ইন্দোনেশিয়ায় নিকেল উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে সরবরাহ বেড়েছে ও দাম কমেছে; যার প্রভাব পড়েছে অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার উৎপাদকদের ওপর।
Published : 28 Jul 2024, 05:35 PM
বাড়তে থাকা নিকেল খনন-এর ফলে বিশ্বের শীর্ষ নিকেল উৎপাদকে পরিণত হয়েছে ইন্দোনেশিয়া।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশটি ১৪টির বেশি সক্রিয় খনি থেকে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির ব্যাটারিতে দরকারি ধাতু নিকেলের বৈশ্বিক চাহিদার ৪০ শতাংশেরও বেশি সরবরাহ করে।
নিকেল উৎপাদনের এমন দ্রুত বৃদ্ধি, বিশ্বের অন্যতম বড় ইভি ব্যাটারি উৎপাদক চীনের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার অংশীদারিত্বের সঙ্গে জড়িত বলে প্রতিবেদনে লিখেছে সিএনবিসি।
“বিদ্যুচ্চালিত যানবাহনের জোয়ারে নিকেল গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এ খাত পরিবেশের জন্য উপকারী হবে ও বিশ্ব অর্থনীতিকে পরিবেশ বান্ধব ও জলবায়ু পরিবর্তন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে সাহায্য করবে।” বলেছেন এসএন্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস-এর জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক জেসন সাপোর৷
চীনা বিনিয়োগ ইন্দোনেশিয়ার নিকেল খনির ক্ষমতা বাড়িয়েছে। ২০২২ সালে দেশটির কাঁচা নিকেল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে, স্থানীয়ভাবে নিকেল পরিশোধনের ওপর চাপ বেড়েছে। তবে, অর্থনৈতিক সুবিধা থাকা সত্ত্বেও, খনির আশপাশে পানি দূষণ ও বন উজাড়সহ বিভিন্ন পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে৷
ইন্দোনেশিয়ায় নিকেল উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে সরবরাহ বেড়েছে ও দাম কমেছে; যার প্রভাব অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার উৎপাদকদের ওপর পড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সিএনবিসি।
আমেরিকায়, ট্যালন মেটাল-এর মতো কোম্পানিগুলো কাঁচামালের নিশ্চয়তা ও কঠোর পরিবেশগত মানদণ্ড বজায় রাখার স্বার্থে স্থানীয় নিকেল উৎসের ওপর জোর দিচ্ছে। এই কোম্পানিগুলো টেসলার মতো অটোমেকারদের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করে বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পে রিনিউয়েবল এনার্জির চাপ সামলানোর চেষ্টা করছে৷
“এটি বোঝা খুব সহজ। যেহেতু আমাদের কাছে এ রিসোর্সগুলো অভ্যন্তরীণভাবেই আছে, সঙ্গে রয়েছে বাণিজ্যিক সাহায্য, তাই আমরা চাই কোম্পানিগুলো উৎস থেকেই এসবের সরবরাহ নেবে।” – বলেছে ট্যালন মেটার-এর গণযোগাযোগ প্রধান টড মালান।
“এর উৎপাদনে ভাল মান বজায় থাকে। এর ফলে এই ‘সোর্সিং’ করাটা একটু বেশি ব্যয়বহুল। কিন্তু যেহেতু এই খরচের সঙ্গে গাড়ির দামও সমন্বয় হয়, ফলে এটি তেমন ব্যয়বহুল হবে না।”
ইভি নির্মাতা টেসলার সিইও ইলন মাস্ক ২০২০ সালে তার কোম্পানির এক সভায় নিকেল উৎপাদন বাড়াতে খনি শ্রমিকদের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
“যত খনি কোম্পানি আছে, আপনারা দয়া করে নিকেল উত্তোলন বাড়ান।”
“যদি কেউ দক্ষতার সঙ্গে পরিবেশগতভাবে ও সংবেদনশীল উপায়ে নিকেল খনন করেন, তবে টেসলা আপনাকে দীর্ঘমেয়াদী বিশাল চুক্তি দেবে। আশা করছি এ বার্তাটি সব খনি কোম্পানির কাছে পৌঁছে যাবে, অনুগ্রহ করে নিকেল নিয়ে আসুন।”
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুধু মিশিগান অঙ্গরাজ্যের একটি সক্রিয় খনির ওপর নির্ভর করার ফলে দেশটির নিকেল সরবরাহ বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। ২০২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সতের হাজার মেট্রিক টন নিকেল উত্তোলন করেছে, যেখানে ইন্দোনেশিয়া করেছে ১৮ লাখ মেট্রিক টন।
ট্যালন মেটালস মার্কিন অঙ্গরাজ্য মিনেসোটায় নতুন নিকেল খনি চালু করার জন্য কাজ করছে। তবে, গোটা প্রক্রিয়া শেষ করে সম্পূর্ণ উৎপাদনে যেতে কয়েক দশক লাগতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে সিএনবিসি।