Published : 04 May 2025, 05:34 PM
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কের প্রভাব ঠেকাতে আগামী বছর ৪৮০ কোটি ডলার মূল্যের শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা করছেন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে জমা দেওয়া অ্যামাজন কর্তৃপক্ষের নথি অনুসারে, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে ‘১০বি৪-১’ নামের এক ধরনের ট্রেড পরিকল্পনা করেছেন বেজোস। পরিকল্পনা অনুসারে, এখন থেকে ২০২৬ সালের মে মাস পর্যন্ত ধাপে ধাপে অ্যামাজনে সর্বোচ্চ আড়াই কোটি শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন তিনি।
এ ধরনের ট্রেড পরিকল্পনা সাধারণত বড় কোম্পানির কর্মকর্তারা করেন। যাতে আগে থেকেই নির্ধারিত নিয়মে শেয়ার বিক্রি করতে পারেন তারা। ফলে কোম্পানির ভেতরের গোপন তথ্য ব্যবহার করে নিজের লাভের জন্য তারা শেয়ার বিক্রি করছেন– তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠে না বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
২০২১ সালে অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও কোম্পানিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান ও সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার হিসেবে রয়েছেন বেজোস। গত ফেব্রুয়ারিতে অ্যামাজনের ৮৫০ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রির জন্যও একই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন মার্কিন এই প্রযুক্তি বিলিয়নেয়ার।
অ্যামাজনের শেয়ার বিক্রি করে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি পাচ্ছেন তা কোম্পানিটির বাইরে তার অন্যান্য উদ্যোগে খরচ করতে পারেন বেজোস। যার মধ্যে রয়েছে, জলবায়ুতে সংশ্লিষ্ট কাজে অনুদান ও তার মহাকাশ গবেষণা ও রকেট কোম্পানি ব্লু অরিজিন।
নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট যেভাবে বাণিজ্য নীতি বদলাচ্ছেন বা সংশোধন করছেন তাতে বড় কোম্পানিগুলো, বিশেষ করে অ্যামাজন এখন সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলানোর চেষ্টা করছে। এর মধ্যেই বেজোসের এই শেয়ার বিক্রির খবর কোম্পানির জন্য এক জটিল মুহূর্তে এসেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
বৃহস্পতিবার অ্যামাজনের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে উঠে এসেছে, বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় তাদের বিক্রি ৯ শতাংশ বেড়েছে ও অপারেটিং ইনকাম বেড়েছে তিনশ ১০ কোটি ডলার।
আয় বাড়লেও কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন অ্যামাজন। যেমন– মন্দার আশঙ্কা এবং শুল্ক ও বাণিজ্য নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছে অ্যামাজন।
কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী অ্যান্ডি জ্যাসি বলেছেন, “আমরা আসলে কেউই জানি না শুল্ক ঠিক কোথায় গিয়ে স্থির হবে এবং কখন এর নিষ্পত্তি ঘটবে।”
জ্যাসি আরও বলেছেন, কোম্পানিটি দাম কম রাখা ও শুল্কের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসাবে অতিরিক্ত মজুদ রাখার ওপর “সিরিয়াসলি মনোযোগী” হচ্ছে অ্যামাজন।
এসব প্রস্তুতির কারণে অ্যামাজন ও বেজোসকে হোয়াইট হাউসের নজরে বা মার্কিন সরকারের চাপে পড়তে হয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
এ সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন কোম্পানিটির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। কারণ, বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল, অ্যামাজন তাদের ওয়েবসাইটে “শুল্ক বাড়ার কারণে কিছু পণ্যের দামও বাড়ছে” - এমন তথ্য দেখানোর বিষয়টি বিবেচনা করছিল। এই পদক্ষেপকে ‘রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর’ বলে মনে করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।