ইউভেন্তুসে জিতেও পিএসজির হতাশা, অবিশ্বাস্য নাটকীয়তায় গ্রুপ সেরা বেনফিকা

অন্য ম্যাচে অসাধারণ ফুটবল উপহার দিয়ে প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে গ্রুপ সেরার লড়াইয়ে পিএসজিকে টপকে গেছে বেনফিকা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Nov 2022, 09:55 PM
Updated : 2 Nov 2022, 09:55 PM

গ্রুপ সেরা হয়ে নকআউট পর্বে যেতে জিততেই হতো পিএসজিকে। ইউভেন্তুসের কড়া চ্যালেঞ্জ সামলে জয়ও পেল তারা। তারপরও দিনশেষে ভর করল একরাশ হতাশা! একই সময়ে শুরু অন্য ম্যাচে যে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সব হিসাব-নিকাশ এলোমেলো করে দিয়েছে বেনফিকা। ম্যাকাবি খাইফার জালে গোল উৎসব করার মধ্য দিয়ে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের টপকে গ্রুপ সেরা হয়েছে তারা।

Also Read: চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় উঠল যারা

Also Read: আলভারেসের নৈপুণ্যে সিটির দুর্দান্ত জয়

Also Read: গ্রুপ সেরা হয়েই শেষ ষোলোয় রিয়াল

তুরিনের আলিয়াঞ্জ স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে গ্রুপ পর্বের শেষ দিনে ২-১ গোলে জিতেছে পিএসজি। কিলিয়ান এমবাপের গোলে সফরকারীরা এগিয়ে যাওয়ার পর প্রথমার্ধেই সমতা টানেন লিওনার্দো বোনুচ্চি। পরে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমেই জয়সূচক গোলটি করেন নুনো মেন্দেস।

ইসরায়েলের ম্যাকাবি খাইফার মাঠে অনুষ্ঠিত আরেক ম্যাচে বিরতিতে ম্যাচের ফলাফল ছিল ১-১। তখন পিএসজি-ইউভেন্তুস ম্যাচেও তাই। ওই অবস্থায় ম্যাচ শেষ হলেও গ্রুপ সেরা প্যারিসের দলটি।

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বেনফিকা হয়ে ওঠে আগ্রাসী। যেন গোল উৎসবে মেতে ওঠে তারা। ম্যাচের সময় যখন ৯০ মিনিটে গড়াল, তখন সেই ম্যাচে বেনফিকা ৫-১ এ এগিয়ে। তখনও পিএসজি টেবিলের শীর্ষে। যোগ করা সময়ে আরেক গোল করে বসে পর্তুগিজ ক্লাবটি, আর তাতেই পাল্টে যায় পিএসজির সব সমীকরণ।

খাইফাকে ৬-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় বেনফিকা।

পয়েন্ট টেবিলে বেনফিকা ও পিএসজির লড়াইটাও অবিশ্বাস্য। দুই দলের পয়েন্ট সমান ১৪। মুখোমুখি লড়াইয়ে দুটি ম্যাচই হয়েছে ১-১। ছয় ম্যাচ শেষে গোল ব্যবধান শূন্য, দুটি দলই গোল করেছে ১৬টি করে, গোল হজম করেছে সমান সাতটি করে।

সবখানে সমতার পর শেষ পর্যন্ত বেশি অ্যাওয়ে গোল করায় সেরা বেনফিকা।

কার্ডের নিষেধাজ্ঞায় এই ম্যাচে ছিলেন না নেইমার। তাতে পিএসজির আক্রমণে ঘাটতি তৈরি হলেও এমবাপের নৈপুণ্যে গোল শুরুতেই পেয়ে যায় দলটি।

ত্রয়োদশ মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে ওঠা আক্রমণে লিওনেল মেসির পাস ধরে ডান দিকে এগিয়ে যান এমবাপে। তার জার্সি টেনে ধরলেও আটকাতে পারেননি ডিফেন্ডার ফেদেরিকো গাত্তি। আরেকজনের বাধা এড়িয়ে বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শট নেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। পোস্টে লেগে বল খুঁজে নেয় ঠিকানা।

আসরে ৬ ম্যাচের ৫টিতেই জালের দেখা পেলেন এমবাপে। এটি তার সপ্তম গোল।

ইউভেন্তুস সমানতালে আক্রমণ করলেও নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না। পোলিশ ফরোয়ার্ড আর্কাদিউস মিলিক ও ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড মানুয়েল লোকাতেল্লি দুবার দূরপাল্লার শটে চেষ্টা চালান, তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। ২২তম মিনিটে একইরকম চেষ্টা করেন হুয়ান কুয়াদরাদো, তার শটও পোস্টের বাইরে যায়।

একটু পর প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে জোরাল শট নেন এমবাপে। ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে যায় বল। ৩৪তম মিনিটে বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে শট নিতে একটু দেরি করে ফেলেন আলেক্স সান্দ্রো। পরবর্তীতে তিনি শট নিলেও স্লাইড ট্যাকলে রুখে দেন ডিফেন্ডার মার্কিনিয়োস।

৩৯তম মিনিটে সাফল্যের দেখা পায় স্বাগতিকরা। সতীর্থের বাড়ানো ক্রসে বক্সে ডাইভিং হেডে গোলমুখে বল বাড়ান কুয়াদরাদো, ঝাঁপিয়ে পড়েও আটকাতে পারেননি গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা। স্লাইডে বিনা বাধায় জালে বল পাঠান বোনুচ্চি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে অনেকটা সময় কেটে যায় দুই দলের সাদামাটা ফুটবলে। ৬০তম মিনিটে মেসি ভালো একটা পাস বাড়ান এমবাপেকে; কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নেন তিনি।

৬৮তম মিনিটে হুয়ান বের্নাতকে তুলে মেন্দেসকে নামান পিএসজি কোচ। আর পরের মিনিটেই দারুণ নৈপুণ্যে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পর্তুগিজ লেফট-ব্যাক। এমবাপের থ্রু পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে দারুণ ক্ষীপ্রতায় কুয়াদরাদোকে পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে নিচু কোনাকুনি শটে জয়সূচক গোলটি করেন তিনি।

ছয় ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরে বিদায় নিল ইউভেন্তুস। ৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘এইচ’ গ্রুপে তৃতীয় হয়ে ইউরোপা লিগে খেলবে তারা। তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে খাইফা।

শেষ ষোলোয় মিলান

বাঁচা-মরার লড়াইয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে এসি মিলান। সালসবুর্ককে উড়িয়ে ‘ই’ গ্রুপের রানার্সআপ হয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে ইতালিয়ান ক্লাবটি।

২০১৩-১৪ মৌসুমের পর এই প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে উঠল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাতবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন মিলান।

আরেক ম্যাচে চেলসি নিজেদের মাঠে ২-১ গোলে হারিয়েছে দিনামো জাগরেবকে।

ছয় ম্যাচে ৪ জয় ও ১ ড্রয়ে চেলসির পয়েন্ট ১৩। মিলানের পয়েন্ট ১০।

৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় সালসবুর্ক খেলবে ইউরোপা লিগে।