গুগল জিমেইল সেবা চালু করেছিলো ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল। প্রায় দুই দশক পরে এসে ইন্টারেনেট জগতে উপস্থিতি আছে কিন্তু জিমেইল ব্যবহার করেন না এমন ব্যবহারকারী খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। ১৭ বছরে নিজস্ব মেইলিং সেবায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নতুন ফিচার যোগ করেছে গুগল। তবে এর একটা বড় অংশই হয়তো এড়িয়ে গেছে ব্যবহারকারীর চোখ।
Published : 15 Aug 2021, 06:20 PM
২০১৯ সালের অক্টোবর মাসের হিসেব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী জিমেইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৫০ কোটির বেশি। দৈনন্দিন জীবন সহজ করতে পারে, কিন্তু ব্যবহারকারীর নজর এড়িয়ে গেছে, জিমেইলের এমন ফিচারগুলোর নিয়ে তালিকা প্রকাশ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট গিজমোডো।
১. শেডিউল সেন্ড
জিমেইল সর্বশেষ যোগ হওয়া ফিচারগুলোর একটি হচ্ছে ‘শেডিউল সেন্ড’। আগেভাগেই মেইল লিখে রেখে নিজের পছন্দ মতো পাঠানোর সময় ঠিক করে রাখতে পারবেন ব্যবহারকারী। জিমেইলের ওয়েব সংস্করণ ব্যবহারের সময় সেন্ড বাটনের পাশের তীর চিহ্ন দেওয়া বক্সে ক্লিক করেই পাওয়া যাবে শেডিউল-সেন্ড ট্যাব।
প্রথমে রাইট-ক্লিকের ফিচার উল্লেখযোগ্য কিছু মনে নাই হতে পারে। কিন্তু জিমেইলের সাম্প্রতিক একটি আপডেটের পর ব্যবহারকারীরা এখন কনভার্সেশন থ্রেডে রাইট-ক্লিক করে অনেক অপশন পাবেন। ম্যাক ব্যবহারকারীদের জন্য এটি হবে কন্ট্রোল+ক্লিক। রাইট-ক্লিক করে ইমেইল এক ট্যাব থেকে অন্য ট্যাবে সরানো, নির্দিষ্ট কারো মেসেজ খোঁজা, কনভার্সেশন মিউট করা, নতুন উইন্ডোতে ইমেইল খোলা সহ নানা সুবিধা পাওয়া যাবে।
৩. এক ট্যাব থেকে অন্য ট্যাবে ইমেইল ড্র্যাগ করে নিন
ওয়েবের জিমেইল সেবায় চাইলেই বিভিন্ন ট্যাব বা ক্যাটেগরিতে ভাগ করা সম্ভব ইমেইলগুলো (যেমন: প্রাইমারি, সোশাল বা আপডেটস)। প্রয়োজনের পুরো কনভার্সেশন থ্রেড ড্র্যাগ করে সরানো যাবে এক ট্যাব থেকে অন্য ট্যাবে। এই ফিচারের আরেকটি ইতিবাচক দিক হচ্ছে, ড্র্যাগ করে কনভার্সেশন থ্রেড সরানোর সময় একই প্রেরকের পরবর্তী মেইলগুলোকেও একই ট্যাবে জমা করবে কি না, সেটা গুগলই জানতে চাইবে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে।
মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির সহযোগিতায় আপনার মেইল লিখে দিতে পারবে জিমেইলের স্মার্ট কম্পোজ ফিচার। জিমেইলের সেটিংস থেকে যেতে হবে জেনারাল ট্যাবে। সেখানে স্মার্ট কম্পোজের পাশে ‘রাইটিং সাজেশন’-এ টিক দিয়ে দিতে হবে। তারপর থেকে ব্যবহারকারীর লেখার ধরন বুঝে মেইলের পরবর্তী শব্দ ও বাক্য নিয়ে পরামর্শ দেবে জিমেইল।
৫. এক স্ক্রিনে বেশি ইমেইল
জিমেইল স্ক্রিনে মেইলগুলোর কীভাবে সাজানো থাকবে সেই বিষয়ে তিনটি অপশন পান ওয়েব সংস্করণের ব্যবহারকারীরা। স্ক্রিনের উপরে ডান পাশের সেটিংস থেকে ওই অপশনগুলো অ্যাক্সেস করা যাবে। ‘ডিফল্ট’ ঠিক করা থাকলে মেইলের সঙ্গে ফাঁকা জায়গা থাকবে অনেকটা, মেইল হেডারের নিজেই থাকে অ্যাটাচমেন্ট প্রিভিউ সুবিধা। ওই অ্যাটাচমেন্ট প্রিভিউ লুকিয়ে রাখে ‘কস্ফোর্টেবল’ অপশনটি। আর ‘কম্প্যাক্ট’ অপশন ঠিক করা থাকলে ইমেইলগুলো ব্যবহারকারীর স্ক্রিনে আসবে আরও আঁটসাঁট হয়ে।
এই মোডটিতে পাঠানো ইমেইল কে কপি করতে পারবেন বা কে ডাউনলোড করতে পারবেন, সেই বিষয়টি ঠিক করে দিতে পারবেন প্রেরক। এমনকি ‘এক্সপায়রেশন টাইম’-ও নির্দিষ্ট করে দেওয়া যাবে। মোবাইল থেকে ইমেইল লেখার সময় মেন্যু বাটন, আর ওয়েব থেকে লেখার সময় প্যাডলক চিহ্নে ক্লিক করে এই ফিচারটি অ্যাক্সেস করা যাবে।
৭. নোটিফিকেশন পান গুরুত্বের ভিত্তিতে
মোবাইল ডিভাইসে জিমেইলের একের পর এক নোটিফিকেশন যদি ব্যবহারকারীর মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় তবে সমাধান আছে তারও। প্রথমে যেতে হবে জিমেইল অ্যাপের সেটিংসে, তারপর নিজের ইমেইল অ্যাড্রেস সিলেক্ট করে যেতে হবে নোটিফিকেশন ট্যাবে। কেবল ‘হাই প্রায়োরিটি’ মেইলগুলোর জন্য নোটিফিকেশন ফিচার চালু করে রাখার সুবিধা পাবেন ব্যবহারকারী। আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েডের নিজস্ব নোটিফিকশন ফিচার থেকে আলাদাভাবে কাজ করে এই ফিচারটি।
৮. অফলাইনে জিমেইল ব্যবহার করুন
১৭ বছরের ইতিহাসে বিভিন্ন পরিবর্তন এসেছে জিমেইলের অফলাইন সেবায়। বর্তমান সংস্করণে একটি ক্রোম ট্যাব খুলে তাতে “mail.google.com” টাইপ করে ইনবক্সের একটি ‘ক্যাশ’ সংস্করণ দেখার সুযোগ আছে। তবে এর জন্য জিমেইলের ওয়েব সংস্করণের সেটিংস থেকে অফলাইন ট্যাব খুলে ফিচারটি চালু করে রাখতে হবে আগে থেকে। কতো দিনের ইমেইল সিংক করা হবে সেটাও ঠিক করে দিতে পারবেন ব্যবহারকারী।
ডিফল্ট সেটিং হিসেবে ওয়েবে জিমেইল আগের মেইলগুলোর বড় একটা তালিকা দেখায়। কিন্তু স্ক্রিনে দেখার অভিজ্ঞতা ‘ডেস্কটপ ক্লায়েন্ট’-এর মতো করতে চাইলে প্রিভিউ প্যান এনাবল করে রাখা যেতে পারে। ইন্টারফেইসের উপরের ডান দিকের সেটিংস বাটনে ক্লিক করে, তারপর রিডিং প্যান-এর নিচে প্রিভিউ প্যান সিলেক্ট করা যাবে। মেইলের ডান পাশে বা নিচে, এই দুই জায়াগায় প্রিভিউ প্যান দেখতে পাবেন ব্যবহারকারী।
১০. অ্যাটাচমেন্ট সেইভ করুন গুগল ড্রাইভে
মেইলের সঙ্গে আশা যে কোনো অ্যাটাচমেন্ট গুগল ড্রাইভে সেইভ করা যাবে এক ক্লিকে। নিজের কম্পিউটারে ফাইলের স্তুপ বানানোর বদলে ড্রাইভে কাজ করতে যারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তাদের জন্য এই ফিচার আদর্শ। ওয়েব এবং অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণে অ্যাটাচমেন্টের উপরেই থাকে ড্রাইভ আইকন। আর আইওএসে আইকনটি চোখে পড়বে ফাইল খোলার সময়।