“রাশিয়া এরইমধ্যে নিজেদের সক্ষমতা দেখিয়েছে। আর ক্যাসপারস্কির মতো কোম্পানির বিভিন্ন রাশিয়াভিত্তিক কোম্পানি আমেরিকানদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে তা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার লক্ষ্য নিয়েছে।”
Published : 17 Jul 2024, 05:39 PM
যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারির নিজেদের সকল দাপ্তরিক কার্যক্রম গুটিয়ে নিচ্ছে রাশিয়াভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ক্যাসপারস্কি।
কোম্পানিটি বলেছে, এ নিষেধাজ্ঞা চালু হতে যাচ্ছে ২০ জুলাই থেকে, যার ফলে তারা ‘ধীরে ধীরে নিজেদের কার্যক্রম বন্ধ’ করে দেবে। তারা আরও যোগ করে, কোম্পানির যুক্তরাষ্ট্র অংশের ব্যবসা ‘এখন আর কার্যকর নয়’।
সোমবার খবরটি প্রকাশ করেছেন স্বতন্ত্র সংবাদকর্মী কিম জেটার। তার দাবি, এ পদক্ষেপে কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কর্মী ছাঁটাই করতে যাচ্ছে, সে সংখ্যা ‘৫০ জনেরও কম’।
মঙ্গলবার প্রযুক্তি সাইট টেকক্রাঞ্চকে দেওয়া এক ইমেইল বার্তায় কোম্পানির বিবৃতি ও কর্মী ছাঁটাইয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ক্যাসপারস্কির মুখপাত্র সয়ার ভ্যানহর্ন। এমনকি তিনি নিজেও এ ছাঁটাইয়ের অংশ।
প্রাথমিকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করার পরিকল্পনা ছিল ক্যাসপারস্কির, যেখানে তারা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসার পরপরই দাবি করে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি, এমন কোনো কাজে তাদের সম্পৃক্ততা নেই।’ আর যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের ‘কাজ ও সম্পর্ক সমুন্নত রাখতে তারা সম্ভাব্য সকল আইনি উপায় খতিয়ে দেখবে’।
জুনে মার্কিন গ্রাহকদের কাছে ক্যাসপারস্কির অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার বিক্রি নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, যা ‘দেশটিতে সফটওয়্যার বিক্রি নিষিদ্ধের প্রথম ঘটনা’। আর এর কারণ দেখানো হয়েছিল কোম্পানির সদর দপ্তর রাশিয়ায় হওয়ায় নিজস্ব নিরাপত্তা ও প্রাইভেসি ঝুঁকির বিষয়টিকে।
“রাশিয়া এরইমধ্যে নিজেদের সক্ষমতা দেখিয়েছে। আর ক্যাসপারস্কির মতো বিভিন্ন রাশিয়াভিত্তিক কোম্পানি আমেরিকানদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে তা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার লক্ষ্য নিয়েছে,” নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়ার সময় বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রী জিনা রাইমন্ডো।
নিষেধাজ্ঞাটি কার্যকর হলে মার্কিন গ্রাহকদের কাছে সরাসরি বা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিক্রেতাদের মাধ্যমে সফটওয়্যার বিক্রির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে ক্যাসপারস্কির জন্য। কেউ কেউ নিজেদের ব্যবসায় এ নিষেধাজ্ঞার প্রভাবের কথা উল্লেখ করে তীব্র নিন্দাও জানিয়েছেন।
২৯ সেপ্টেম্বর থেকে মার্কিন গ্রাহকদের জন্য সফটওয়্যার বা নিরাপত্তা আপডেট করতে পারবে না ক্যাসপারস্কি। বরং এর ফলে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারটির নিরাপত্তা আরও কমে যাবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ক্যাসপারস্কির বিকল্প সফটওয়্যার খোঁজার জন্য মার্কিন গ্রাহকদের বেলায় এ নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল হবে।
বাইডেন ও ট্রাম্প উভয় প্রশাসনকেই ক্যাসপারস্কির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা গেছে। ২০১৭ সালে রাশিয়ার হ্যাকাররা যুক্তরাষ্ট্রের কিছু গোপন নথি চুরি করার পর যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ডিভাইসে ক্যাসপারস্কির সফটওয়্যার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন।