বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা সামনে তুলে এনেছে উল্লেখযোগ্য কিছু পারফরম্যান্স।
Published : 31 Dec 2023, 06:09 PM
ক্যারিয়ারের দুই প্রান্তে থাকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও কেন্দ্রি পায়েস গড়েছেন দারুণ দুই কীর্তি। ছন্দে থাকা আর্লিং হলান্ড ক্রমেই উঠছেন নতুন উচ্চতায়। জার্মান ফুটবলে গিয়ে যেন নিজেকে নতুন করে চেনাচ্ছেন হ্যারি কেইন। ফুটবলের ঘটনাবহুল আরেকটি বছরকে তারা রাঙিয়েছেন আপন রঙে।
পেছনে পড়ে যাচ্ছে ২০২৩, দুয়ারে দাঁড়িয়ে ২০২৪। বছরের শেষটায় এসে চলছে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব-নিকাশ। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা সামনে তুলে এনেছে উল্লেখযোগ্য কিছু পারফরম্যান্স।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
৬২:
স্পেনের নারী ফুটবলের শীর্ষ প্রতিযোগিতা ‘লিগা এফ’-এ টানা ৬২ ম্যাচ জয়ের অবিশ্বাস্য কীর্তি গড়ে বার্সেলোনা; পুরুষ কিংবা নারী, ইউরোপিয়ান ফুটবলে যেকোনো লিগেই যা অনায়াসে রেকর্ড। গত মে মাসে সেভিয়ার সঙ্গে ১-১ ড্রয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয় তাদের সেই স্বপ্নময় যাত্রা।
রেকর্ডময় ওই ৬২ ম্যাচের পথচলায় বার্সেলোনার মেয়েরা ২৯৭টি গোল করে, বিপরীতে হজম করে কেবল ২২টি।
পরের মাসেই মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে দ্বিতীয় দল হিসেবে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধে ২২ মিনিটে তিন গোল করে শিরোপা ঘরে তুলেছিল তারা।
৫৪:
বয়স ৩৯ ছুঁইছুঁই। এই বয়সে গতি কিছুটা কমলেও ক্ষুধা একদমই কমেনি ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর। যার প্রমাণ পড়েছে তার সারা বছরের গোলসংখ্যায়। গোলের হিসাবে এমবাপে-হলান্ডদের মতো তরুণ তারকারাও পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের পেছনে পড়ে গেছেন!
২০২৩ সালে ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ৫৪টি গোল করেছেন রোনালদো, ৫৯ ম্যাচ খেলে। ৫৩ ম্যাচে ৫২ গোল করে তার পরেই আছেন কিলিয়ান এমবাপে। পরের দুটি স্থানে হ্যারি কেইন (৫৭ ম্যাচে ৫২ গোল) ও আর্লিং হলান্ড (৬০ ম্যাচে ৫০ গোল)
৫০:
ম্যানচেস্টার সিটির জার্সিতে শুরু থেকেই দুর্দান্ত সব পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে চলেছেন আর্লিং হলান্ড, যার প্রভাব পড়েছে রেকর্ড বইয়েও। বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে গত বছরের গ্রীষ্মে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে পাড়ি জমানোর পর অসংখ্য রেকর্ড ও কীর্তি গড়েছেন নরওয়ের এই তারকা।
তেমনি তিনি গুঁড়িয়ে দিয়েছেন প্রিমিয়ার লিগে কম ম্যাচ খেলে ৫০ গোল করার রেকর্ড। রেকর্ডটি আগে ছিল অ্যান্ডি কোলের; ৬৫ ম্যাচ খেলে গোলের হাফ-সেঞ্চুরি করেছিলেন সাবেক এই ইংলিশ স্ট্রাইকার। ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকার হলান্ড ৪৮ ম্যাচেই ৫০ গোল করেন।
১৬:
কেবল ১৬ বছর ২২ দিন বয়সে ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে গোল করে টুর্নামেন্টের ৪৬ বছরের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা বনে যান একুয়েডরের কেন্দ্রি পায়েস। এর ঠিক ১০৯ দিন পর জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন তিনি; তাতে দক্ষিণ আমেরিকার কোনো দেশের মূল দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয় তার।
কনমেবলের কোনো দেশের মূল দলের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে খেলার রেকর্ডটি কিংবদন্তি দিয়েগো মারাদোনার। পায়েসের চেয়ে ১১ দিন কম বয়সে ১৯৭৭ সালে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল এই ফুটবল জাদুকরের।
জাতীয় দলে অভিষেকের ৩০ দিন পর পায়েস ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার কীর্তি গড়েন।
আর নারী ফিফা বিশ্বকাপে গত জুলাইয়ে ১৬ বছর ২৬ দিন বয়সে গোল করে এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা বনে যান দক্ষিণ কোরিয়ার কেইসি ফেয়ার।
১৫:
এই বছরে বেলজিয়ামের হয়ে ৯ ম্যাচ খেলেই ১৫টি গোল করেছেন রোমেলু লুকাকু, এতে ২০২৩ সালে পুরুষ আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গেছেন অভিজ্ঞ এই স্ট্রাইকার। এই ১৫ গোলের ১৪টিই তিনি করেছেন ইউরো-২০২৪ এর বাছাইপর্বে।
লুকাকু ভেঙে দিয়েছেন আগের ১৩ গোলের রেকর্ড, যৌথভাবে আগের রেকর্ডটি ছিল নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ডেভিড হিলি ও পোল্যান্ডের রবের্ত লেভানদোভস্কির।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে চতুর্থ ইউরোপিয়ান হিসেবে ৮০ গোলের মাইলফলক ছুঁয়েছেন লুকাকু (১১০ ম্যাচে ৮০ গোল)। এই তালিকায় তার ওপরে আছেন- রবের্ত লেভানদোভস্কি (১৪৬ ম্যাচে ৮২ গোল), ফেরেঙ্ক পুসকাস (৮৯ ম্যাচে ৮৪ গোল) ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো (২০৫ ম্যাচে ১২৮ গোল)।
১৫:
গত নভেম্বরে মাত্র ১৫ বছর ২৬০ দিন বয়সে এসি মিলানের হয়ে মাঠে নামেন ফ্রানচেসকো কামারদা; সেরি আর ১২৫ বছরের ইতিহাসে এই ইতালিয়ানই এখন সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড়।
বার্সেলোনা মূল দলের হয়ে ১৫ বছরে মাঠে নামার অনন্য কীর্তি গড়েন লামিনে ইয়ামাল। পরে ১৬ বছর ৮৭ দিন বয়সে লা লিগার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
১০:
বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেওয়ার পর থেকে নিয়মিত গোল করে চলেছেন হ্যারি কেইন। দারুণ পথচলায় বুন্ডেসলিগায় দ্রুততম সময়ে প্রথম ১৫ গোল করার রেকর্ডও গড়েছেন তিনি; মাত্র ১০ ম্যাচে।
এর আগে রেকর্ডটি ছিল জার্মানির সাবেক স্ট্রাইকার রুডিগার মিলখির; ১৯৬৬ সালে ১৫ ম্যাচ লেগেছিল তার। এছাড়া সমান ১৬টি করে ম্যাচ লেগেছিল জার্মান গ্রেট উয়ি সিলার, তার স্বদেশি স্ট্রাইকার ফ্রিডহেল্ম এবং নরওয়ের এই সময়ের তারকা আর্লিং হলান্ডের।
৩:
প্রথম ফুটবলার হিসেবে ভিন্ন তিন ক্লাবের হয়ে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তি গড়েছেন মাতেও কোভাচিচ।
রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে ২০১৬ ও ২০১৭ সালের পর চেলসির জার্সিতে তিনি ট্রফিটি জেতেন ২০২১ সালে। আর এই বছর তিনি জিতলেন ম্যানচেস্টার সিটির জার্সিতে।