“টেসলা, স্টারলিংক ও টুইটার মিলিয়ে আমার এক মাথায় ইতিহাসের যে কারো চেয়ে বেশি রিয়েল-টাইম গ্লোবাল ইকোনমিক ডেটা থাকতে পারে।”
Published : 08 Sep 2024, 01:03 PM
এই সপ্তাহে সাত হাজারতম স্টারলিংক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে স্পেসিএক্স। এর মাধ্যমে পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা সক্রিয় স্যাটেলাইটগুওলোর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের ওপর নিয়ন্ত্রণের দাবি করলেন কোম্পানির প্রধান ইলন মাস্ক।
সর্বশেষ স্যাটেলাইটটি ছিল মাস্কের মহাকাশযান নির্মাণ কোম্পানি স্পেসএক্স-এর তৈরি ও পরিচালিত। প্রথমবারের মতো মহাকাশে স্টারলিংক ইন্টারনেট স্যাটেলাইট উৎক্ষেপিত হয় ২০১৯ সালে।
এরপর থেকে প্রতিদিন কক্ষপথে কোম্পানিটির গড়ে তিনটি করে স্যাটেলাইট যোগ হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
অলাভজনক স্যাটেলাইট ট্র্যাকার ‘সেলসট্র্যাক’-এর সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ছয় হাজার তিনশ ৭৭টি সক্রিয় স্টারলিংক স্যাটেলাইটের পাশাপাশি আরও কয়েকশ নিষ্ক্রিয় বা ডিঅরবিট স্যাটেলাইট রয়েছে স্পেসএক্সের।
এই পরিসংখ্যান কেবল তিন বছরে ছয়গুণেরও বেশি বেড়েছে, যেখানে সব ধরনের অপারেশনাল স্যাটেলাইটের ৬২ শতাংশেরও বেশি দখলে রয়েছে স্টারলিংকের। যা স্টারলিংকের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্টার্টআপ ‘ওয়ানওয়েব’-এর সংখ্যার প্রায় দশ গুণ।
ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে ২০২২ সালে রাশিয়ার মহাকাশযান কোম্পানি ‘সয়ুজ’-এর সঙ্গে উৎক্ষেপনের প্রোগ্রাম বাতিল হওয়ার পর মহাকাশে নিজেদের তৈরি টুল সরবরাহের জন্য স্পেসএক্স রকেটের উপর নির্ভর করতে বাধ্য হয় ফরাসি স্যাটেলাইট জায়ান্ট ‘ইউটেলস্যাট’-এর সহযোগী স্টার্টআপ ‘ওয়ানওয়েব’।
স্টারলিংক কন্সটেলেশন সম্পূর্ণ করতে ৪২ হাজার স্যাটেলাইট চালু করার পরিকল্পনা করেছে স্পেসএক্স, যা বিশ্বের যে কোনও কোণে উচ্চ-গতির ইন্টারনেট ও ফোনে সংযোগ সরবরাহ করতে সক্ষম।
বর্তমানে ১০২টি দেশে কাজ করে স্টারলিংক এবং তিনশ ডলারের গ্রাউন্ড-ভিত্তিক ডিশের মাধ্যমে স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কে প্রবেশ করার জন্য মাসিক ফি দেয় এমন ত্রিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক রয়েছে কোম্পানিটির।
বিশ্বের আরও কয়েক ডজন দেশে নিজেদের পরিষেবা চালুর আশা করছে কোম্পানিটি। কেবল আফগানিস্তান, চীন, ইরান, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া ও সিরিয়ার মতো দেশে ইন্টারনেট বিধিনিষেধ বা বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব দেশ স্টারলিংকের বর্তমান অপেক্ষমাণ তালিকায় নেই।
“এখন সব ধরনের সক্রিয় স্যাটেলাইটের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করে স্টারলিংক,” স্পেসএক্সের সর্বশেষ উৎক্ষেপণের পর নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এমনটাই লিখেছেন মাস্ক।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ ক্যানাভেরাল থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে করে আরও ২১টি স্টারলিংক স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছে স্পেসএক্স।
এদিকে স্পেসএক্সের এ আধিপত্য, স্পেসএক্স ও স্টারলিংক নেটওয়ার্কের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির হাতে কতোটা ক্ষমতা এসেছে তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
“টেসলা, স্টারলিংক ও টুইটার মিলিয়ে আমার এক মাথায় ইতিহাসের যে কারো চেয়ে বেশি রিয়েল-টাইম গ্লোবাল ইকোনমিক ডেটা থাকতে পারে,” ২০২৩ সালের এপ্রিলে এক টুইট বার্তায় লিখেছিলেন মার্কিন এই ধনকুবের।