এফটিডি রোগের বিভিন্ন লক্ষণ ও জেনেটিক নানা কারণের জন্য চিকিৎসা জগতে এটি বিশেষভাবে চ্যালেঞ্জিং।
Published : 05 Apr 2024, 07:05 PM
ডিমেনশিয়ার লক্ষণ যাদের মাত্রই দেখা দিতে শুরু করেছে, তাদের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে স্মার্টফোন অ্যাপ— এমন তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।
‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, স্যান ফ্রান্সিসকো (ইউসিএসএফ)’-এর নতুন গবেষণায় এমন একটি স্মার্টফোন অ্যাপ বানিয়েছেন গবেষকরা, যার মাধ্যমে ‘ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া (এফটিডি)’র প্রাথমিক বিভিন্ন লক্ষণ শনাক্ত করার সুবিধা মিলবে।
‘ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া (এফটিডি)’ গুরুতর এক স্নায়বিক অবস্থা। প্রায়ই মধ্যবয়সী ব্যক্তিরা আক্রান্ত হন এ রোগে।
এ উদ্ভাবন বিভিন্ন ক্লিনিকাল ট্রায়াল, এফটিডি’র প্রচলিত প্রাথমিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটানোর সম্ভাবনা দেখিয়েছে, বিশেষ করে এর প্রাথমিক ধাপগুলোর ক্ষেত্রে।
৬০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ডিমেনশিয়ার সবচেয়ে সাধারণ রূপ এফটিডি। আর এর বিভিন্ন লক্ষণ ও জেনেটিক নানা কারণে চিকিৎসা খাতে এটি বিশেষভাবে চ্যালেঞ্জিং।
এ রোগের লক্ষণ আরও নানারকম হতে পারে, যেমন– কারো ব্যক্তিত্বের নাটকীয় পরিবর্তন ও আবেগপ্রবণতা থেকে শুরু করে নড়াচড়া বা কথা বলার সমস্যা পর্যন্ত।
আর জেনেটিক প্রবণতার কারণে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত রোগীকে প্রভাবিত করে এ অবস্থা। প্রাথমিকভাবে এ রোগ নির্ণয় করা কঠিন ছিল। এমনকি আক্রান্ত রোগীর বয়স ও নানা লক্ষণকে কারণ দেখিয়ে একে প্রায়ই মানসিক ব্যাধি হিসাবে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হতো।
ইউসিএসএফ-এর নেতৃত্বাধীন গবেষণা দলের তৈরি এই স্মার্টফোন অ্যাপের লক্ষ্য, বিভিন্ন ক্লিনিকে প্রচলিত নিউরোসাইকোলজিকাল মূল্যায়নের মতো সংবেদনশীল, কগনিটিভ বা জ্ঞানভিত্তিক নানা পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগের প্রাথমিক শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণের অভাব পূরণে সহায়তা করা।
অ্যাপের অগ্রগতির বিষয়টি এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এল যখন এফটিডি’র জন্য ৩০টিরও বেশি ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে বা পরিকল্পনা পর্যায়ে রয়েছে। যার মধ্যে কয়েকটি সম্ভাবনাময় চিকিৎসাও রয়েছে, যা জিনগতভাবে রোগপ্রবণ ব্যক্তিদের এই রোগের বিস্তার কমিয়ে দিতে পারে।
দূর থেকে এ রোগের চিকিৎসার নানা প্রভাব পর্যবেক্ষণ করতে একটি নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এ অ্যাপের সম্ভাব্যতা তুলে ধরেছেন ক্লিনিকাল নিউরোসাইকোলজিস্ট ও ইউসিএসএফ-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. অ্যাডাম স্টাফারোনি।
এমন সফলতা এফটিডি গবেষণার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এ ধরনের রোগীদের লক্ষণ ও প্রভাব অনেক বেশি পরিবর্তিত হয়, যা প্রচলিত চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতিতে চ্যালেঞ্জিং।
আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোশিয়েসনের অধীনস্থ ‘জামা নেটওয়ার্ক ওপেন’ জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণায়, অ্যাপটির মাধ্যমে ৩৬০ জন অংশগ্রহণকারীকে ট্র্যাক করে তাদের ‘এক্সিকিউটিভ ফাংশন’ পরীক্ষার ওপর মনযোগ দেওয়া হয়— যা এমন এক অবস্থা, যা এফটিডি’র মাধ্যমে প্রভাবিত হয়।