মঙ্গলবার এক টুইটে এই পরিবর্তনের আভাস দেন মাস্ক নিজেই, যেখানে কেবল ইংরেজি ক্যাপিটল লেটারে ‘X’ অক্ষরটি লেখা ছিল।
Published : 12 Apr 2023, 03:14 PM
একক কোম্পানি হিসেবে টুইটারের অস্তিত্ব শেষ হয়ে গেল। ‘এক্স কর্পোরেশন’ নামে পরিচিত আরেকটি কোম্পানির সঙ্গে একে সমন্বিত করেছেন ইলন মাস্ক।
এই পরিবর্তনের মানে দাঁড়ায়, সামাজিক অ্যাপটি এখন মাস্কের ‘এক্স হোল্ডিং কর্পোরেশন’-এর অংশ, যা তার সকল কোম্পানির ভবিষ্যৎ অভিভাবক কোম্পানি হিসেবে বিবেচিত। এর মধ্যে রয়েছে নিউরালিঙ্ক, স্পেসএক্স, টেসলা ও ‘দ্য বোরিং কোম্পানি’।
এই সিদ্ধান্তে মাস্কের টুইটারকে ‘এভ্রিথিং অ্যাপে’ রূপান্তরের পরিকল্পনারও সম্ভাব্য ইঙ্গিত মিলেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
লরা লুমার নামে যুক্তরাষ্ট্রের এক পরাজিত কংগ্রেস প্রার্থির সঙ্গে চলমান মামলায় সামাজিক প্ল্যাটফর্মটির আইনজীবিদের এই খবর প্রকাশে বাধ্য করায় এই সমন্বয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে।
“টুইটার এক্স কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বিত। এখন এর কোনো অস্তিত্ব নেই।” – লেখা রয়েছে আদালতে জমা দেওয়া নথিতে।
“এক্স কর্পোরেশন একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন কর্পোরেশন। এর মূল কর্পোরেশন হলো এক্স হোল্ডিংস কর্পোরেশন। কোনো পাবলিক ট্রেড কর্পোরেশনই এক্স কর্পোরেশন বা এক্স হোল্ডিংস কর্পোরেশনের ১০ শতাংশ বা তার বেশি অংশের মালিক নয়।”
এই প্রসঙ্গে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টুইটারের মন্তব্য জানতে চাইলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। কারণ, কোম্পানির প্রেস ইমেইলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ‘বিষ্ঠার’ ইমোজি প্রতিক্রিয়া হিসেবে চলে আসে।
মঙ্গলবার এক টুইটে এই পরিবর্তনের আভাস দেন মাস্ক নিজেই, যেখানে কেবল ইংরেজি ক্যাপিটল লেটারে ‘X’ অক্ষরটি লেখা ছিল।
এরইমধ্যে ‘এক্স ডটকম’-এর ডোমেইন দখলে রেখেছেন এই মার্কিন ধনকুবের। ১৯৯৯ সালে একই নামে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি, যা পরবর্তীতে ‘পেপাল’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
২০২২ সালের অক্টোবর মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণের চুক্তি স্বাক্ষরের চূড়ান্ত পর্যায়ে মাস্ক টুইট করেন, “টুইটার কেনা ‘এক্স’ নামের ‘এভ্রিথিং অ্যাপ’ তৈরির গতিকে তরান্বিত করবে।”
“টুইটার সম্ভবত এক্স-এ চলে যাবে তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে, তবে আমার ভুলও হতে পারে।”
শিল্প বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, মাস্ক কী টুইটারকে এমন এক অ্যাপে রূপান্তরে সফল হবেন যেখানে ব্যবহারকারীরা আর্থিক লেনদেন থেকে শুরু করে ট্যাক্সি ডাকা পর্যন্ত সকল ধরনের সাধারণ অনলাইন পরিষেবায় প্রবেশ করতে পারবেন?
চীনের উইচ্যাটও একই ধরনের কার্যকারিতার সুবিধা দিয়ে থাকে। তবে পশ্চিমা দেশগুলো এখন পর্যন্ত এমন অ্যাপ তৈরি করতে পারেনি।
“এই শিল্পে ‘সুপার অ্যাপ’ হিসেবে পরিচিত অ্যাপের ধারণা নতুন কিছু নয়। এগুলো এশিয়াতে ব্যপক সাফল্য দেখালেও অন্যান্য জায়গায় তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।” --সে সময় বলেন সামাজিক মাধ্যম বিশেষজ্ঞ ও শিল্প ধারাভাষ্যকার ম্যাট নাভারা।
“টুইটার কি এমন এক সুপার অ্যাপের অংশ হতে পারে যা আপনাকে পণ্য কেনা, বন্ধুর সঙ্গে চ্যাটিং, খবরের আপডেট দেওয়া, ট্যাক্সি বুকিং ইত্যাদি সুবিধা দেবে? নিশ্চয়ই। ইলন মাস্ক কি এটি কাজ করতে পারেন? সম্ভবত। ইলন কি সত্যিই এটা করবেন? কে জানে।”