আইফোনে গুগলের সার্চ ইঞ্জিনকে ডিফল্ট হিসেবে রাখতে স্রেফ অ্যাপলকেই এক হাজার আটশ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে কোম্পানিটি।
Published : 06 Aug 2024, 01:29 PM
নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিনকে ডিফল্ট হিসেবে রাখতে প্রতিদন্দ্বীদের অর্থ প্রদান করে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টিট্রাস্ট আইন ভেঙেছে গুগল, সম্প্রতি এমনই রায় দিয়েছে দেশটির এক ফেডারেল আদালত।
বিভিন্ন টেক জায়ান্ট কোম্পানি কীভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে, সেক্ষেত্রে এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য প্রভাব পড়তে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
“নিজস্ব আধিপত্য ধরে রাখার উদ্দেশ্যে একচেটিয়া আচরণ করে আসছে গুগল,” সোমবার দেওয়া রায়ে লেখেন ‘ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়া’র বিচারক অমিত পি মেহতা। আর সার্চ জায়ান্ট কোম্পানিটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম অ্যান্টিট্রাস্ট আইন ‘শারম্যান অ্যাক্ট’ লঙ্ঘন করেছে বলেও উল্লেখ রয়েছে এতে।
২০২০ সালে মামলাটি দায়ের করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ’সহ বেশ কিছু মার্কিন অঙ্গরাজ্য, যেখানে অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের মতো কোম্পানিকে বছরে শত শত কোটি ডলার অর্থ দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। আর এর লক্ষ্য ছিল, কোম্পানিগুলোর ফোন ও ব্রাউজারে গুগলের সার্চ ইঞ্জিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করার সুবিধা পাওয়া।
মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইফোনে গুগলের সার্চ ইঞ্জিনকে ডিফল্ট হিসেবে রাখতে স্রেফ অ্যাপলকেই এক হাজার আটশ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে কোম্পানিটি।
মামলার রায় অনুসারে, বৈশ্বিক ইন্টারনেট সার্চের ৯০ শতাংশ গুগলের দখলে রাখা, পরবর্তীতে যার মাধ্যমে সার্চ ফলাফলে স্পন্সর করা বিজ্ঞাপন দেখানোর বাজারেও আধিপত্য বিস্তার কোম্পানির প্রাধান্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এমনকি কোম্পানির প্লে স্টোরে প্রবেশাধিকার পেতে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম সমর্থনকারী ফোন উৎপাদক কোম্পানিগুলোকে নির্দিষ্ট কিছু গুগল অ্যাপ ডিফল্ট করানোর অনুশীলন নিয়েও অভিযোগ তোলা হয় মামলায়।
দুই দশক আগে মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে পরিচালিত কুখ্যাত মামলার পর থেকে এটিই মার্কিন বিচার বিভাগ পরিচালিত সবচেয়ে বড় অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রযুক্তি সাইট ভার্জ।
মামলার শুনানিতে গুগল যুক্তি দেখিয়েছে, তারা একচেটিয়া কৌশল দিয়ে নয়, বরং আকর্ষণীয় বিভিন্ন পণ্য এনে সাফল্য অর্জন করেছে। আর তাদেরকে শুধু অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনই নয়, বরং অ্যামাজনের মতো বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গেও তুলনা করা উচিৎ, যারা ওয়েব ট্রাফিকিংয়ের নির্ভর করে থাকে।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছে গুগল।
মামলার এ সিদ্ধান্ত গুগলের দায়বদ্ধতার স্রেফ একটি ফলাফল। তবে, আইন মেনে চলার ক্ষেত্রে সার্চ জায়ান্ট কোম্পানির কী করা উচিৎ, তা নির্ধারিত হবে পৃথক শুনানিতে।
এ ছাড়া, বিচার বিভাগ ও আট মার্কিন অঙ্গরাজ্যের দায়ের করা আরেক মামলার মুখে পড়েছে গুগল, যেখানে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে অনলাইন বিজ্ঞাপন বাজারে আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ তোলা হয়।