সম্ভবত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও আবুধাবি শহরের মধ্যে স্থাপন করা হবে প্রথম হাইপারলুপ-এর সংস্করণ, জানিয়েছে আধুনিক দ্রুতগতির এই পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাওয়া প্রতিষ্ঠান হাইপারলুপ ওয়ান।
Published : 09 Nov 2016, 07:38 PM
একটি ভিডিওবার্তায় প্রতিষ্ঠানটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এর মাধ্যমে মাত্র ১২ মিনিটে এক শহর থেকে আরেকটিতে যাতায়ত করা যাবে। প্রযুক্তিটি এখনও পরীক্ষাধীন অবস্থায় আছে বলে চুক্তিটির বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়নি। প্রাথমিকভাবে এই দুই শহরকে যুক্ত করার জন্য একটি লাইন তৈরির সম্ভাব্যতা খোঁজা হবে বলে জানা গেছে। সবার আগে দুবাইয়ের জেবেল আলি বিমানবন্দরে প্রযুক্তিটি ব্যবহারের সম্ভাবনা দেখা হবে, জানিয়েছে বিবিসি।
হাইপারলুপ ট্রানজিট সিস্টেম হচ্ছে ২০১৩ সালে মার্কিন ধনকুবের ও প্রকৌশলী, টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক-এর দেওয়া ভবিষ্যতের যোগাযোগ প্রযুক্তির একটি ধারণা। এতে একটি বায়ুশূন্য নলের ভেতর চুম্বকের সহায়তায় কিছু পড ভাসিয়ে রাখা হয়। এই ভাসমান পডগুলোর মাধ্যমে মানুষ ও মালামাল ঘণ্টায় সাড়ে সাতশ' মাইল বেগে পর্যন্ত ভ্রমণ করানো যাবে।
মাস্ক শুধু ধারণাটির প্রযুক্তিগত বিবরণ প্রদান করেছেন, কিন্তু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো একে বাস্তবে রূপান্তর করার জন্য কাজ করছে। মূলত দুইটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হাইপারলুপ ট্রান্সপোর্টেশন টেকনোলোজিস এবং হাইপারলুপ ওয়ান এই প্রকল্পটি নিয়ে কাজ করছে।
বর্তমানে দুবাই এবং আবুধাবির মধ্যে যাতায়তে সময় লাগে এক ঘণ্টা বা তার কিছু বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে দুবাই থেকে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ-এ ৪৮ মিনিটে এবং কাতারের রাজধানী দোহা-তে ২৩ মিনিটে ভ্রমণ করা সম্ভব হবে।
হাইপারলুপ ট্রান্সপোর্টেশন টেকনোলোজিস চলতি বছর মার্চে স্লোভাকিয়ার সঙ্গে এই প্রযুক্তি স্থাপনের বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর মাধ্যমে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা এবং হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের সঙ্গে স্লোভাকিয়ার রাজধানী ব্রাতিসলাভা-এর সংযোগ স্থাপিত হবে।
খুব শীঘ্রই হাইপারলুপ ওয়ান তাদের পরিবহন পডের আকৃতি কেমন হবে তা প্রকাশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অ্যাস্টন বিজনেস স্কুল-এর প্রফেসর ডেভিড বেইলি জানান, পূর্ববর্তী ঘোষণা অর্থাৎ লস অ্যাঞ্জেলস এবং স্যান ফ্রান্সিসকো'র মধ্যে সংযোগ স্থাপনের তুলনায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের পরিকল্পনাটি বেশি সম্ভাবনাময়। বিবিসিকে তিনি বলেন, “মরুভুমির মধ্য দিয়ে এটি নির্মাণের প্রক্রিয়া মানে আপনি একটি সরল যাত্রাপথ পরিকল্পনা করতে পারেন, একে বাঁকানো খুব একটা সহজ না এবং সেখানকার সরকার একে নতুন প্রযুক্তির মধ্যে সামনের সারিতেই রাখবে।”
সেইসঙ্গে তিনি সতর্ক করেন করে জানান, আসলেই মানুষ নতুন এই প্রযুক্তিটিকে কীভাবে গ্রহণ করবে এবং তারা আসলেই এত উচ্চগতিতে ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক কিনা তাও ভেবে দেখা প্রয়োজন।