স্পাইওয়্যারটি কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিআইএস সরকারের বিভিন্ন জ্যেষ্ঠ নেতা। তবে, তারা রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে এটি ব্যবহারের অভিযোগটি নাকচ করেন।
Published : 05 Mar 2023, 02:35 PM
কুখ্যাত পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে পোলান্ডের এক মেয়রের ফোন হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। আক্রান্ত মেয়র দেশটির সরকারবিরোধীদের ঘনিষ্ট।
পোলিশ সরকারের বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে এই স্পাইওয়্যার ব্যবহার নিয়ে চলমান অভিযোগের মধ্যেই শুক্রবার এই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশটির সংবাদপত্র ‘গাজেটা ওয়াইবর্কজা’।
রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, ইসরাইলভিত্তিক ‘এনএসও’ গ্রুপের তৈরি এই সফটওয়্যার দেশটির শীর্ষ বিরোধী দলের সিনেটর’সহ সরকারের সমালোচকদের ফোন হ্যাকিংয়ের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে। এর পরপরই অভিযোগ ওঠে, দেশটির বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির তোয়াক্কা করছে না।
পোল্যান্ডের ক্ষমতাসীন জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল ‘ল অ্যান্ড জাস্টিস (পিআইএস)’-এর কট্টর সমালোচক ওই পত্রিকাটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০১৮-২০১৯ সালে বাল্টিক সমুদ্রতীরবর্তী পর্যটন শহর সোপাটের মেয়র জ্যাসেক কার্নোস্কি’র ফোন হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েছিল। সে সময় তিনি দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিরোধী দলের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার ফোন নাম্বার সংবাদপত্রটির প্রবেশাধিকার পাওয়া এমন এক তালিকায় পাওয়া গেছে, যা পেগাসাস প্রকল্প নিয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার অংশ।
“আমরা পিআইএস’কে গণতন্ত্রকে আরও ধ্বংস করতে, পোল্যান্ডকে পূর্বের দিকে নিয়ে যেতে ও আমাদের দেশকে ‘সোভিয়েতাইজ’ করতে দেব না।” --রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন কার্নোস্কি।
“যেসব রাজনীতিবিদ এই ধরনের কার্যক্রমে অনুপ্রেরণা দেয় ও পরিচালনা করে, তাদের কারাগারে পাঠানো উচিৎ।”
পোলিশ সরকারের মুখপাত্র পিওতর মুলার দেশটির বেসরকারী সংবাদমাধ্যম ‘আরএমএফ এফএম’কে বলেন, বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশটির বিশেষ পরিষেবার এমন পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি না জানলেও, এতে কোনো আইন ভঙ্গ হয়নি।
“এমন কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি, যা দেশটির বৈধ নীতিমালা ভঙ্গ করবে।” --বলেন তিনি।
“আমি পরিষেবার কাছ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি।”
এই প্রসঙ্গে রয়টার্স ‘পোলিশ সিকিউরিটি সার্ভিসেস’-এর এক মুখপাত্রের মন্তব্য জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া মেলেনি।
এর আগে স্পাইওয়্যারটি কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিআইএস সরকারের বিভিন্ন জ্যেষ্ঠ নেতা। তবে, তারা রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে এটি ব্যবহারের অভিযোগটি নাকচ করেন।
বিভিন্ন মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তির জন্য কিছু সংখ্যক বিদেশী ক্রেতা সরকার পেগাসাসের অপব্যবহার করেছে, এমন অভিযোগে ইসরাইল বিশ্বব্যাপী চাপের মুখে পড়েছে।
এনএসও বলেছে, তারা পেগাসাসের বিভিন্ন বিদ্যমান বা সম্ভাব্য গ্রাহকের বিষয়টি নিশ্চিত বা অস্বীকার করতে পারছে না। তাদের ভাষ্যমতে, একবার কোনো সরকার ভিত্তিক গ্রাহকের কাছে এটি বিক্রির পর তারা এটি আর পরিচালনা করে না বা এর সিস্টেমের কার্যক্রমের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা থাকে না।