লিপস্টিক লতা গণে প্রায় ১৮০টি উদ্ভিদ রয়েছে। আর এর এমন নামকরণ হয়েছে এদের নল আকৃতির ফুলের কারণে।
Published : 17 Dec 2024, 02:55 PM
অজানা এক প্রজাতির লিপস্টিক লতার সন্ধান পেয়েছেন উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা। এ আবিষ্কার হয়েছে ফিলিপিন্সের রেইনফরেস্টে।
দেশটির সবচেয়ে বড় দ্বীপ লুজনের ‘বারানগাই বালবালাসাং’ রেইনফরেস্টের মধ্য দিয়ে কয়েকদিন ধরে ট্রেকিং করার পর এই উদ্ভিদটি ও এর উজ্জ্বল রঙের বিভিন্ন ফুল খুঁজে পান উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা।
ট্রেকটি ছিল ‘ইউনিভার্সিটি অফ ফিলিপিন্স লস বানোস’ ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড’-এর গবেষকদের মধ্যকার এক যৌথ অভিযানের অংশ, যেখানে তাদের সহায়তা করেছে স্থানীয় ‘বানাও’ গোত্র।
“আমরা ঘন গাছপালার মধ্য দিয়ে ট্রেকিং করছিলাম। এ সময় হঠাৎ দেখি আমাদের মাথার ওপর ঝুলছে একটি উজ্জ্বল সাদা ও বেগুনি রঙের ছোট ছোট দাগওয়ালা ফুল,” বলেছেন অক্সফোর্ডের ড. ক্রিস থোরোগুড।
“তাৎক্ষণিকভাবেই আমাদের মনে হয়েছে, বিজ্ঞানের কাছে একেবারে নতুন এই ফুল। এর মতো সুন্দর প্রজাতির উদ্ভিদ এখনও বিজ্ঞানের কাছে নিজের নাম লেখানোর অপেক্ষায় রয়েছে– এ বিষয়টি খুবই রোমাঞ্চকর।”
গবেষক দলটি উদ্ভিদটির নাম দিয়েছেন ‘এশিন্যান্থাস পেন্টাট্রাইকোমাটাস’, এখানে ‘এস্কিনান্থাস’ হচ্ছে লিপস্টিক লতার জেনাস বা গণ নাম। অন্যদিকে এর নামের প্রজাতি অংশটি এসেছে ফুলের গলা থেকে বেড়ে ওঠা পাঁচ বা পেন্টা ট্রাইকোমস বা ট্রাইকোমেটাস থেকে।
এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নর্ডিক জার্নাল অফ বটানি’তে।
“এ আবিষ্কার আমরা কেবল বানাও বনের অনন্য সৌন্দর্যকেই উৎসর্গ করছি না, বরং বানাও গোত্রের মানুষজনকেও উৎসর্গ করছি। কারণ, তারাই এদের যত্ন ও পরিচর্যার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ এই বনের মধ্যে থাকা বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ সংরক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন,” বলেছেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ ফিলিপিন্স লস বানোস’-এর উদ্ভিদবিদ অ্যাড্রিয়ান টোবিয়াস।
“এরকম পরিবেশে এস্কিনান্থাসকে খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারটি বেশ বিরল। বিশেষ করে তরুণ উদ্ভিদবিদ হিসাবে আমরা এমন স্বতন্ত্র কিছু আবিষ্কার করে রোমাঞ্চিত হয়েছি।”
এই অভিযাত্রী দলের নেতৃত্বে ছিলেন ফিলিপিন্সের কলিঙ্গার এক প্রত্যন্ত রেইন ফরেস্টে ‘বানাও’ সম্প্রদায়ের এক সদস্য।
লিপস্টিক লতা গণে প্রায় ১৮০টি উদ্ভিদ রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট কসমস। এর এমন নামকরণ হয়েছে এদের নল আকৃতির ফুলের কারণে।
“জীববৈচিত্র্যকে বোঝা ও সুরক্ষার জন্য এসব ‘জানা অজানা’ প্রজাতির উদ্ভিদ খুঁজে বের করা গুরুত্বপূর্ণ। আর এ বিষয়টিই সংরক্ষণ বিজ্ঞানের জন্য এ ধরনের আবিষ্কারকে এতো গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে,” বলেছেন থোরোগুড।