নিজের প্রথম মিশনে রকেটটি একগুচ্ছ স্যাটেলাইট বহন করেছে, যেগুলো ভূপৃষ্ঠের ছয়শ কিলোমিটার ওপরের এক কক্ষপথে বসানো হয়েছে।
Published : 10 Jul 2024, 01:36 PM
অবশেষে সফলভাবে উৎক্ষেপণ ঘটেছে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইএসএ’র ‘আরিয়ান ৬’ রকেটের, যা মহাদেশটির মহাকাশযাত্রায় সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বদলে দেওয়ার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।
চার বছরের দীর্ঘ বিলম্বের পর এ সফল উৎক্ষেপণের ঘটনাটি ঘটল, যার ফলে মহাকাশে নিজস্ব ফ্লাইট ও স্যাটেলাইট পাঠানোর সুযোগ পাবে ইউরোপ, এবং ‘স্পেসএক্স’-এর মতো কোম্পানির ওপর নির্ভর না করেই।
এ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে আরিয়ান ৫ রকেটের স্থলাভিষিক্ত হল আরিয়ান ৬, যার সর্বশেষ উৎক্ষেপণ ঘটেছিল এক বছর আগে। এর পর থেকেই নিজেদের রকেট উৎক্ষেপণ সক্ষমতা ছাড়াই বিভিন্ন মিশন পরিচালনা করে আসছে ইউরোপ।
তবে অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল নতুন এই আরিয়ান ৬ রকেট। ২০২০ সালে প্রথম উৎক্ষেপণের পর মিশনের কারিগরি ত্রুটির কারণে এর উৎক্ষেপণ অনেকবার পিছিয়েছে, যার ফলে নানামহল থেকে সমালোচনাও শুনতে হয়েছে সংস্থাটিকে।
মঙ্গলবার ৯ জুলাই বিকেলে ফ্রান্সে অবস্থিত নিজস্ব স্পেসপোর্ট থেকে রকেটটির প্রথম সফল উৎক্ষেপণের ঘোষণা দেয় ইএসএ, যার ফলে প্রকল্পটি যে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে, তারও প্রমাণ মেলে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
নিজের প্রথম মিশনে রকেটটি একগুচ্ছ স্যাটেলাইট বহন করেছে, যেগুলো ভূপৃষ্ঠের ছয়শ কিলোমিটার ওপরের কক্ষপথে বসানো হয়েছে। এ ছাড়া, বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি বহন করার পাশাপাশি বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, ইউনিভার্সিটি ও অন্যান্য বিভিন্ন গবেষণামূলক পরীক্ষার মধ্য দিয়েও গিয়েছে রকেটটি।
এই মিশনকে ইউরোপের মহাকাশে প্রবেশাধিকার মেলার উপায় বলে আখ্যা দিয়েছেন ইএসএ’র মহাপরিচালক জোসেফ অ্যাশবাকার। তিনি আরও বলেন, রকেট উৎক্ষেপণের এ যাত্রা ‘এত সহজ ছিল না’। তবে, এর বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তাদের পরিশ্রম ‘কাজে লেগেছে’।
“একেবারে নতুন রকেট উৎক্ষেপণের ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না। সফলতার গ্যারান্টি তো দূরে থাক। তবে আমি এমন এক ঐতিহাসিক মুহুর্তের গর্বিত সাক্ষী, যেখানে নতুন প্রজন্মের আরিয়ান শ্রেণির রকেট সফলভাবে উৎক্ষেপিত হয়েছে। ফলে, মহাকাশে আবারও প্রবেশাধিকার পেতে যাচ্ছে ইউরোপীয়রা,” বলেন তিনি।
“এ সফল উৎক্ষেপণ বাস্তবায়নে হাজার হাজার মানুষ বেশ কয়েক বছর ধরে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। আর প্রথম প্রচেষ্টাতেই এত ভালো কার্যকারিতা তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রমাণও বটে, যেখানে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি খাতে ইউরোপীয়দের মেধার নমুনাও ফুটে উঠেছে।”
“তাদের পরিশ্রমকে এতদূর নিয়ে আসার জন্য ইএসএ, ফরাসি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘সিনেস’, আরিয়ান গ্রুপ ও আরিয়ানস্পেস’কেও আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। এ ছাড়া, আরিয়ান ৬ প্রকল্প চালু করার পাশাপাশি এতে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন সদস্যভুক্ত দেশকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই আমি। যাত্রাটা এত সহজ না হলেও এ প্রকল্প নিয়ে তাদের ধৈর্য্য অবশেষে এখন সুফল দেখাচ্ছে।”