২০১৩ সালে ‘গ্র্যাভিটি’ তৈরিতে খরচ ১০ কোটি, ২০১৫ সালের ‘দ্য মার্শান’ তৈরিতে খরচ ১০ কোটি ৮০ লাখ আর ভারতের চন্দ্রযান-৩ পাঠাতে খরচ সাড়ে সাত কোটি ডলার।
Published : 24 Aug 2023, 06:25 PM
চাঁদের পৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে ভারতের ‘চন্দ্রযান ৩’। এই কৃতিত্ব অর্জনে দেশটি যে অর্থ খরচ করেছে, সেটি হালের জনপ্রিয় সিনেমা ‘ইন্টারস্টেলার’-এর নির্মাণখরচের চেয়েও কম।
বুধবার ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ‘ইসরো’ ঘোষণা দেয়, তাদের নভোযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুর পৃষ্ঠে সফলভাবে ‘সফট ল্যান্ডিং’ করেছে। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছে ভারত। এর মাধ্যমে চাঁদের পৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করা চতুর্থ দেশ হওয়ার কৃতিত্বও অর্জন করে দেশটি।
তুলনামূলক কম বাজেটের মধ্যেই এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে দেশটি। রয়টার্স বলছে, চন্দ্রযান ৩’কে চাঁদের পৃষ্ঠে পাঠাতে খরচ পড়েছে ছয়শ ১৫ কোটি রুপি (সাড়ে সাত কোটি ডলার)।
এই খরচ বেশিরভাগ মহাকাশ বিষয়ক হিট সিনেমার চেয়ে কম। ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘গ্র্যাভিটি’ তৈরির পেছনে খরচ পড়েছিল ১০ কোটি ডলার। ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ম্যাট ডেমন অভিনীত মঙ্গল গ্রহ বিষয়ক সিনেমা ‘দ্য মার্শান’-এর পেছনে খরচ হয়েছিল ১০ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
অন্যদিকে, ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত ইন্টারস্টেলার সিনেমার খরচ (সাড়ে ১৬ কোটি ডলার) ছিল চন্দ্রযান ৩-এর বাজেটের দ্বিগুণেরও বেশি।
এমনকি পৃথিবীর কয়েকটি বাড়ির দামের চেয়েও কম খরচে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছে দেশটি। এর উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দামী বাড়িটি বিক্রি হয়েছিল ২৫ কোটি ডলারের বেশি দামে। এই অর্থ দিয়ে ভারত চাঁদে ‘প্রায় সাড়ে তিনটি’ মিশন পরিচালনা করতে পারত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট’।
এবারের মিশনের খরচ ২০১৯ সালে পরিচালিত চন্দ্রযান ২ মিশনের চেয়েও কম ছিল। তবে, মহাকাশযানটির ল্যান্ডার বিস্ফোরিত হওয়ায় আগের মিশনটি ব্যর্থ হয়। ওই মিশনের পেছনে খরচ হয়েছিল আটশ কোটি রুপি (নয় কোটি ৭০ লাখ ডলার), যা এবারের মিশনের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি।
তবে মিশন প্রকৌশলীরা বলছেন, এর আগের মিশন থেকে বিভিন্ন শিক্ষা নিয়ে তারা সাম্প্রতিক মিশনে সেগুলো প্রয়োগ করেছেন।
মহাকাশে ‘সাশ্রয়ী তবে সফল’ মিশন পরিচালনায় খ্যাতি অর্জনের লক্ষ্যস্থির করেছে ভারত। আর স্যাটেলাইটকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিমালিকানাধীন মহাকাশ খাত ও ব্যবসায় বিনিয়োগ নিয়ে দেশটি বিদেশের বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার প্রচেষ্টার মধ্যেই এই সফলতা এল।
ভারতের এই মিশনের সামগ্রিক খরচ স্পেসএক্স-এর একটি ‘ফ্যালকন ৯’ রকেট উৎক্ষেপণের খরচের প্রায় সমান। কোম্পানির ওয়েবসাইট অনুসারে, প্রতিটি ফ্যালকন ৯ রকেট উৎক্ষেপণের খরচ ছয় কোটি ৭০ লাখ ডলার।