কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের ‘অলিম্পিক’ ঢাকায় শুরু মঙ্গলবার

বাংলাদেশ ১৯৯৮ সাল থেকে আইসিপিসি-তে প্রতিযোগী হিসেবে অংশ নিয়ে আসছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2022, 03:35 PM
Updated : 6 Nov 2022, 03:35 PM

প্রোগ্রামিংয়ের অলিম্পিক হিসাবে বিবেচিত ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্টের (আইসিপিসি) এবারের আসর বসছে ঢাকায়।

মঙ্গলবার শুরু হতে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে এবার ৭০টি দেশ থেকে প্রায় ১৩৭টি দল অংশ নিচ্ছে।

রোববার আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিযোগিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নেতৃত্বে আইসিপিসি’র ৪৫তম আসরের নির্বাহক বিসিসি; আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি)।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আয়োজনকে ঘিরে ইতোমধ্যে ২০০ জন আইসিপিসি রিজিওনাল কনটেস্ট ডিরেক্টর ও কর্মকর্তাসহ অন্তত এক হাজারেরও বেশি অতিথি বাংলাদেশে এসেছেন।

ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শুরু হবে ‘আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ ঢাকা ২০২২’। সিম্পোজিয়ামসহ বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নেবেন আইসিপিসি রিজিওনাল ডিরেক্টররা।

প্রতিযোগিতার সমস্যা সমাধানের মূল অংশটি অনুষ্ঠিত হবে ১০ নভেম্বর, যেখানে প্রতিযোগীরা সময় পাবেন ৬ ঘণ্টা। ওইদিনই এবারের আসরের চ্যাম্পিয়ন দলের নাম ঘোষণা করা হবে।

বাংলাদেশ ১৯৯৮ সাল থেকে আইসিপিসি-তে প্রতিযোগী হিসেবে অংশ নিয়ে আসছে। ওই বছর ঢাকায় প্রথম জাতীয় কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার (এনসিপিসি) চূড়ান্ত পর্ব আয়োজন করা হয়েছিল।

এবার বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক থেকে মোট ৮টি দল অংশ নিচ্ছে।

৪৪তম আইসিপিসি প্রতিযোগিতায় এশিয়া পশ্চিম অঞ্চলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।

সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এ আয়োজনটি আইসিটিতে আমাদের সক্ষমতা প্রদর্শনের দারুণ একটি সুযোগ। একই সঙ্গে আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ আইসিটি নেতৃত্বকে বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে দেওয়ারও একটি সুযোগ।

গত ১৩ বছরে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের অনেক উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “১৩ বছর আগে আমাদের মাত্র ৫০ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল, যা এখন ১৩ কোটি। ১৩ বছর আগে কোনো আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি ছিল না, প্রযুক্তি খাতে রপ্তানি ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার।

“এখন সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার এবং সার্ভিস সেক্টর থেকে সব মিলিয়ে প্রতি বছরে সেটি ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।”

পলক বলেন, একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশ হল অনলাইন সোর্স অব ওয়ার্কারের তালিকায় দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ।

সংবাদ সম্মেলনে আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের সভাপতি উইলিয়াম বি পাউচার বলেন, “আইসিপিসি বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি অন্যতম বিশেষ আয়োজন। আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের শক্তির উপর নির্ভর করে একটি উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলা। আর এর জন্য শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন।”

তিনি আরও বলেন, “চমৎকার ব্যক্তিত্বের অধিকারী হওয়ার জন্য আমাদের শ্রেষ্ঠত্বের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং শ্রেষ্ঠত্বের অভ্যাসটি তখনই সবচেয়ে ভালোভাবে গড়ে উঠবে- যখন মানুষ এক হবে। আমরা যা করেছি তা পরিমাপের পরিবর্তে আমরা কী করতে পারি তা খুঁজে বের করতে হবে।”

ইউএপির উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আইসিপিসি হল সবচেয়ে পুরানো, বৃহত্তম এবং মর্যাদাপূর্ণ একটি প্রিমিয়ার গ্লোবাল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা; যা ‘প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার অলিম্পিক’ হিসাবে বিবেচিত হয়।

অন্যদের মধ্যে আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম, আইসিপিসির উপ-নির্বাহী পরিচালক ও আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ কনটেস্টের পরিচালক মাইকেল জে ডোনাহু, হুয়াওয়ের কর্পোরেট কমিউনিকেশনস্ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিকি ঝ্যাং, জেট ব্রেইনের বিনিয়োগ বিভাগের এসভিপি এবং গবেষণা ও শিক্ষা বিষয়ক বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট অন্ড্রে ইভ্যানভ এবং বিসিসি’র নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার বক্তব্য দেন।