মিশনে এই মা মেয়ের জুটির সঙ্গে আরও থাকবেন অলিম্পিক গেইমসে অংশ নেওয়া নিউক্যাসলের সাবেক ব্রিটিশ অ্যাথলিট জন গুডউইন।
Published : 08 Aug 2023, 02:40 PM
মহাকাশ পর্যটন কোম্পানি ভার্জিন গ্যালাকটিকের দ্বিতীয় বাণিজ্যিক ফ্লাইটের টিকেট জিতেছেন এক ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী আর তার মা।
এই সপ্তাহের শেষ নাগাদ তারা যাত্রা করবেন। আর বিশ্বের প্রথম মা-মেয়ের জুটি হিসেবে মহাকাশে পাড়ি জমাতে যাচ্ছেন স্কটল্যান্ডের অ্যাবারডিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আনাস্তাসিয়া মেয়ার্স ও তার মা কিশা শাহাফ।
ক্যারাবীয় অঞ্চল থেকে তারাই প্রথম মহাকাশে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার মার্কিন অঙ্গরাজ্য নিউ মেক্সিকো থেকে যাত্রা শুরু করবেন এই মা মেয়ের জুটি।
বিবিসি বলছে, কিশা তার মেয়ের ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা সমাধানের জন্য যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করার সময় কোনো কিছু না ভেবেই এই মহাকাশযাত্রার লটারিতে নাম লেখান।
ভার্জিন আটলান্টিকের এক ফ্লাইটে অ্যান্টিগা থেকে লন্ডন যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই তার সামনে এর বিজ্ঞাপন চলে আসে।
“আমি ওই র্যাফেল ড্র’র ফর্ম পূরণ করি। আর হঠাৎ করেই কয়েক মাস পর আমাকে জানানো হয় আমি শীর্ষ ২০-এর চূড়ান্ত তালিকায় আছি। পরবর্তীতে সেরা পাঁচ, ও শেষ পর্যন্ত বিজয়ী।” --বলেন তিনি।
“এরপর একদিন হঠাৎ দেখি, আমার উঠানে লোকজন। রিচার্ড ব্র্যানসন! তিনি আর তার পুরো দল আমার বাসায় এসে বলল, ‘আপনি জিতেছেন, আপনি মহাকাশে যাচ্ছেন।”
আনাস্তাসিয়া বলছেন, ক্যারাবীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে স্কটল্যান্ডে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্তেই তাকে মহাকাশযাত্রার এই সুযোগ দিয়েছে।
“আমি অ্যাবারডিন ইউনিভার্সিটি বাছাই না করলে ও ভিসা নিয়ে এমন জটিলতা না দেখা দিলে আমরা মহাকাশে যাওয়ার এই সুযোগ পেতাম না।”
“আমার ধারণা, কিছু বিশেষ মুহুর্তে একেবারে বিশেষ কিছু ঘটনা ঘটেছে বলেই আমরা এ যাত্রায় যাচ্ছি।”
স্নাতক দ্বিতীয়বর্ষের দর্শন ও পদার্থবিদ্যা বিভাগের এই ছাত্রী বলছেন, স্কটল্যান্ডে আসা তার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল। এর ফলেই ‘এই চমকপ্রদ বিষয়টি’ ঘটতে যাচ্ছে।
‘গ্যালাকটিক ০২’ মিশনটি মার্কিন স্পেস কোম্পানি ভার্জিন গ্যালাকটিকের দ্বিতীয় বাণিজ্যিক মহাকাশযাত্রা হতে যাচ্ছে। আর প্রথমবারের মতো এতে অর্থের বিনিময়ে যাত্রী নেওয়ার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।
এই রকেটযাত্রার প্রচারণায় টিকিটের দাম উল্লেখ করা ছিল সাড়ে চার লাখ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
জুন মাসে পরিচালিত ‘গ্যালাকটিক ০১’ মিশনটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮৫ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছেছিল। ধারণা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় মিশনেও একই পথ অনুসরণ করা হবে।
স্বর্গে যাওয়ার কাছাকাছি
বিশ্বের দ্বিতীয় কনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে মহাকাশযাত্রা করতে যাওয়া আনাস্তাসিয়া বলছেন, তিনি আশা করেন যে তার অভিজ্ঞতা অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে।
“এটা আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এটা স্কটল্যান্ড ও অ্যান্টিগার পাশাপাশি আমার সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন যে কোনো জায়গার বেলায় এটা সত্যি।” --বলেন তিনি।
“আমি আশা করি, লোকজন এটা দেখে আমাকে সমর্থন জানাবেন।”
“আমার উদ্দেশ্য, নিজের বা বিশ্বের বেঁধে দেওয়া যেকোনো বাধা উৎরে যাওয়া।”
“আমি মানুষকে জানাতে চাই, আপনি কে বা কোথা থেকে এসেছেন সেটা বড় বিষয় নয়। আপনার স্বপ্ন কেবলই আপনার। আপনিই সেটা ঘটাতে পারেন। যে যাই বলুক না কেন।”
মিশনে এই মা মেয়ের জুটির সঙ্গে আরও থাকবেন অলিম্পিক গেইমসে অংশ নেওয়া নিউক্যাসলের সাবেক ব্রিটিশ অ্যাথলিট জন গুডউইন। এই যাত্রার মাধ্যমে ‘পারকিনসন’স’ রোগে আক্রান্ত দ্বিতীয় ব্যক্তি ও প্রথম অলিম্পিয়ান হিসেবে মহাকাশে পাড়ি জমাবেন তিনি।