আক্রমণকারীরা ঠিক কীভাবে এইসব পেজার মডিফাই করেছে, তা না জানলে অন্যান্য গ্রাহক ডিভাইস নিরাপদ কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া জটিল।
Published : 20 Sep 2024, 11:46 AM
লেবাননে পেজার বিস্ফোরণের ঘটনাটি বিবেচিত হচ্ছে অত্যন্ত উন্নত ও হঠাৎ করে ঘটানো মারাত্মক আক্রমণ হিসেবে।
সাম্প্রতিক এ ঘটনায় অন্তত ১২ জন নিহত ও হাজার হাজার মানুষ আহত হন। হিজবুল্লাহ ও লেবানিজ সরকার উভয় এই আক্রমণের দায় ইসরায়েলের ওপর চাপালেও ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি দেশটি।
মঙ্গলবার ঘটে যাওয়া এ আক্রমণে হিজবুল্লাহ সদস্যদের যোগাযোগের উপায় হিসেবে বিবেচিত হাজার হাজার পেজার একসঙ্গে বেজে ওঠে ও পরবর্তীতে সেগুলো বিস্ফোরিত হয়। অনুমান বলছে, ডিভাইসগুলোয় হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে কেউ দূর থেকে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, যার ফলে আহত হয়েছেন এগুলোর আশপাশে থাকা লোকজন।
এই অভিনব ও আকস্মিক আক্রমণে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে, এ প্রযুক্তি যুদ্ধক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হতে পারে। ফলে, বিভিন্ন ডিভাইসকে আর নিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে কি না, তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন।
প্রতিবেদন দাবি করেছে, এগুলো নিরাপদ। স্মার্টফোন বা বেশিরভাগ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা অন্যান্য প্রযুক্তিতে ঝুঁকি আছে, এমন কোনো আলামত মেলেনি।
এ আক্রমণ সম্ভাব্য কিছুর আগমনী বার্তাও হতে পারে। যেহেতু ইসরায়েল এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফেলেছে, তাই অন্যরা এটি নকল করতে পারে, এমন ঝুঁকিও আছে। তবে সেক্ষেত্রেও নিত্যদিনের বিভিন্ন প্রযুক্তি ডিভাইসে এটি ব্যবহারের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
আসলে ঠিক কীভাবে পেজার আক্রমণের ঘটনাটি ঘটল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উৎস থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, পেজারের ভেতর অল্প পরিমাণে বিস্ফোরক ভরে পরবর্তীতে এর নিজস্ব সংযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে দূর থেকে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
আক্রমণকারীরা ঠিক কীভাবে এইসব পেজার মডিফাই করেছে, তা না জানলে অন্যান্য গ্রাহক ডিভাইস নিরাপদ কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া জটিল। তবে, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হল, এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
“কোনো সুনির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে প্লাস্টিকের বিস্ফোরকের মতো সাপ্লাই চেইন আক্রমণ নিয়ে একজন গড়পড়তা ব্যক্তির চিন্তার কোনো কারণ নেই। এমন ঘটনা অস্বস্তিকর হলেও, তা দৈনন্দিন জীবনে পরিচিত কোনো হুমকি নয়,” বলেন ‘বিসিএস, চার্টার্ড ইনস্টিটিউট ফর আইটি’র কর্মী ড্যানিয়েল কার্ড।
“মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস সাধারণত খুবই নিরাপদ। আর এমন বিস্ফোরকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও অত্যন্ত বিরল, যা বৈশ্বিক জনসংখ্যার খুবই ছোট অংশের ওপর বর্তায়। তাও কেবল জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি হিসেবে বিবেচিত বা বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের বেলায়।”