প্রান্তে থাকা ব্যবহারকারী মেসেজ বাবল থেকে ‘সেন্ড ভিয়া স্যাটেলাইট’ অপশনটি বেছে নেবেন।
খোলা আকাশের নীচে ভালো অবস্থানে থাকলে মেসেজ পাঠাতে ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এ ছাড়া, হালকা বা মাঝারি পাতার গাছের নিচেও বাড়তি সময় লাগতে পারে। অনেক পাতাওয়ালা গাছ বা অন্যান্য বস্তু সংযোগে পুরোপুরি বাধা দিতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
ফটো, ভিডিও, অডিও, স্টিকার বা গ্রুপ চ্যাটের বেলায় স্যাটেলাইট মেসেজ ফিচারটি কাজ করবে না।
মেসেজ পাঠানো ব্যক্তির কাছে যদি আপডেটেড আইফোন না থাকে বা অন্য ডিভাইস থাকে, তাহলেও স্যাটেলাইট এসএমএস মেসেজিং ব্যবহার করে তাদের মেসেজ করা যাবে।
তবে, জরুরী পরিস্থিতিতে এটি ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে অ্যাপল।
“ওয়াইফাই ও সেলুলার ইন্টারনেট নেই এমন জায়গায় কেউ জরুরী পরিস্থিতিতে পড়ে থাকলে, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কেবল ইমার্জেন্সি এসওএস ব্যবহার করে জরুরী পরিষেবাগুলোকে টেক্সট করা উচিত।” – বলেছে অ্যাপল।