Published : 03 May 2025, 05:35 PM
আয়ারল্যান্ডের ব্যবহারকারীদের তথ্য চীনে পাঠানোর দায়ে টিকটককে ৪৫ কোটি ২০ লাখ পাউন্ড জরিমানা করেছে আইরিশ ডেটা প্রোটেকশন কমিশন বা ডিপিসি।
দেশটির ব্যবহারকারীদের তথ্য চীনে পাঠানোর মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ’র প্রাইভেসি নিয়ম লঙ্ঘন করেছে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটক। এ কারণে ডিপিসি প্ল্যাটফর্মটিকে জরিমানা করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
ডিপিসি বলেছে, ইইউ’র ‘জেনারেল ডেটা প্রোটেকশন রেগুলেশন’ বা জিডিপিআর লঙ্ঘন করেছে টিকটক। তাদের ব্যবহারকারীদের তথ্য অন্য দেশে পাঠানোর সময় সেই তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি প্ল্যাটফর্মটি। আয়ারল্যান্ড ইইউ’র অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় প্রধান তদারকি কর্তৃপক্ষ হিসেবে টিকটককে এই মোটা অংকের জরিমানা করেছে কমিশন।
ডিপিসি আরও বলেছে, নাগরিকদের ব্যক্তিগত ডেটা কোথায় পাঠানো হচ্ছে সে সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের স্পষ্টভাবে না জানানোর জন্যও ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটিকে জরিমানা করেছে তারা। পাশাপাশি টিকটক যেন ছয় মাসের মধ্যে ইইউর এসব নিয়ম মেনে চলতে শুরু করে সে বিষয়য়েও প্ল্যাটফর্মটিকে নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি।
টিকটক বলেছে, তারা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবে। কারণ এ তদন্তটি মূলত কয়েক বছর আগের একটি নির্দিষ্ট সময়কে ঘিরে করেছে কমিশন। আর ওই সময় প্ল্যাটফর্মটিতে বর্তমান সময়ের মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না।
কোম্পানিটি আরও বলেছে, এরপর ‘প্রজেক্ট ক্লোভার’ নামে বড় এক প্রকল্প শুরু করেছে তারা, যার মূল্য এক হাজার কোটি পাউন্ড। এর মাধ্যমে ইউরোপে নিজস্ব ডেটা সেন্টার তৈরি ও চালু করেছে তারা। যাতে ইউরোপের ব্যবহারকারীদের তথ্য বাইরের দেশে না পাঠাতে হয়।
ডিপিসি’র ডেপুটি কমিশনার গ্রেহাম ডয়েল বলেছেন, “জিডিপিআর অনুসারে ইউরোপের ভেতরে তাদের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের জন্য যে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে সেই তথ্য অন্য দেশে পাঠানো হলেও সেই একই নিরাপত্তা দিতে হবে।
“টিকটক ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল বা ইইএ-এর ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চীনে পাঠিয়েছে এবং সেই তথ্যে দূর থেকে প্রবেশ করেছে চীনা কর্মীরা। তবে টিকটক এটা প্রমাণ করতে বা নিশ্চিত করতে পারেনি যে ওই তথ্য ইইউ’তে যেমন নিরাপদ থাকে চীনেও তেমন নিরাপদই ছিল কি না। এটাই বড় অপরাধ।”
“চীনে এমন আইন রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে দেশটির সরকার চাইলে সহজেই ব্যক্তিগত তথ্য দেখতে পারে। টিকটক জানত যে এই আইনের ঝুঁকি আছে। তবুও তারা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি। অথচ টিকটক নিজেই স্বীকার করেছে এসব চীনা আইন ইইউর তথ্য সুরক্ষা মান থেকে অনেকটা আলাদা।”
চীন-ভিত্তিক বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন সোশাল মিডিয়া জায়ান্টটি কীভাবে ব্যক্তিগত ডেটা পরিচালনা করে তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে নিয়ন্ত্রকদের তদন্তের অধীনে রয়েছে এবং জাতিসংঘেও নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হচ্ছে।
গোটা বিশ্বের নিয়ন্ত্রকদের নজরে রয়েছে চীনের বাইটড্যান্স কোম্পানির মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট টিকটক, বিশেষ করে কীভাবে এটি ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য পরিচালনা করে, সে কারণে।
যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে টিকটক।