বিশ্বকাপ রাঙাতে উন্মুখ কাতার

পেছনের সারির দল হলেও আয়োজক বলে কাতারের প্রত্যাশা অনেক বেশি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2022, 09:19 AM
Updated : 12 Nov 2022, 09:19 AM

এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন কাতার, দেশটি এবারের বিশ্বকাপের আয়োজক, সবার চেয়ে বেশি প্রস্তুত দলও কি? তবে আপাতত এতটুকু বলা যায়, ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক হতে, আসরটি আয়োজন করতে কাতারকে লড়তে হয়েছে অনেক, হচ্ছেও। জাতীয় দলও গেছে নানা বাঁকবদলের মধ্যে দিয়ে, সব মিলিয়ে এবারের টুর্নামেন্টটি তাদের জন্য হতে পারে ঐতিহাসিক।

বিশ্বকাপের ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকাই একমাত্র দল, স্বাগতিক হয়েও গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার হতাশার রেকর্ড যাদের সঙ্গী। কাতার নিশ্চিতভাবে চাইবে না, এ পাতায় নিজেদেরকে দেখতে। কিন্তু, এবারের আসরে অংশ নেওয়া ৩২ দলের মধ্যে যে সৌদি আরব ও ঘানাই কেবল ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে তাদের চেয়ে পিছিয়ে। তাই দক্ষিণ আফ্রিকার পরিণতি হওয়ার শঙ্কা কাতারের বেলায় কম নয়।

মহাদেশীয় পর্যায়ে কাতার যে শক্তিধর দল, তাও নয়। ২০১৯ সালের আগ পর্যন্ত কখনও এএফসি এশিয়ান কাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল পেরোতে পারেনি তারা। কিন্তু কোচ ফেলিক্স সানচেজের হাত ধরে দলটি এশিয়ান কাপ জিতে জানান দেয় নিজেদের সামর্থ্যের। ওই আসরে ১৬ গোল দিয়ে মাত্র ১টি হজম করেছিল তারা। দারুণ পথচলায় চারবারের চ্যাম্পিয়ন সৌদি আরব, ইরাক, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানকে হারিয়ে জিতে নেয় ট্রফি।

সানচেসের কৌশল এবং মানসিকতা

বার্সেলোনার লা মেসিয়া একাডেমিতে কাজ করার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ সানচেস কাতারের এসপায়ার একাডেমিতে কাজ শুরু করেন ২০০৬ সালে। দায়িত্ব নেন এক ঝাঁক টগবগে তরুণ ফুটবলারকে গড়ে তোলার এবং তাদের পথ দেখানোর। সেই ছেলেদের হাত ধরেই আরব দেশটি এবারের বিশ্বকাপে ইতিহাস লিখতে উন্মুখ হয়ে আছে।

ধীরে কিন্তু দৃঢ়তায়, নিজের মতো করে দলটা গড়েছেন সানচেস। সেরার পথে এগিয়ে চলার মাঝেই ২০১৪ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়ান কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তার দল। যোগ হয়েছে আরও অনেক অভিজ্ঞতা। এখন বিশ্ব মঞ্চে আলো ছড়ানোর চ্যালেঞ্জ।

গোলরক্ষককে নিরাপত্তা দিতে পাঁচ ডিফেন্ডারকে সামনে রাখার ছক সানচেসের। মাঝমাঠ ও আক্রমণভাগ নিয়ে নানা পরিকল্পনায় কাজ করেছেন, যদিও আকরাম আফিফ ও আলমোয়েজ আলির মতো নির্ভরযোগ্য ফরোয়ার্ড আছে তার আক্রমণভাগে। এ দুজন জোট বেঁধে শাণাতে পারেন আক্রমণ, আবার এমনও হতে পারে লাইন ধরে আক্রমণ শাণাচ্ছেন আলি, আফিফ খেলছেন বাঁ দিকে।

আলমোয়েজ আলির হাতে ‘চাবি’

‘এ’ গ্রুপে একুয়েডর, সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে আছে কাতার। স্প্যানিশ কোচের রক্ষণাত্মক পরিকল্পনার কারণে তারা তেড়েফুঁড়ে বেরিয়ে এসে খেলবে না, তবে গোলমুখে পারদর্শী আলিকে খেলার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার দিকে বাড়তি জোর থাকবে দলের।

২৬ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড বর্তমানে কাতারের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছেন। মানসুর মুফতাহের মতো তার গোলও ৪২টি। ২০১৯ এশিয়ান কাপে ৯টি এবং ২০২১ সালের কনকাকাফ গোল্ড কাপে চার গোল করে মেক্সিকোর লুইস এরনান্দেসের পর দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে দুটি ভিন্ন মহাদেশীয় প্রতিযোগিতার সবোচ্চ গোলদাতা হওয়ার বিরল মুকুটও তার মাথায়।

চোখ থাকবে হোমাম আল-আমিনে

যে ক্ষীপ্রতায় তিনি লেফট-উইং ধরে আক্রমণে উঠতে পারেন, ততটাই দ্রুততায় আগামীর তারকা হয়ে উঠেছেন আল-আমিনে।

এসপায়ার একাডেমি থেকে উঠে আসা এই ফুল-ব্যাক আল ঘারাফাতে যোগ দেওয়ার আগে কাজ করেছেন বেলজিয়ামের ইউপিনে। ঘারাফাতে যোগ দেওয়ার পর আল- আমিনের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে কোচ ২০১৮ সালের এএফসির বর্ষসেরা খেলোয়াড় আব্দেলকরিম হাসানকে উইং ব্যাক পজিশন থেকে সরিয়ে তাকে সুযোগ দিতে বাধ্য হন।

২৩ বছর বয়সী আল-আমিন এরই মধ্যে কাতারের হয়ে ২০টির বেশি ম্যাচ খেলেছেন। বাঁ দিকের রক্ষণে সামর্থ্যের সবটুকু নিংড়ে দিয়ে নিজেকে প্রমাণে মরিয়া থাকবেন তিনি।