নিজ ফেইসবুক পেইজে অস্ট্রেলীয়দের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। দেশটির হাই কোর্টের এক রায়ের প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
Published : 29 Sep 2021, 03:39 PM
অস্ট্রেলিয়ার হাই কোর্ট এ মাসে এক রায়ে জানিয়েছে, মন্তব্য অংশে মানহানিকর মন্তব্য এলে তার দায় বর্তাবে প্রকাশকের উপরেও - এমনকি সংবাদ মানহানিকর না হলেও।
সিএনএন প্রথমে অস্ট্রেলিয়ার জন্য নিজেদের কমেন্ট সেকশন বন্ধ করে দিতে অনুরোধ করেছিল ফেইসবুককে। কিন্তু সামাজিক মাধ্যম প্রতিষ্ঠানটি সে অনুরোধে রাজি হয়নি বলেই উঠে এসেছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে। পরে নিজেদের উপস্থিতিরই ইতি টেনেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সম্মুখ সারির গণমাধ্যমের মধ্যে এটিঅ্যান্ডটি মালিকানাধীন সিএনএনই প্রথম অস্ট্রেলিয়া থেকে নিজেদের ফেইসবুক উপস্থিতি সরিয়ে নিল।
বুধবার সিএনএনের মূল পেইজে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রবেশ করা যায়নি। সে সময় ‘এরর মেসেজ’ দেখিয়েছে ফেইসবুক।
মানহানি মামলা নিয়ে কাজ করা আইনি প্রতিষ্ঠান মার্ক লয়ারসের ব্যবস্থাপনা অংশীদার মাইকেল ব্র্যাডলি ঘটনাটিকে “পড়ে যাওয়া প্রথম ডমিনো” হিসেবে দেখছেন। তার ভাষ্যে, “অন্যরা নিশ্চিতভাবেই অনুসরণ করবে… বিশেষ করে মিডিয়া স্বত্ত্বা যারা অস্ট্রেলিয়ার ফেইসবুক অডিয়েন্স ছাড়াও বহাল তবিয়তে টিকে থাকতে পারবে।”
“আমরা ফেইসবুকের উপর ফের হতাশ হলাম, তারা প্ল্যাটফর্মে নির্ভরযোগ্য সাংবাদিকতা এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে চলতি পরিস্থিতি নিয়ে সফল সংলাপ তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে।” – বিবৃতিতে বলেছেন সিএনএন মুখপাত্র।
অন্যদিকে, ফেইসবুকের এক মুখপাত্র বলেছেন, অস্ট্রেলীয় মানহানি আইনের যে সংশোধন প্রয়োজন তা উঠে আদালতের সাম্প্রতিক রায়ে। “যেহেতু আমরা সিএনএনকে আইনি পরামর্শ দেওয়ার অবস্থানে নেই, তাই প্রকাশকদের মন্তব্য ব্যবস্থাপনার জন্য যে টুলগুলো রয়েছে সেগুলোর সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্যগুলো দিয়েছি আমরা।”
ফেইসবুক বলছে, প্রকাশক ও অন্যান্য ব্যবহারকারীদের জন্য তাদের একাধিক ফিচার রয়েছে। সেগুলোর মাধ্যমে কারা পোস্টে করতে পারবেন, তা সীমিত করে দেওয়া যায়। তবে, সংবাদমাধ্যমটি কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলো সে ব্যাপারে ফেইসবুক ও সিএনএন কেউই বিস্তারিত কিছু বলেনি।
অস্ট্রেলিয়ায় সংবাদ পরিবেশনে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে থাকে সামাজিক মাধ্যম। শিল্প তথ্য অনুসারে, দেশটির আড়াই কোটি জনগোষ্ঠীর দুই-তৃতীয়াংশই ফেইসবুক ব্যবহার করেন। এ ছাড়াও ২০২১ এ জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ফেইসবুককে সংবাদের উৎস হিসেবে বিবেচনা করে। - বলছে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যানবেরার এক প্রতিবেদন।
কিন্তু প্রায়শই মানহানি মামলা, অঙ্গরাজ্য ও ফেডারেল সরকারের রিভিউ ইত্যাদি বিষয়াদি যে প্রশ্নটি তুলে ধরছে, তা হলো – আদৌ কী ইন্টারনেট যুগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ দেশটির বিদ্যমান আইন?
“সিএনএনের মতো বিদেশী আউটলেটের চলে যাওয়ার বিষয়টি একটি উদ্বেগ তুলে ধরছে যে অস্ট্রেলিয়ার আইন প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলায়নি।” – বলেছেন অস্ট্রেলিয়ায় প্রখ্যাত মানহানি বিষয়ক আইনজীবি ম্যাট কলিন্স।