কম্পিউটিং প্রযুক্তির অগ্রগতি যে হারে হচ্ছে তাতে হয়ত খুব শিগগিরই সাধারণ মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে যাবে রোবটের কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা। বুদ্ধিমত্তায় এগিয়ে গেলেও রোবটগুলোর মানবিক মূল্যবোধের অভাব সাধারণ মানুষের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশংকা করছেন শীর্ষ বিজ্ঞানীরা।
Published : 24 Aug 2014, 07:15 PM
এখনও নির্মাতাদের বেঁধে দেওয়া নিয়মের মধ্যেই কাজ করে রোবটগুলো। আর একজন মানুষ প্রতিদিনই নতুন নতুন কিছু শেখে। সহজাত প্রবৃত্তি, অনুভূতি আর অভিজ্ঞতার উপর ভর করে গড়ে উঠে একজন মানুষের মূল্যবোধ।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে একটা সময় হয়ত সাধারণ মানুষকেও ছাড়িয়ে যাবে যান্ত্রিক রোবট। তবে মূল্যবোধের গঠনটা কীভাবে হবে এই রোবটগুলোর মধ্যে? রোবটের মধ্যে মূল্যবোধের সৃষ্টি হলেও সেটা কী আমাদের জন্য ইতিবাচক কিছু হবে, নাকি আমাদের জীবনের ঝুঁকি কয়েক গুণ বাড়াবে, বিজ্ঞানীরা এই প্রশ্নগুলো নিয়েই শংকিত।
ভবিষ্যতের রোবট আর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ঝুঁকি নিয়ে সরব বিশ্বের শীর্ষ বিজ্ঞানীদের অনেকেই। এদের মধ্যে আছেন খোদ স্টিফেন হকিং। 'সুপার কার' নির্মাতা টেসলার সিইও ইলন মাস্ক তো এ বিষয়টির উপর নজর রাখার জন্যেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে গবেষণায় বিনিয়োগের দাবি করে আসছেন।
সর্বশেষ সুইডেনের মালমোতে আয়োজিত এক কনফারেন্সে এই ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করেছেন বডি-স্ক্যানিং প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা পোইকোস সিইও নেল ওয়াটসন।
“আমাদের জীবদ্দশায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন যন্ত্রগুলো যেন মানবিক মূল্যবোধ বুঝতে পারে সেটা নিশ্চিত করা। যন্ত্রগুলোই যেন আমাদের ধ্বংসের কারণ হয়ে না দাঁড়ায় সেটাই নিশ্চিত করবে ওই মূল্যবোধগুলো।” বলেন ওয়াটসন।
রোবটকে মানবিক মূল্যবোধ শেখাবে এমন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা কি আদৌও তৈরি করতে পারবেন? ইঞ্জিনিয়াররা পারলেও সেটা কতটা কার্যকর হবে, রোবটগুলো নিজেরাই হয়ত সেই প্রোগ্রাম ওভাররাইড করা শিখে নেবে, এমন ইস্যুগুলো নিয়েই ওয়াটসন শংকিত বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট।
২০২৫ সালের মধ্যে রোবট মানুষের ‘ভালোবাসার সঙ্গী’ হতে পারবে এমন ভবিষ্যদবাণী করেছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। তবে প্রশ্ন থেকে যায়, তাদেরও কি বিশ্বাস করা যাবে? ভালোবাসা প্রকাশে রোবটও কী দেবে ‘উড়ন্ত চুম্বন’ নাকি হাসিমুখে সঙ্গীর গলা চেপে ধরবে!