কোম্পানির ক্রিপ্টো ও ব্লকচেইন বিভাগ প্রধান বলেন, এই খাতে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারি বেড়ে যাওয়ার পর ব্যাংকগুলো আগের চেয়েও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছে।
Published : 01 May 2023, 05:56 PM
নিজেদের ক্রিপ্টোমুদ্রা লেনদেন সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বিস্তৃত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন নতুন ক্রিপ্টো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে শীর্ষস্থানীয় আর্থিক লেনদেন সেবাদাতা মাস্টারকার্ড।
কোম্পানির ক্রিপ্টো ও ব্লকচেইন বিভাগ প্রধান বলেন, এই খাতে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারি বেড়ে যাওয়ার পর ব্যাংকগুলো আগের চেয়েও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছে।
কয়েকটি দেশে ক্রিপ্টোভিত্তিক আর্থিক পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে এরইমধ্যে ‘বাইনান্স’, ‘নেক্সো’, ‘জেমিনাই’র মতো বিভিন্ন ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার চুক্তি করেছে মাস্টারকার্ড। আর বাইনান্স কার্ডের মাধ্যমে নিজেদের ক্রিপ্টোমুদ্রার বিনিময়ে প্রচলিত মুদ্রায় লেনদেনের সুযোগ পান ব্যবহারকারী।
“গোটা বিশ্বে ক্রিপ্টোকার্ড সেবা দেয়, এমন কয়েক ডজন অংশীদার রয়েছে আমাদের। আর সামনে এটি আরো বাড়বে।” --বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেন মাস্টারকার্ডের ক্রিপ্টো ও ব্লকচেইন বিভাগ প্রধান রাজ ধামোধারান।
“ক্রিপ্টোমুদ্রায় নিরাপদ বিনিময়ের সুযোগ আমাদের মূল্যবান প্রস্তাবনার অংশ। আর আমরা সেদিকেই গুরুত্ব দিচ্ছি।”
গত বছর এফটিএক্স-এর মতো বেশ কিছু শীর্ষ ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর মূল ধারার ব্যাংকগুলো ক্রিপ্টো গ্রাহকদের বেলায় তুলনামূলক বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছে। এদিকে, আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে এই খাতে বিধিনিষেধ বাড়িয়ে যাচ্ছে মার্কিন নিয়ন্ত্রকরা।
মার্চে ‘বেআইনি লেনদেন’ পরিচালনার অভিযোগে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ কোম্পানি বাইনান্সের বিরুদ্ধে মামলা করেছে মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘কমোডিটি ফিউচার ট্রেডিং কর্পোরেশন’।
এর জবাবে বাইনান্সের প্রধান নির্বাহী চাংপেং ঝাও বলেন, মামলার অভিযোগে ‘অসম্পূর্ণ তথ্য’ প্রকাশ পেয়েছে।
বাইনান্স প্রসঙ্গে রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ধামোধারান। তবে তিনি বলেন, যে কোনো ক্রিপ্টো প্রকল্পের সঙ্গে যৌথ কার্যক্রম ‘যথাযথ পরিশ্রম’ ও সার্বক্ষণিক নজরদারিতার সঙ্গে পরিচালনা করে মাস্টারকার্ড।
গ্রাহকদের প্রতারণার হাত থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জে লেনদেনের সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে স্যানটেন্ডার ও ন্যাটওয়েস্টের মত কয়েকটি ব্যাংক।
নভেম্বরে এফটিএক্স-এর সঙ্গে নিজেদের বৈশ্বিক ক্রেডিট কার্ড চুক্তি সম্পন্ন করে মাস্টারকার্ডের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভিসা।
২০২১ সালে কোম্পানির আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী আমেরিকান এক্সপ্রেস বলেছে, নিজেদের সেবায় ‘রিওয়ার্ড পয়েন্ট’ কমানোর সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে তারা ক্রিপ্টোমুদ্রা ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে। তবে ফেব্রুয়ারিতে কোম্পানিটি জানায়, নিকট ভবিষ্যতে তাদের মূল আর্থিক লেনদেন ও ঋণ ব্যবসার বিকল্প হিসেবে ক্রিপ্টোমুদ্রা ব্যবহারের সম্ভাবনা নেই।
“কে জিতবে কে ঠকবে আমরা তো সেটা নির্ধারণ করতে বসিনি, এমনকি কোন লেনদেনটা উচিৎ কোনটা অনুচিত সেটা ঠিক করে দেওয়াও আমাদের দায় না।” --বিভিন্ন ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ লেনদেন এড়াতে মাস্টারকার্ড লেনদেনের মাত্রা সীমিত করবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন ধামোধরণ।
তিনি আরও যোগ করেন, মাস্টারকার্ডের নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের বেশ কয়েকবার যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এ ছাড়া, ‘ক্রিপ্টো এনালিটিক্স প্রযুক্তি’র পেছনেও বিনিয়োগ করেছে কোম্পানিটি।
ধামোধারান আরও বলেন, ক্রিপ্টোমুদ্রা ব্যবস্থার পেছনে কাজ করা ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়েও ‘যথেষ্ট আগ্রহী’ মাস্টারকার্ড।
“আমরা মনে করি মানুষ আরো বেশি করে সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রচলিত মুদ্রা ছেড়ে আরো বেশি ক্রিপ্টোর দিকে ঝুঁকবে।”