আয়োজক স্বত্ব কাতারের পাওয়ার পেছনের কারণ রাজনৈতিক ও অর্থনেতিক, জানালেন সাবেক ফিফা সভাপতি।
Published : 08 Nov 2022, 10:28 PM
ছোট্ট দেশ কাতারের বিশ্বকাপ স্বত্ব পাওয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার যেন কোনো শেষ নেই। দেশটিতে অভিবাসী শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সমকামীদের ওপর কর্তৃপক্ষের বিরূপ আচরণ নিয়ে আগে থেকেই চলছে বিতর্ক। পুরনো আরেকটি বিষয় তুলে ধরে সেই আগুনে যেন নতুন করে ঘি ঢাললেন জেপ ব্লাটার।
আগেও কয়েকবার তিনি বলেছেন, কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। একই কথা বললেন আবারও। সঙ্গে জানালেন, কাতারের বিশ্বকাপ স্বত্ব পাওয়ার পেছনের কিছু কারণও।
বিশ্বকাপের ২২ তম আসরের পর্দা উঠবে আগামী ২০ নভেম্বর। এর ১১ দিন বাকি থাকতে সুইজারল্যান্ডের ফরাসি ভাষার পত্রিকা ট্রিবিউন দা জেনিভে সোমবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে ব্লাটার বলেন, “কাতারে বিশ্বকাপ ভুল সিদ্ধান্ত।“
“(ওই সময়ের উয়েফা সভাপতি) মিশেল প্লাতিনি ও তার দলের চারটি ভোটের জোরে বিশ্বকাপ যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার বদলে কাতারে চলে যায়। এবং এটাই সত্যি।”
“কাতার খুব ছোট একটা দেশ। ফুটবল ও বিশ্বকাপ সেখানে অনেক বড়।”
প্লাতিনি ও তার দল কেন কাতারের পক্ষ নিয়েছিল, সেই কারণও ব্যাখ্যা করেন ব্লাটার। তিনি জানান, ওই সময়ের ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি প্লাতিনিকে চাপ দিচ্ছিলেন যেন ইউরোপীয় অঞ্চলের ভোট কাতারের পক্ষে যায়।
“৬ মাস পর, ফ্রান্সের কাছ থেকে এক কোটি ৪৬ লাখ ডলার মূল্যের যুদ্ধবিমান কেনে কাতার। সবকিছুই ছিল অর্থ সংক্রান্ত।”
ফিফায় দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে ২০১৫ সালের জুনে একরকম বাধ্য হয়ে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন ব্লাটার। একই কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে উয়েফা থেকে পদচ্যুত হয়েছিলেন প্লাতিনি। পরে তারা নিষেধাজ্ঞার শাস্তিও পান।
তবে দীর্ঘদিন ধরে চলা মামলায় গত জুলাইয়ে দুজনই নির্দোষ প্রমাণিত হন।
ব্লাটার আরও জানান, রাশিয়ার পর এই ২০২২ এর আসর যুক্তরাষ্ট্রে হওয়ার পরিককল্পনা ছিল।
“এই দুই আসরের (২০১৮ ও ২০২২) প্রথমটি রাশিয়ায় এবং পরেরটি যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজনের বিষয়ে (অলিখিত) চুক্তি ছিল। এটা বেশ ভালোই হতো, বছরের পর বছর ধরে চলে আসা দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পরপর দুটি বিশ্বকাপ আয়োজন করত।”
তখন রাশিয়াকে ২০১৮ সালের স্বাগতিক করা নিয়েও সমালোচনা হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে কোনো আক্ষেপ নেই ব্লাটারের।
“তারা ভালো আয়োজক ছিল।”
ফুটবল বিশ্বকাপ সাধারণত হয়ে থাকে জুন-জুলাইয়ে। কিন্তু বছরের এই সময়ে কাতারে প্রচণ্ড গরম। তাই বাধ্য হয়েই এবার বিশ্বকাপ হচ্ছে নভেম্বর-ডিসেম্বরে।