জরিপটি এমন এক সময় এল, যখন চীনা মালিকানাধীন শর্ট-ভিডিও অ্যাপটিকে নিষিদ্ধ করার দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র।
Published : 02 May 2024, 07:35 PM
বেশিরভাগ আমেরিকান টিকটককে চীনা প্রভাবিত হাতিয়ার হিসেবে দেখে থাকেন, এমনই উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক জরিপে।
রয়টার্সের পরিচালিত এ জরিপ অনুসারে, বেশিরভাগ আমেরিকান বিশ্বাস করেন, যুক্তরাষ্ট্রে জনমত গঠনের উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটিকে ব্যবহার করে থাকে চীন।
জরিপটি এমন এক সময় এল, যখন চীনা মালিকানাধীন শর্ট-ভিডিও অ্যাপটিকে নিষিদ্ধ করার দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার শেষ হওয়া দুই দিনব্যাপী মতামত জরিপে উত্তরদাতাদের প্রায় ৫৮ শতাংশ মত দিয়েছেন, ‘আমেরিকান জনমতকে প্রভাবিত করতে’ বাইটড্যান্স মালিকানাধীন টিকটক অ্যাপটিকে ব্যবহার করে চীনা সরকার।
জরিপে ১৩ শতাংশ উত্তরদাতা অসম্মতিও প্রকাশ করেছেন। আর বাকিরা অনিশ্চিত বা প্রশ্নের জবাব দেননি। তবে, চীন যে মার্কিন মতামত প্রভাবিত করতে অ্যাপটি ব্যবহার করছে, এমন ধারণা ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের তুলনায় রিপাবলিকান সমর্থকদের বেশি বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
টিকটক বলছে, তারা ডেটা সুরক্ষা প্রচেষ্টায় দেড়শ কোটি ডলারের বেশি খরচ করেছে। পাশাপাশি, চীনে সরকারের সঙ্গে ১৭ কোটি মার্কিন ব্যবহারকারীর ডেটা শেয়ার করবে না।
গত বছর টিকটক মার্কিন কংগ্রেসকে বলেছিল, তারা ‘চীনা সরকারের অনুরোধে কনটেন্টের প্রচার বা অপসারণ করে না।’
এ প্রসঙ্গে রয়টার্স টিকটকের মন্তব্য জানতে চাইলেও তাৎক্ষণিক সাড়া মেলেনি।
এদিকে, গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নতুন এক আইনে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে ২৭০ দিনের মধ্যে টিকটকের যুক্তরাষ্ট্র অংশের ব্যবসা বাইটড্যান্স বিক্রি না করলে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে অ্যাপটি।
রয়টার্সের জরিপে অংশ নেওয়া অর্ধেক আমেরিকানই টিকটক নিষিদ্ধ করার পক্ষে রায় দিয়েছেন, যেখানে ৩২ শতাংশ উত্তরদাতা এর বিরোধিতা করেছেন। আর বাকিরা এ বিষয়ে অনিশ্চিত।
এ জরিপে অংশ নিয়েছেন শুধু প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন নাগরিকরা। তাই এতে ১৮ বছরের কম বয়সীদের মতামতের কোনো প্রতিফলন নেই। আর, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীদের বড় অংশ ১৮ বছরের কম বয়সী।
এই জরিপে ৪০ বছর বা এর বেশি বয়সী উত্তরদাতাদের মধ্যে ১০ জনের মধ্যে ছয় জনই এ নিষেধাজ্ঞার পক্ষে, সে তুলনায় ১৮-৩৯ বছর বয়সীদের মধ্যে চারজন ছিলেন নিষেধাজ্ঞার পক্ষে।
এমনকি জরিপে দেখা গেছে, ৪৬ শতাংশ আমেরিকান এমন এক বক্তব্যে একমত যে, চীন ‘প্রতিদিন আমেরিকায় গুপ্তচরবৃত্তির’ জন্য টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করছে। তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে বেইজিং।
৬০ শতাংশ আমেরিকান বলছেন, মার্কিন রাজনৈতিক প্রার্থীদের প্রচারণার জন্য টিকটক একেবারে অনুপযুক্ত।
বাইডেনের স্বাক্ষরের ফলে অ্যাপটি বিক্রির জন্য আগামী বছরের ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় পাবে কোম্পানি। তবে, তার বিবেচনায় বাইটড্যান্স এ বিষয়ে অগ্রগতি দেখালে, তিনি এ সময়সীমা আরও তিন মাস বাড়াতে পারেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।