এদিন যখন লেনদেন শুরু হয়, তখন পুঁজিবাজার উন্নয়নে অংশীজনদের নিয়ে সভা করছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
Published : 07 Jan 2025, 07:45 PM
একদিন পরই নিম্নমুখী প্রবণতায় ফিরে গেছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধন সূচক; তবে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে ৪০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় যখন লেনদেন শুরু হয়, তখন পুঁজিবাজার উন্নয়নে অংশীজনদের নিয়ে সভা করছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সভা শেষ হওয়ার সময়, অর্থাৎ বেলা সাড়ে ১১টায় আগের দিনের চেয়ে ২৭ পয়েন্ট বেড়ে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স উঠে যায় ৫ হাজার ২২৫ পয়েন্টে। মাঝখানে সূচক একবার ৩৪ পয়েন্টও বেড়েছিল।
সভা শেষ করে অর্থ উপদেষ্টা চলে যাওয়ার পর থেকে সূচক কমতে থাকে। শেষ বেলায় আগের দিনের চেয়ে সূচক হারায় ৮ পয়েন্ট। লেনদেন শেষ হয় ৫ হাজার ১৯০ পয়েন্টে। আগের দিন সূচক ছিল ৫ হাজার ১৯৮ পয়েন্ট।
মঙ্গলবার রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএসই কার্যালয়ে এমন সময়ে অর্থ উপদেষ্টা সভায় বসেন, যখন পুঁজিবাজারের লেনদেন বেশির ভাগ দিনই তিন থেকে সাড়ে তিনশ কোটি টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে।
সভা শেষে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘এখন শুধু সংস্কার হচ্ছে। আমরা নতুন কোনো নীতিমালা করছি না। অতীতের মত এখন কাউকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। কোনো শেয়ারের দর বাড়িয়ে দিতে আগে পলিসি করা হত, কার শেয়ারটা কে বাড়াবে তা নিয়ে, আপনারা সবাই তা জানেন। এখন এসব হবে না।’’
সভায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, ডিএসই চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান আবু আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড, সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড ও ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের প্রতিনিধিরাও ছিলেন সেখানে।
পুঁজিবাজার নিয়ে এমন সভার খবরে সূচকের উত্থান দেখা দেয় সকাল থেকে। কিন্তু সভা থেকে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন কোনো খবর আসেনি বিনিয়োগকারীদের কাছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “দীর্ঘ মেয়াদে পুঁজিবাজার উন্নয়নে অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকমুখী হওয়া এবং ভালো মানের সরকারি-বেসরকারি করপোরেট প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্তি করতে সরকারিভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”
সভায় বিভিন্ন অংশীজনরা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। বাজার সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে বহুজাতিক কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে প্রণোদনা দেওয়ার পরামর্শ আসে।
তবে এসব আলোচনা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উৎসাহী করতে পারেনি। যে কারণে দিন শেষে বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকেনি বলে মনে করছেন অনেক বিনিয়োগকারী।
ডিএসইর লেনদেন তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ব্যাংক, বীমা, বস্ত্র, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়নসহ সব খাতের কোম্পানির শেয়ার মিশ্র ধারায় লেনদেন হয়।
এদিন লেনদেন হওয়া ৩৯৯ কোম্পানির মধ্যে দর বাড়ে ১৬১টির, কমে ১৬৫টির ও আগের দরে হাতবদল হয় ৭৩টির শেয়ার। মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪২৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৩৬২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
এর মধ্য দিয়ে ১১ কার্যদিবস পর লেনদেন চারশ কোটি পার করল ডিএসই। সবশেষ ৪০০ কোটি টাকার ওপর লেনদেন হয় গত ১৮ ডিসেম্বর। মঙ্গলবার মোট লেনদেনের ৩৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা হয় ব্লক মার্কেটে।
এদিন বেচাবিক্রিতে সর্বোচ্চ অবদান রাখে ব্যাংক খাত। এরপরই ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত।
সবচেয়ে বেশি শেয়ার দর বাড়ে ড্রাগন সোয়েটার, জাহিন স্পিনিং মিল ও সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের। বিপরীত চিত্র ছিল ফাইন ফুডস, আনলিমা ইয়ার্ন ও জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস লিমিটেডের শেয়ার দরে।