ঘরে বসে কম্পিউটারের পর্দাতেই ওরিয়ন মহাকাশযানের চন্দ্রযাত্রা অনুসরণ করতে পারবেন পৃথিবীর (অথবা বাইরের!) যে কেউ। পৃথিবী বা চাঁদের সঙ্গে ওরিয়নের দূরত্ব এবং তাৎক্ষণিকভাবে মহাকাশের ঠিক কোথায় ওরিয়নের অবস্থান – এ সবই দেখা যাবে নিজের চোখে।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ১৬ নভেম্বর চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে নাসার আর্টেমিস ওয়ান মিশন। এসএলএস রকেট মূল যানকে মহাকাশের দিকে ঠেলে দিয়ে পৃথিবীতে নেমে আসার পর একাই ছুটে চলেছে ওরিয়ন।
ওরিয়নের এই একাকী যাত্রা অনুসরণ করা যাবে নাসার ‘আর্টেমিস রিয়াল-টাইম অরবিট ওয়েবসাইট (অ্যারো)’-এর মাধ্যমে। মহাকাশযানটির দূরত্ব, গতি, অবস্থান এমন সব তথ্য মিলবে সেখানে।
কাজ করছে মহাকাশযানের ক্যামেরাও; নাসা টিভিতে প্রচারিত ভিডিওতে ওরিয়ন থেকে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছিল নীল পৃথিবী।
সেন্সর থেকে পাওয়া তথ্য ক্রমাগত নাসার মিশন কন্ট্রোল সেন্টারে পাঠাচ্ছে ওরিয়ন। আর সেসব তথ্য সহজে বোঝার সুবিধা দিতে তাৎক্ষণিক দৃশ্যায়নের কাজটি করছে অ্যারো।
অ্যারোর তথ্য অনুযায়ী, এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে পৃথিবী থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার ৯৩৪ মাইল দূরে ছিল ওরিয়ন, চাঁদের সঙ্গে দূরত্ব ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৪৪ মাইল; গতি ছিল ঘণ্টায় ২ হাজার ৯৭৭ মাইল।
ওরিয়নের গন্তব্য কেবল চাঁদ নয়, চাঁদকে ছাড়িয়ে আরও ৪০ হাজার মাইল দূরে যাবে মহাকাশযানটি। যানের পুরো যাত্রা পর্যবেক্ষণ করা যাবে নাসার নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং ওরিয়নের টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। উভয় প্ল্যাটফর্ম থেকেই এক ক্লিকে অ্যারোতে প্রবেশ করা যাবে।
নাসা জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের এক মিনিট পর থেকেই অ্যারোর জন্য তথ্য পাঠানো শুরু করেছে ওরিয়ন। ‘ইন্টেরিম ক্র্যায়োজেনিক প্রোপালশন স্টেজ (আসিপিএস) আলাদা হওয়ার আগ পর্যন্ত নির্দিষ্ট বিরতিতে সেন্সরের ডেটা পাঠিয়েছে মহাকাশযানটি।
একা হয়ে যাওয়ার পর থেকে বিরতি ছাড়া তথ্য পাঠাচ্ছে ওরিয়ন।
অ্যারো নির্মাতা এবং ওরিয়ন প্রকল্পের প্রোগ্রামার ওয়েবসাইটটি নিয়ে বলেছেন, “মিশনের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট হওয়ার এবং নাসা আর্টেমিস ওয়ানের মাধ্যমে যা করার চেষ্টা করছে তা বোঝার জন্য কার্যকর এক মাধ্যম এটি।”
নাসা জানিয়েছে, অ্যারো মূলত আর্টেমিস প্রকল্পের জন্য নির্মাণ করা হলেও, ভবিষ্যতের অন্য মিশনগুলোর তাৎক্ষণিক অগ্রগতি দৃশ্যায়নের জন্য একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
আর্টেমিস প্রকল্পের অংশ হিসেবে চাঁদে প্রথম নারী নভোচারীকে পৌঁছে দিয়ে ইতিহাস গড়তে চায় নাসা। এ ছাড়াও চাঁদে একটি বেইজ ক্যাম্প এবং কক্ষপথে নতুন ‘গেইটওয়ে’ স্পেস স্টেশন নির্মাণের স্বপ্ন দেখছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি।
নাসার পরিকল্পনাগুলো এখনও অনেক দূরের মনে হলেও, প্রথম মিশনে এখন পর্যন্ত ইতিবাচক ফলাফলই পেয়েছে সংস্থাটি।