“কাগজপত্র না দেখে রক্ত পুশ করা ঠিক হয়নি; এটি একটি মারাত্মক ভুল।”
Published : 19 Apr 2025, 02:48 PM
মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘ভুল রক্ত পুশ করায়’ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে সদর থানা ওসি এস এম আমানউল্লাহ জানান।
নিহত মো. বিল্লাল (৬৫) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার খাগড়া কুড়ি গ্রামের বাসিন্দা।
স্বজনদের দাবি, বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে বিল্লাল মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে ‘ও’ পজিটিভ রক্তের পরিবর্তে ‘ভুল করে’ ‘বি’ পজিটিভ রক্ত পুশ করার পর রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
বিল্লালের নাতিন জামাই জিসান অভিযোগ করে বলেন, “হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে আমাদের কাছে রক্ত দেওয়া হয়েছে। আমরা সেটি এনে নার্সের কাছে দেওয়ার পর নার্সরা বলে ডাক্তারের অর্ডারপত্র লাগবে। পরে ডাক্তার রক্ত দেখে অর্ডারপত্র দিলে নার্সরা রোগীর শরীরে সেটি পুশ করেছে। এরপর থেকেই রোগীর সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়।
“আমরা তখনো বুঝিনি যে, রোগীকে ভুল রক্ত দেওয়া হয়েছে। পরে বাইরের একজন লোক দেখে আমাদের বলেন, ‘রোগীকে ভুল রক্ত দেওয়া হচ্ছে’। এরপর আমরা হাসপাতালের নার্স ও ডাক্তারদের অনেক ডাকাডাকি করলেও তারা এসে রোগীর কোনো চিকিৎসা দেয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “তারা তড়িঘড়ি করে সেই রক্তের ব্যাগ ও রক্ত সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে চলে যায়। পরে রাত ৮টার দিকে আরেকজন ডাক্তার এসে রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। আমরা বলেছি, রোগীকে ঢাকায় নেওয়ার মত অবস্থা আমাদের নেই। তারপর তারা রোগীকে আর কোনো চিকিৎসা দেয়নি।”
মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, “বিকাল ৪টার দিকে আমি ছিলাম না। ডিউটিতে ছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ঐশী ও মেডিকেল অফিসার নূরজাহান। সেসময় রোগীর শরীরে ‘ও’ পজিটিভ রক্তের পরিবর্তে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত পুশ করা হয়েছে। আমি ডিউটি শুরু করার পর যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছি। এরপরও রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “রোগীর শরীরে খুববেশি রক্ত যায়নি। তবে কাগজপত্র না দেখে রক্ত পুশ করা ঠিক হয়নি। এটি একটি মারাত্মক ভুল।”
রোগীর মৃত্যু সনদে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওই চিকিৎসক বলেন, “শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা উল্লেখ করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক ঐশী ও মেডিকেল অফিসার নূরজাহানে মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
ওসি আমানউল্লাহ বলেন, “এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি।”