২০২১ সালে পাওয়া এই জীবাশ্ম ডিমই এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে ছোট ডাইনোসরের ডিম বলে নিশ্চিত করেছেন চীনের বিজ্ঞানীদের একটি দল।
Published : 23 Oct 2024, 05:34 PM
প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে বিলুপ্তি ঘটেছে ডাইনোসরের। তবে এখনও নিজেদের উপস্থিতির জানান দিয়ে চলেছে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এই প্রাণীরা। এবার সবচেয়ে ছোট আকৃতির ডাইনোসরের ডিম চীনে খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা।
২০২১ সালে পাওয়া এই জীবাশ্ম ডিমই এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে ছোট আকারের ডাইনোসর প্রজাতির ডিম বলে নিশ্চিত করেছেন চীনের বিজ্ঞানীদের একটি দল।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘হিস্ট্রিকাল বায়োলজি’তে, যেখানে এসব ডিম কোথায় পাওয়া গেছে ও কীভাবে তারা এসব ডিম নিয়ে গবেষণা করেছেন ও এর থেকে কী শেখার আছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছে জীবাশ্মবিদ ও বিবর্তন বিশেষজ্ঞদের দলটি।
এ ডিমের সন্ধান পাওয়ার আগে সবচেয়ে ছোট ডাইনোসরের ডিমের দৈর্ঘ্য ৪৫.৫ মিলিমিটার ছিল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।
নতুন পাওয়া ডিমটি আগে পাওয়া ডিমের চেয়েও ছোট, মাত্রই ২৯ মিলিমিটার দীর্ঘ এবং খুঁজে পাওয়া ছয়টি ডিমের মধ্যে এই ডাইনোসরের ডিমটিই ছিল সম্পূর্ণ।
ডাইনোসরের এসব ডিম পাওয়া গেছে দক্ষিণ-পূর্ব চীনের শহর গঞ্জোউয়ের কাছে এক নির্মাণ সাইটে, যে এলাকাটি ডাইনোসরের ডিম খোঁজার জন্য বিশ্বের অন্যতম সেরা স্থান হিসেবে পরিচিত।
ছয়টি ডিম একসঙ্গে এক স্থানে ঠিকভাবেই জীবাশ্ম অবস্থায় ছিল এবং তিন বছর ধরে খুব সাবধানতার সঙ্গে এগুলো নিয়ে গবেষণা করেছে গবেষণা দলটি।
ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের মতো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা শনাক্ত করেছেন, এসব ডিম এক ধরনের নন-এভিয়ান বা পাখির সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন কোনো থেরোপড ডাইনোসরের।
থেরোপড ছিল মাংসাশী ডাইনোসর, যেগুলো সুপরিচিত ডাইনোসর প্রজাতি টি-রেক্সের মতো দুই পায়ে হাঁটত। তবে ডাইনোসরে এক অজানা প্রজাতির অন্তর্গত এসব ডিম। গবেষকরা এসব ডিমের নাম দিয়েছেন ‘মিনিওলিথাস গানজুয়েনসিস’।
বিজ্ঞানীদের অনুমান, এসব ডিম প্রায় আট কোটি বছর আগের ক্রিটেসিয়াস যুগের শেষের দিকের ডাইনোসর প্রজাতির, ওই সময়ে ডাইনোসররা ঘুরে বেড়াত পৃথিবীতে।
এসব জীবাশ্ম ডিমের কোনও ক্ষতি না করে ডিমের খোসা ও ভেতরে থাকা ভ্রূণের বিস্তারিত ছবি তৈরিতে ‘ইলেকট্রন ব্যাকস্ক্যাটার ডিফ্রাকশন বা ইবিএসডি’ নামের এক বিশেষ কৌশল ব্যবহার করেছেন গবেষকরা।
ইবিএসডি হচ্ছে এক ধরনের ‘স্ক্যানিং ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপি বা এসইএম’ পদ্ধতি, যা ব্যবহৃত হয় পদার্থের স্ফটিক গ্রাফিক কাঠামো গবেষণা করতে।
ডিমগুলো নিয়ে আরও গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন গবেষকরা। ডিম খুঁজে পাওয়ার স্থানটি ভালভাবে সংরক্ষিত রয়েছে কারণ, ডাইনোসররা ওই সময় কীভাবে বাস করত সে সম্পর্কে নতুন তথ্য দেবে এ স্থানটি।
এই রোমাঞ্চকর আবিষ্কার ডাইনোসরের প্রাচীন জগৎ ও কীভাবে এরা নিজেদের সন্তানদের যত্ন নিত তা বোঝার নতুন সুযোগ করে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের।