নিজস্ব প্রাইভেট মহাকাশ স্টেশন চালু করার উদ্দেশ্যে নতুন চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক রকেট নির্মাতা কোম্পানি স্পেসএক্স।
এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ‘ভয়েজার স্পেস’ ও ইউরোপীয় এয়ারক্রাফট কোম্পানি এয়ারবাসের সঙ্গে জোট বেঁধেছে স্পেসএক্স, যেখানে ‘স্টারল্যাব’ নামের প্রাইভেট মহাকাশ স্টেশনকে স্টারশিপ রকেটে করে মহাকাশ কক্ষপথে পাঠানোর লক্ষ্যে কাজ করছে কোম্পানিগুলো।
এটি একটি সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা হলেও এখনও প্রাইভেট মহাকাশ স্টেশনটি উৎক্ষেপণের তারিখ ঘোষণা হয়নি।
তবে স্টারল্যাব স্পেস দাবি করেছে, ২০৩০ সালের আগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনটি একেবারে বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। আর নতুন স্টেশনটিকে সে জায়গাতেই পাঠাতে আগ্রহী তারা।
৯ জানুয়ারি ‘ভয়েজার স্পেস’ ও ‘এয়ারবাস’ যৌথভাবে ‘স্টারল্যাব’ উদ্যোগ ঘোষণা করার পরেই এই নতুন খবরটি এল। এদিকে, ইলন মাস্কের প্রাইভেট মহাকাশ কোম্পানিকে সমর্থন যোগাতে পেছন থেকে অন্যান্য কোম্পানিও মহাকাশে নিজেদের প্রথম পা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েছে।
ভয়েজার স্পেস-এর সিইও ডিলান টেইলর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, “স্টারল্যাব’কে মহাকাশে পৌঁছাতে স্টারশিপ বেছে নেওয়ার কারণ স্পেসএক্সের সাফল্য ও এর দীর্ঘদিনের নির্ভরযোগ্যতার ইতিহাস । দীর্ঘদিন ধরেই এমন উচ্চ পর্যায়ের উৎক্ষেপণে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে কোম্পানিটি। আর তাদের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরাও গর্বিত।”
অরবিটাল ল্যাব ২.০
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস যে জায়গা ছেড়ে দিচ্ছে, সেখানেই স্থাপিত হবে স্টারল্যাব।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, “গোটা বিশ্বের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, গবেষক ও বিভিন্ন কোম্পানির জন্য একটি ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে স্টেশনটি, যা পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে মানুষের অবিরত উপস্থিতির বিষয়টিও নিশ্চিত করবে।”
পুরো উদ্যোগটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে স্পেসএক্স-এর এই বিশাল আকারের স্টারশিপ লঞ্চ প্ল্যাটফর্মের ওপর। এটি প্রায় ২৬ ফুট চওড়া, যার পুরো মহাকাশ স্টেশনটিকেই কক্ষপথে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
তবে এ পরিকল্পনা আপাতত স্পেসএক্স-এর কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ। কারণ এই বিশাল রকেটের কার্যকারিতা এখনও প্রমাণ করতে পারেনি কোম্পানিটি।
এখন পর্যন্ত স্টারশিপ রকেট উৎক্ষেপণের উভয় প্রচেষ্টাই ব্যর্থ। তবে, এ বছর তৃতীয়বারের মতো রকেটটির উৎক্ষেপণ পরীক্ষার লক্ষ্যস্থির করেছে স্পেসএক্স।পাশাপাশি, এ দশক শেষে চাঁদের পৃষ্ঠে মহাকাশচারীদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য নাসার যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, তার অবিচ্ছেদ্য অংশ হল স্টারশিপ। আর সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ‘স্টারল্যাব’ চালু করার বিষয়ে আশাবাদী স্পেসএক্স।
স্পেসএক্স-এর বাণিজ্যিক বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট টম ওচিনেরো এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এক উৎক্ষেপনেই স্টারল্যাব স্থাপন কেবল মহাকাশ নিয়ে নতুন সম্ভাবনার বিষয়টিই তুলে ধরছে না, বরং ভবিষ্যতে বাণিজ্যিক মহাকাশ খাতে সম্ভাব্য বিষয়াদির নমুনাও পরীক্ষা করছে।”