বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় বেশ কিছু ডিভাইস অ্যাপলের হাত ধরেই এসেছে। সে বিষয়টি বিবেচনায় নিলে, কোম্পানির বিভিন্ন নতুন এআই ফিচারের কার্যকারিতা আরও ভালো হওয়া উচিৎ।
Published : 09 Jun 2024, 06:33 PM
চটকদার নয়, বরং অ্যাপলের প্রয়োজন কার্যকর এআই তৈরির দিকে নজর দেওয়া, সম্প্রতি এমন পরামর্শ উঠে এসেছে এক প্রতিবেদনে।
এর আগে নিজস্ব ডেভেলপার কনফারেন্সে জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তির পসরা সাজিয়েছিল গুগল ও মাইক্রোসফট। আর এখন সকলের নজর সামনের সপ্তাহে হতে যাওয়া অ্যাপলের আয়োজন ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডেভলপার্স কনফারেন্স’-এর দিকে, যেখানে টেক জায়ান্ট কোম্পানিটির নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা ‘অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স’-এর অভিষেক ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এআই প্রতিযোগিতার দৌড়ে অন্যদের তুলনায় পিছিয়ে থাকায় এরইমধ্যে অনেক চাপের মুখে আছে যুক্তরাষ্ট্রের কুপারটিনো শহরভিত্তিক কোম্পানিটি। তাই, ভক্ত এবং বিনিয়োগকারীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে নতুন কিছু আনার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছে কোম্পানি নিজেও।
নির্ভরযোগ্যতা
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় বেশ কিছু ডিভাইস অ্যাপলের হাত ধরেই এসেছে। সে বিষয়টি বিবেচনায় নিলে, কোম্পানির বিভিন্ন নতুন এআই ফিচারের কার্যকারিতা অন্যদের চেয়ে ভালো হওয়া উচিৎ।
এআই চালিত অনেক ফিচারই নির্ভর করে থাকে ক্লাউড থেকে জবাব বা ইনপুট ফিরে পাওয়ার ওপর। অ্যাপল যদি নিজস্ব ডিভাইসে কিছু উপকারী ফিচার চালু করতে পারে, তবে ব্যবহারকারীরা হয়ত বিভিন্ন ক্লাউডভিত্তিক এআই টুল থেকে নির্ভরযোগ্যতা কমিয়ে কোম্পানির নতুন এআই ব্যবস্থায় যোগ দিতে পারেন। আর এমন সম্ভাবনাময় ফিচারগুলো মানানসই হতে পারে ‘ভয়েস মেমো’ ও ‘নোটস’-এর মতো অ্যাপগুলোয়।
প্রযুক্তি সাইট টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবারের আয়োজনে অ্যাপল হয়ত নোটিফিকেশনের সারসংক্ষেপ, ওয়েব পেজ, মৌলিক টেক্সট তৈরি ও ছবি এডিট করার মতো ফিচার চালু করবে। তবে, এ ধরনের হাজার হাজার ব্রাউজার, নোট নেওয়ার বা ছবি এডিট করার অ্যাপ এরইমধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। তাই ফিচারগুলো যতটা সম্ভব মসৃণ ও নির্বিঘ্নে ব্যবহার করা যায়, অ্যাপলকে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে যাতে সেগুলোকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে তোলা যায়।
প্রাইভেসি
অ্যাপল সম্ভবত নিজেদের ‘প্রাইভেসি-ফার্স্ট’ নীতিমালাটি আরও জোরদার করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাই সিরি অথবা এআই চালিত বিভিন্ন ফিচার বিনামূল্যেই ব্যবহারের সুবিধা নাও মিলতে পারে।
মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, এবারের আয়োজনে শুধু ‘আইফোন ১৫ প্রো’, এম১ বা পরবর্তী চিপ থাকা আইপ্যাড বা ম্যাক ডিভাইসে এআই ফিচার যোগ করা হবে। এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, এআই প্রতিযোগিতার চলমান দৌড়ে পিছিয়ে থাকার পরও অ্যাপল এখনও সতর্কতা অবলম্বন করছে যাতে কোম্পানিকে ব্যবহারকারীর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখে না পড়তে হয়।
সম্প্রতি আইপ্যাডের ‘ক্রাশ’ বিজ্ঞাপনের জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছিল টেক জায়ান্ট কোম্পানিটি, যেখানে একটি হাইড্রোলিক প্রেসের নিচে বিভিন্ন সৃজনশীল যন্ত্রপাতি ধ্বংস করার দৃশ্য দেখা গিয়েছে।
অ্যাপলের এ বিজ্ঞাপনকে ‘নির্মাতাদের অবমূল্যায়ন এবং তাদের বিভিন্ন টুল ও শিল্পকে এক পাতলা পুঁজিবাদী প্যাকেজের মোড়কে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা’ হিসেবে দেখেছেন অনেকেই। আর এরইমধ্যে এআই প্রযুক্তি নিয়ে দুর্নাম আছে নির্মাতাদের মধ্যে। সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অ্যাপল আবারও হয়ত একে প্রেক্ষাপটে নিয়ে আসতে চাইবে না। তাই কোম্পানি সম্ভবত বিতর্ক নেই এমন কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে টেকক্রাঞ্চ।
এআইচালিত ফিচার নিয়ে অনেক কোম্পানি বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিলেও সেগুলোর ভুল বা পক্ষপাতমূলক ফলাফল ব্যবহারকারীদের হতাশ করে। এমনকি গুগল ও ওপেনএআই-এর মতো কোম্পানিও বিভিন্ন ত্রুটি বা কপিরাইট জটিলতার কারণে নিজেদের এআই ফিচার নিয়ে আবারও কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। সে বিষয়টি বিবেচনায় নিলে, অ্যাপলও সম্ভবত কনটেন্ট তৈরির জন্য কোনও ধরনের লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের ওপর নির্ভর করতে চাইবে না।